জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: চাঁদে বাড়ছে তুলো গাছ, লক লক করছে তার সবুজ পাতা। খুব বেশি দেরি নেই, যখন চাঁদের মাটিতে দেখা যাবে কার্পাস বাগান। মঙ্গলবার এমন দাবিই করলেন দক্ষিণ-পশ্চিম চিনের চংকুইং বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী।
গত ৮ ডিসেম্বর চিনের শিচুয়ান প্রদেশ থেকে চাঁদে পাড়ি দিয়েছিল ‘চেঞ্জ-ই ৪’ নামের এক চন্দ্রযান। উৎক্ষেপণের চার দিন পরে চাঁদের কক্ষপথে ঢোকে সেটি। তার পর চলতি মাসের প্রথম দিকে পৌঁছয় এমন এক জায়গায়, চাঁদের সে চেহারা বরাবর আমাদের আড়ালেই থেকে গিয়েছে। কারণ, পৃথিবীর চারপাশে চাঁদ এমন ভাবে পাক খায় যে কখনও ওই জায়গা আমাদের সামনে আসেনি। উপগ্রহের সেই না-দেখা জায়গাতেই পা রেখেছিল চিনা চন্দ্রযান ‘চেঞ্জ-ই ৪’।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ওই চন্দ্রযানে করে তুলো, রাই সর্ষে, আলু ও আরাবিডোপসিসের বীজ পাঠিয়েছিলেন তাঁরা। পাঠানো হয় মাছির কিছু নিষিক্ত ডিম ও পাউরুটি। কোনও জায়গাতে যে কোনও বীজকে অঙ্কুরিত করতে একটা নির্দিষ্ট উষ্ণতার প্রয়োজন হয়। সে জন্য এক ধরনের বিশেষ পাত্রও পাঠানো হয়েছিল। সেই পাত্রে সর্বদা ২৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা ছিল।
বাকি বীজগুলি বিজ্ঞানীদের হতাশ করে। কিন্তু বিজ্ঞানীদের আশার আলো দেখিয়েছে তুলো বীজ। চন্দ্রযান থেকে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে প্রচুর ছবি পাটানো হয়েছে। সেই ছবিতে দেখা গিয়েছে, বেঁচে গিয়েছে তুলোর সেটি। সেটি বড়ও হচ্ছে।
চন্দ্রযান ‘চেঞ্জ-ই ৪’-এর মূল কারিগর অধ্যাপক শি গেঙশিন। তিনি এই ঘটনার পর জানিয়েছেন, যেখানে মাধ্যাকর্ষণ বল প্রায় নেই বললেই চলে, সেখানেও কী ভাবে গাছপালা বেড়ে ওঠে তা এই প্রথম তাঁরা বুঝলেন।
সিএনএসএ-এর ‘লুনার এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড স্পেস প্রোগ্রাম সেন্টার’-এর ডেপুটি ডিরেক্টর তংজি লিউ জানিয়েছেন, চাঁদের ওই অংশ যে হেতু পৃথিবীর উল্টো দিকে, তাই পৃথিবীর তড়িৎচুম্বকীয় ক্ষেত্রের বাইরে থাকে জায়গাটি। কিছু সমস্যা থাকলেও মহাকাশ গবেষণার জন্য আদর্শ। জলের সন্ধান ছাড়াও চাঁদের মাটিতে আর কী কী রয়েছে, তার খোঁজ করবে ‘চেঞ্জ-ই ৪’।
ঠিক ৫০ বছর আগে মানুষ প্রথম পা রেখেছিল চাঁদে। ১৯৬৯ সালে চাঁদে নেমেছিলেন অ্যাপোলোর তিন মহাকাশচারী। আমেরিকার পতাকা উড়েছিল চাঁদের সেই প্রান্তে, পৃথিবী থেকে দেখা যায় যে দিকটিকে। কিন্তু, এ বার তুলো গাছের ব্যাপারটি ঘটল তার ঠিক ৫০ বছর পরে, যে দিকটা পৃথিবী খেকে দেখা যায় না সেখানে।
First time for humankind: A seed taken up to #Moon by China's Chang'e-4 probe has sprouted #ChangE4 pic.twitter.com/N6fA3A4ycv
— China Xinhua News (@XHNews) January 15, 2019
(বিজ্ঞানের সব খবর পড়তে এখানে ক্লিক করুন)