নোবেল শান্তি পুরস্কার পেলেন আইএস-এর হাতে বন্দি যৌনদাসী তরুণী

নোবেল শান্তি পুরস্কারডেনিস মুকওয়েগে এবং নাদিয়া মুরাদ

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: নোবেল শান্তি পুরস্কার পেলেন দু’জন। প্রথম জন কঙ্গোর স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডেনিস মুকওয়েগে। এবং দ্বিতীয় জন ইরানের মানবাধিকার কর্মী নাদিয়া মুরাদ।

শুক্রবার ২০১৮ সালের জন্য শান্তি পুরস্কার প্রাপকদের নাম ঘোষণা করে নোবেল কমিটি। বিশ্ব জুড়ে যুদ্ধক্ষেত্রে যৌন নির্যাতিতাদের বাঁচানোর লড়াইয়ে ওই দু’জনের অবদানকে স্বীকৃতি দিতেই এ বার তাঁদের নোবেলে সম্মানিত করা হল। পুরস্কার প্রাপক দু’জনই যৌন নিপীড়নমূলক যুদ্ধাপরাধকে সকলের নজরে আনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন বলে নোবেল কমিটির তরফে জানানো হয়েছে।

নোবেল কমিটির চেয়ারপার্সন রেইস-আন্ডারসেন এ দিন বলেন, ‘‘যুদ্ধের সময় নারীদের মৌলিক অধিকার ও নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া এবং রক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারলেই একমাত্র আরও শান্তিপূর্ণ পৃথিবী গড়ে তোলা সম্ভব।’’ ডেনিস মুকওয়েগে এবং নাদিয়া মুরাদ— দু’জনেই সেই লক্ষ্যে নিজের নিজের ক্ষেত্রে কাজ করছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

নোবেল কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, ডেনিস মুকওয়েগে এবং নাদিয়া মুরাদ— দু’জনেই নিজেদের জীবনকে বিপন্ন করে যুদ্ধক্ষেত্রে যৌনবিপন্ন নারী-শিশুদের পাশে দাঁড়ানোর লড়াইটা চালিয়ে এসেছেন।

পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার তিন বিজ্ঞানীর, লেজার ফিজিক্সে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য

৬৩ বছরের মুকওয়েগে কঙ্গোর এক জন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। প্রায় দু’দশক ধরে তিনি বুকাভু শহরের পূর্বাঞ্চলে প্যানজি নামের একটি হাসপাতালে যুদ্ধক্ষেত্রে যৌন নিপীড়নের শিকার নারীদের চিকিৎসা করেন। ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ওই হাসপাতালটিতে প্রতি বছর যুদ্ধক্ষেত্রে প্রচুর যৌন নিপীড়নের শিকার নারীদের চিকিৎসা হয়। তাঁদের অনেকেরই অস্ত্রোপচারেরও প্রয়োজন হয়। সেটাও করা হয় মুকওয়েগের হাসপাতালে। শুধু নারী নয়, শিশুদের চিকিৎসাও করেন মুকওয়েগে। তাঁকে ‘ডক্টর মির‌্যাকল’ নামেই গোটা দুনিয়া চেনে।

মুকওয়েগের পাশাপাশি এ বার নোবেলে শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে ইরানের ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের তরুণী ২৫ বছরের নাদিয়া মুরাদকে। ২০১৪ সালে তাঁকে আইএস জঙ্গিরা অপহরণ করে। তার পর তাঁকে যৌনদাসী বানিয়ে প্রায় তিন মাস আটকে রাখা হয়। পরে কোনও ভাবে ওই জঙ্গিদের ডেরা থেকে পালিয়ে বেঁচেছিলেন নাদিয়া।

গোটা দুনিয়া থেকে ব্যক্তি এবং সংগঠন মিলিয়ে মোট ৩৩১টি নামের প্রস্তাব এসেছিল নোবেল কমিটির কাছে শান্তি পুরস্কারের জন্য। এ বছর সংখ্যাটা রেকর্ড ছাড়িয়েছে বলে নোবেল কমিটি সূত্রে জানানো হয়েছে। এ বছরের নোবেল পুরস্কার অসলোতে আগামী ১০ ডিসেম্বর প্রাপকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। যদিও গত ৭০ বছরের মধ্যে এই প্রথম এ বছর সাহিত্যে নোবেল দেওয়া হচ্ছে না। নোবেল পুরস্কারের ইতিহাসে এই প্রথম।