ম্যালেরিয়ার প্রথম টিকা, সম্মতি মিলল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

ম্যালেরিয়ার প্রথম টিকা

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ম্যালেরিয়ার প্রথম টিকা আবিষ্কার হয়েছে। বুধবার তাতে ছাড়পত্র দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নতুন অস্ত্র মিলল। ম্যালেরিয়া অন্যতম পুরনো সংক্রমক মারণ রোগ হিসাবে স্বীকৃত। ম্যালেরিয়ার প্রথম টিকা আবিষ্কার হওয়ায় স্বস্তির হাওয়া চিকিৎসাবিজ্ঞানে। প্রতি বছর এই মারণ রোগে হাজার হাজার শিশুর প্রাণ যায়। সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের দেখা পাওয়া যায় আফ্রিকায়। সেখানে বছরে প্রায় ৫ লাখ মানুষ মারা যান ম্যালেরিয়ার কারণে। এই ৫ লাখের মধ্যে অর্ধেকই শিশু। ম্যালেরিয়ার নতুন এই টিকা তৈরি করেছে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন। এই টিকা শিশুদের শরীরে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। প্ল্যাসমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম— ম্যালেরিয়ার জীবাণুর পাঁচটি প্রজাতির মধ্যে সবথেকে বেশি বিপজ্জনক। সেই জীবাণুর বিরুদ্ধে ওই টিকা লড়তে সহায়ক বলেই দাবি গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন।

উন্নত বিশ্বে ম্যালেরিয়া বিরল একটি রোগ। আমেরিকায় প্রতি বছর মাত্র ২ হাজার মানুষের ম্যালেরিয়া হয়। তবে এ ক্ষেত্রে একটা পর্যবেক্ষণ রয়েছে। যে আমেরিকানরা ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন, দেখা গিয়েছে তাঁদের বেশির ভাগই অন্য দেশে ঘুরতে গিয়ে ওই রোগ বাধিয়ে এসেছেন। এবং সেই সমস্ত দেশেই তাঁরা ঘুরতে গিয়েছিলেন যেখানে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব রয়েছে। মসকুইরিক্স— ম্যালেরিয়ার প্রথম টিকা, এ শুধু ওই রোগের জন্য নয় বলেই জানানো হয়েছে। এটি যে কোনও পরাজীবী জীবাণু সংক্রমণের ক্ষেত্রেই কাজ করবে।

পরজীবী কিন্তু ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের থেকেই জটিল। গত প্রায় একশো বছর ধরে ম্যালেরিয়ার টিকা আবিষ্কারের চেষ্টা চলছিল। হু বুধবারই ওই টিকায় ছাড়পত্র দিয়েছে। সংস্থার ম্যালেরিয়া প্রোগ্রামের আন্তর্জাতিক প্রধানপেড্রো আলোনসো জানিয়েছেন, আপাতত গরিব দেশগুলিতে ওই টিকা সরবরাহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই টিকা যে নিরাপদ, সেই বার্তাও বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। এই ঘটনাকে তিনি ‘ঐতিহাসিক’বলেও জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘বিজ্ঞানের চোখে এই টিকার গুরুত্ব অনেক। মানবদেহের পরজীবীর বিরুদ্ধে প্রথম-প্রজন্মের এই টিকা আসলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটা বড়সড় লাফ।’’

এই টিকা যখন মানবদেহে পরীক্ষানিরীক্ষার পর্যায়ে ছিল, তার প্রথম বছরে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত সিভিয়ার রোগীর ক্ষেত্রে মাত্র ৫০ শতাংশ সক্রিয় ছিল। কিন্তু চতুর্থ বছরে সেটাই প্রায় শূন্যের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। ইউরোপিয়ান মেডিসিনস এজেন্সির তরফে জানানো হয়েছে, ব্রিটিশ ওষুধ সংস্থা গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন-এর বানানো ম্যালেরিয়ার এই টিকা ৬ সপ্তাহ থেকে ১৭ মাসের শিশুদেরও দেওয়া যাবে ম্যালেরিয়ার হাত থেকে সদ্যোজাতদের বাঁচানোর লক্ষ্যে। এই টিকা হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের মাধ্যমে যকৃতের সংক্রমণও রুখতে পারবে।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)