ফের উত্তপ্ত কাশ্মীর উপত্যকা, সেনা জওয়ান-সহ ১১ জনের মৃত্যু

শহীদ সেনাবাহিনীর মেজর

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ফের উত্তপ্ত কাশ্মীর উপত্যকা, রক্ত ঝরল আবারও। শনিবার সকালের এক এনকাউন্টারে ১ সেনা জওয়ান, ৩ জঙ্গি এবং ৭ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকে। এই ঘটনায় ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে উপত্যকা। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক সমালোচনাও।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামা সেক্টরে সির্নূর একটি ফলবাগানে তিন জঙ্গির লুকিয়ে থাকার খবর পায় নিরাপত্তাবাহিনী। এ দিন ভোরে ওই এলাকা পুরোটা ঘিরে ফেলে তল্লাশি শুরু করে ভারতীয় সেনা, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ এবং সিআরপিএফ।

এ দিন তল্লাশি শুরু হতেই যৌথ বাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ শুরু করে জঙ্গিরা। সেই সময় এক সেনা জওয়ান নিহত হন। তার পরেই পাল্টা আক্রমণ চালায় যৌথ বাহিনী। এর পরেই তিন জঙ্গির মৃত্যু হয়।

সেনার অভিযোগ, সংঘর্ষ শেষ হওয়ার পরেই গ্রামবাসীরা যৌথ বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া শুরু করে। তাতে বেশ কয়েক জন নিরাপত্তাকর্মী আহত হন। এর পরেই উন্মত্ত জনতাকে ঠেকাতে কাঁদানে গ্যাস, ছররা গুলি ছোড়ে যৌথ বাহিনী। পরে গুলিও চালানো হয়। এই ঘটনায় ৭ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছেন অন্তত ১২ জন।

সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে এত দিন হইচই করা উচিত নয়: প্রাক্তন সেনাকর্তা

যে সাত জন নিরীহ নাগরিক মারা গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জনকে শনাক্ত করা গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। লিয়াকত দার, সুহেল আহমেদ, শাহবাজ, আমির আহমেদ পল এবং আবিদ হুসেন লোনকে শনাক্ত করা গেলেও হাসপাতালের মর্গে থাকা বাকি দু’জনের পরিচয় এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।

স্থানীয়দের দাবি, মৃত আবিদ হুসেন সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়া থেকে ফিরেছিলেন। এমবিএ-র ওই স্নাতকের স্ত্রী-ও ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক। রয়েছে তিন মাসের এক শিশুকন্যাও। এ ভাবে নিরীহ সাধারণ নাগরিকদের মৃত্যুর ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ উপত্যকার বাসিন্দারা। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এ নিয়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদে নেমেছে নানা সংগঠন।

গ্রেফতার সেনাবাহিনীর জওয়ান জিতেন্দ্র

রাজ্যপালের শাসনে যে কাশ্মীর উপত্যকা খুব একটা ভাল নেই, অশান্তি যে নিত্য় দিন লেগেই রয়েছে, তা নিয়ে সরব হয়েছে মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলিও। এ দিনের ঘটনার পর রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি)-র নেত্রী মেহবুবা মুফতি টুইট করেন। সেখানে তিনি ক্ষোভ উগরে দিয়ে লেখেন, ‘‘কোনও তদন্তই এই নিরীহ নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে পারবে না। রাজ্যপালের শাসনে কি এটাই প্রত্যাশিত? সাধারণ মানুষের জীবন সুরক্ষিত রাখতে ব্যর্থ প্রশাসন। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই।’’

একই রকম ভাবে প্রতিবাদ জানিয়ে টুইট করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লা। তিনি টুইট করেন, ‘‘কাশ্মীরে আর একটি রক্তস্নাত দিন! এর থেকে ভাল ভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার কোনও উপায় কি নেই?’’