বাঁচার সম্ভাবনা শূন্য নিয়ে গিনেস রেকর্ড, প্রথম জন্মদিনে কেক কাটল রিচার্ড

বাঁচার সম্ভাবনা শূন্য নিয়ে গিনেস রেকর্ডছোট্ট রিচার্ড কেক কাঠে তার প্রথম জন্মদিনে। ছবি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের সৌজন্যে।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: বাঁচার সম্ভাবনা শূন্য নিয়েই গিনেস রেকর্ড-এ নাম তুলে ফেলল সদ্য জন্মানো রিচার্ড স্কট উইলিয়াম হাচিনসন। নির্ধারিত সময়ের ১৩১ দিন আগেই সে ভূমিষ্ঠ হয়। সময়ের অনেক আগে জন্ম নিয়ে বেঁচে থাকার কারণে তার নাম গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে উঠল। সেই রিচার্ড তার এক বছরের জন্মদিনে কেক কেটেছে এ বার। বাঁচার সম্ভাবনা শূন্য নিয়ে গিনেস রেকর্ড করা রিচার্ডের প্রথম জন্মদিনে স্বভাবতই খুশি তার বাবা-মা ও পরিজনেরা।

আমেরিকার মিনেপলিশ শহরের বাসিন্দা বেথ হাচিনসন রিচার্ডের মা। রিচার্ড যখন গর্ভে, তখন চিকিৎসকেরা বেথ-কে বলেছিলেন, ১৩ অক্টোবর ২০২০ নাগাদ তাঁর সন্তান ভূমিষ্ঠ হবে। কিন্তু শারীরিক নানা অসুবিধা হওয়ায় বেথের স্বামী রিক চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করেন। শেষে সকলে মিলে সম্মত হন, বেথের কারণেই সম্পূর্ণ পরিপুষ্ট হওয়ার আগেই তার সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া প্রয়োজন। সেই মতো ওই বছরের ৫ জুন জন্ম হয় রিচার্ডের। ২১ সপ্তাহ ২ দিন সে মায়ের গর্ভে ছিল। নির্ধারিত সময়ের ১৩১ দিন আগেই তার জন্ম হয়। স্বাভাবিক ভাবে মায়ের গর্ভে সন্তানের থাকার কথা ৪০ সপ্তাহ। জন্মের সময় রিচার্ডের ওজন ছিল মাত্র ৩৪০ গ্রাম। সদ্য জন্মানো অন্য যে কোনও স্বাভাবিক বাচ্চার গড়ে মাত্র ১০ শতাংশ। জন্মানোর পর সে এক হাতের তালুতে রাখার মতো মাপের ছিল। ফলে তার জন্মের পর চিকিৎসকেরা বলেছিলেন এত আগে জন্মানো বাচ্চার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা শূন্য শতাংশ। গিনেস বুকে তার নামও উঠে যায়।

জন্মানোর পরেই বেথ-রিক দু’জনকেই চিকিৎসকেরা বলে দিয়েছিলেন, তাঁদের সন্তানের বেঁচে থাকার প্রায় কোনও সম্ভাবনাই নেই। যে কোনও রকমের খারাপ পরিস্থিতির জন্য তাঁদের তৈরি থাকতেও বলা হয়। মিনেপলিসের মিনসোটা শিশু হাসপাতালের নিওনেটালজিস্ট স্টেসি কার্ন বলেন, ‘‘বাবা-মায়ের কাউন্সিলিংয়ের সময় আমরা বেথ-রিককে বলেই দিয়েছিলাম, ওঁদের বাচ্চার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা শূন্য। চিকিৎসকেরা জানেন, এই ধরনের বাচ্চার ক্ষেত্রে প্রথম কয়েকটা সপ্তাহ কতটা কঠিন। কিন্তু আমার মনে হয়েছিল, ওই কঠিন সময়টা কোনও রকমে পেরিয়ে গেলেই বাচ্চাটি বেঁচেও যেতে পারে।’’

রিচার্ড এ বছরের ৫ জুন যখন তার প্রথম জন্মদি‌নে কেক কাটছে, গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড কর্তৃপক্ষ তাকে খুঁজে পায়। নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে জন্মে,  বাঁচার সম্ভাবনা শূন্য নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য তার নাম গিনেস রেকর্ডে ওঠে। রিচার্ডের মা বেথ তার ছেলের প্রথম জন্মদিনে আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেছেন, ‘‘এটা সত্যি! ভাবতেই পারছি না।’’

রেকর্ড বলছে, এর আগে যে বাচ্চাটি সময়ের অনেক আগে জন্মেছিল তার নাম জেমস এলগিন গিল। ১৯৮৭ সালের ২০ মে সে জন্মেছিল কানাডায়। সম্ভাবনা কম থাকলেও জেমস বেঁচে গিয়েছে। সে মাতৃগর্ভে ছিল ২১ সপ্তাহ ৫ দিন। অর্থাৎ নির্ধারিত সময়ের ১২৮ দিন আগে সে জন্মেছিল। সেই রেকর্ড ভেঙে দিল এ বার রিচার্ড।


প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)