সুহাই আজিজ একাই বাঁচিয়ে দিলেন করাচির জঙ্গি আক্রান্ত চিনা কনসুলেট

সুহাই আজিজ তালপুরসুহাই আজিজ তালপুর

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: সুহাই আজিজ তালপুর করাচির সিনিয়র পুলিশ সুপার। তাঁর একক কৃতিত্বেই এ যাত্রা বেঁচে গেল করাচিন চিনা কনসুলেট।

শুক্রবার সকালে তিন সশস্ত্র আত্মঘাতী জঙ্গি হামলা চালায় করাচির চিনা কনসুলেটে। শহরের অভিজাত ক্লিফটন এলাকায় তাদের ওই হামলায় দু’জন পুলিশ-সহ চার জন নিহত হয়েছেন। কড়া নিরাপত্তায় মোড়া ওই এলাকায় দ্রুত জঙ্গিদের ঘায়েল করে ফেলে সেখানকার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা বাহিনী। সংঘর্ষে মারা যায় তিন জঙ্গিই। জখম হন এক চিনা নিরাপত্তা রক্ষী। আর ওই নিরাপত্তা বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন সুহাই আজিজ তালপুর।

করাচির পুলিশপ্রধান আমির শেখ জানান, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন দু’জন সাধারণ নাগরিক। জঙ্গিরা চিনা কনসুলেটে ঢোকার সময়েই তাদের গুলি করে মারা হয়। জঙ্গিদের কাছে থাকা ন’টি গ্রেনেড, কালাশনিকভের গুলি ও অন্য বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে। নিষিদ্ধ জঙ্গি গোষ্ঠী ‘বালোচ লিবারেশন আর্মি’ ওই হামলা চালিয়েছিল। তবে জঙ্গিদের রুখতে গোটা অপারেশনটাই হয় সুহাইয়ের নেতৃত্বে।

ষষ্ঠ ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে নতুন ইতিহাস লিখলেন মেরি কম

অভিজাত ওই এলাকায় এমনিতেই কড়া নিরাপত্তা থাকে। ওই দিন সকালে বেশ কিছুটা দূরে নিজেদের গাড়ি রাখে জঙ্গিরা। প্রথমে তারা কনসুলেটের বাইরে চেকপোস্টে হামলা চালায়। সেখানে একটি গ্রেনেড ফাটিয়ে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে। সেই সময় সতর্ক হয়ে যায় সুহাইয়ের সহকর্মীরা। সিনিয়র পুলিশ সুপারের নির্দেশে তারা জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়ে জঙ্গিদের খতম করতে। সেই কাজে সুহাই সফলও হন। তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ এখন করাচি পুলিশ।

সুহাই পরে জানান, ওই জঙ্গিরা চিনা কনসুলেটের ভিতরে ঢোকার চেষ্টায় করেছিল। প্রথম গ্রেনেডটা চেকপোস্টের কাছে ফাটতেই সতর্ক হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। হামলাকারীদের পিঠে ব্যাগ দেখে বুঝতে পেরেছিলেন সুহাই, আত্মঘাতী হানার চেষ্টা চলছে কনসুলেটে। সঙ্গে সঙ্গে গেটে সশস্ত্র জঙ্গিদের আটকাতে সুহাইয়ের টিম ঝাঁপিয়ে পড়ে। চার দিক থেকে জঙ্গিদের ঘিরে ফেলা হয়। আর তাতেই তিন জঙ্গির প্রাণ যায়।

এমনিতে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম সুহাইয়ের। তাঁর বাবা আজিজ তালপুর এক জন রাজনীতিবিদ এবং লেখক। তিনি মেয়ের পড়াশোনাকেই প্রাধান্য দিয়েছেন সারা জীবন। ছোটবেলায় মেয়েকে একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি করেছিলেন বলে, গ্রামের অনেকেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন না। প্রায় একঘরে অবস্থায় কাটাতেন তাঁরা।

এর পর গ্রাম ছেড়ে সিন্ধ প্রদেশের হায়দরাবাদে চলে আসেন আজিজ। সেখান থেকেই বিকম পাশ করে‌ন সুহাই। বাবা চেয়েছিলেন মেয়ে চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হোক। তবে, সুহাই বরাবরই সাহসী। তিনি পুলিশে কাজ করতে চেয়েছিলেন। ২০১৩ সালে সেন্ট্রাল সুপার সার্ভিসেসের পরীক্ষা দিলেন। কয়েক বছরেই করাচি পুলিশের অন্যতম মুখ হয়ে ওঠেন সুহাই আজিজ।