জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: পাকিস্তানে দাউ দাউ করে পুড়ল ট্রেন, ভয়াবহ সেই আগুন কেড়ে নিল অন্তত ৭৪ যাত্রীর প্রাণ। গুরুতর জখম হয়েছেন প্রায় ৫০ জন। প্রাণে বাঁচতে ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়েও অনেকের হতাহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে ভয়াবহ এই ঘটনা ঘটেছে পাকিস্তানের সেন্ট্রাল পঞ্জাব প্রভিন্সের লিয়াকৎপুরের কাছে। ওই ট্রেনের কয়েক জন যাত্রী রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে সফর করছিলেন। সেই সিলিন্ডার ফেটেই ভয়াবহ এই ঘটনা ঘটেছে বলে পাক রেল মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে।
হলুদ-সবুজ রঙের লম্বা ট্রেনের তিনটি কামরা দাউ দাউ করে জ্বলছে। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে গোটা এলাকা। ভেসে আসছে চিৎকার। তার মধ্যেই একের পর এক যাত্রী জ্বলন্ত কামরার বাইরে লাফ দিয়ে পড়ছেন। ঘটনাস্থলের যে ভিডিও সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তাতে এমন দৃশ্যই দেখা গিয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন
পাকিস্তান রেলের উচ্চপদস্থ কর্তা আলি নওয়াজ জানিয়েছেন, ওই ট্রেন যাত্রীদের অধিকাংশই পুণ্যার্থী। তাঁরা পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সমাবেশ থেকে ফিরছিলেন। ট্রেনেই সকালের জলখাবার তৈরি করার সময় দুটো গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে এই ঘটনা ঘটেছে বলে নওয়াজের দাবি।
লম্বা ট্রেন সফরে যাত্রীদের অধিকাংশের সঙ্গেই খাবার ছিল। এমনিতে ট্রেনে গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে ওঠাটা পাকিস্তানে একেবারেই বেআইনি। তবুও কেউ কেউ ওই ধর্মসভা থেকে ফেরার পথে ট্রেনেই নিজেদের খাবার তৈরি করবেন বলে সিলিন্ডার নিয়ে যাচ্ছিলেন। এটাকে রেলের গাফিলতি বলেই মেনে নিয়েছেন পাক রেলমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ। তাঁর কথায়, ‘‘সিলিন্ডার নিয়ে ট্রেনে উঠতে দেওয়াটাই আমাদের ভুল হয়েছিল।’’
দেখুন সেই ভিডিও..
Waking up to horrible new of loss of over 60 lives in a fire at #Tezgam train is so heart wrenching.
Every time loss of lives in such accidents on trains in India & Pakistan is a sharp reminder we are still far behind in public safety measures but happy sending monkeys to space pic.twitter.com/ykiqBdTGqD— Farzana Shah (@Jana_Shah) October 31, 2019
ঘটনার খবর পেয়েই উদ্ধারকর্মী এবং দমকলকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তাঁরা অতি দ্রুততার সঙ্গে জ্বলন্ত ওই তিনটি কামরাকে বাকি ট্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেন। মহম্মদ ইমরান নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ট্রেনের যে কামরায় তিনি ছিলেন, সেখানে একটি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়। তা থেকে তিনটি কামরায় এমন ভয়াবহ আগুন কী ভাবে লাগল তা তিনি বুঝতে পারছেন না বলেই জানিয়েছেন সংবাদ সংস্থাকে। তিনি বলেন, ‘‘আমি প্রাণে বাঁচতে চলন্ত এবং জ্বলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ মেরেছিলাম। আমার পিছনে তখন লোকজন ঝাঁপ দেবে বলে ধাক্কাধাক্কি করছিল।’’
এমনিতে করাচি এবং রাওয়ালপিন্ডির মধ্যেই চলাচল করে ওই ‘তেজগাম’ ট্রেন। কিন্তু লাহৌরের কাছে ওই ধর্মসভা থেকে পুণ্যার্থীরা ফিরবেন বলেই ট্রেনটিকে লাহৌরের পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান শোক জ্ঞাপনের পাশাপাশি গোটা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। হতাহতদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি।
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)