কলম্বিয়ান মহিলা হারিয়ে গিয়েছিলেন দু’বছর আগে, সমুদ্র থেকে জীবিত উদ্ধার

কলম্বিয়ান মহিলা

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: কলম্বিয়ান মহিলা বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন দু’বছর আগে। দু’বছর পর সমুদ্র থেকে জীবিত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করলেন দু’জন মৎস্যজীবী। দ্য সানের রিপোর্ট অনুযায়ী অ্যাঞ্জেলিকা গাইতান নামের ওই মহিলাকে কলোম্বিয়ার উপকূলে ভাসতে দেখেন দুই মৎস্যজীবী। তাঁদের সেই মহিলাকে উদ্ধারের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।

পুয়ের্তো কলম্বিয়ার তীরে শনিবার সকাল ছ’টা নাগাদ রোলান্ডো ভিসবাল ও তাঁর বন্ধু অ্যাঞ্জেলিকাকে ভাসতে দেখে। তাঁদের চোট ডিঙি অ্যাঞ্জেলিকার কাছে নিয়ে গিয়ে ডাকাডাকি করলে তিনি সাড়া দেননি। তখন তাঁকে নৌকয় তুলে নেন তাঁরা। তার পরই জ্ঞ্যান ফিরে আসে অ্যাঞ্জেলিকার।

নিউ ইয়র্ক পোস্টের খবর অবশ্য বলছে সেই মহিলা হাত তুলে ইশারা করেন। ভিসবালের পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে একজন সেই মহিলাকে জল থেকে টেনে নৌকোয় তুলছে। আট ঘণ্টার বেশি জলের মধ্যে থাকায় তাঁর শরীর ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল।

উদ্ধার হওয়ার পর তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। এবং তাঁর প্রথম কথা ছিল, ‘‘আমি আবার জন্ম নিলাম, ভগবান চান না আমি আমি মারা যাই।’’

এর পর তিনি আরসিএন রেডিওকে এক সাক্ষাৎকারে তাঁর কাহিনী জানান। ২০১৮তে স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন অ্যাঞ্জেলিকা। তিনি বলেন, ‘’২০ বছর ধরে এই বিষাক্ত সম্পর্কে রয়েছি। আমি প্রথমবার অন্তঃস্বত্তা হওয়ার পর থেকেই অত্যাচারের শুরু। আমাকে মারত, ভয়ঙ্করভাবে অত্যাচার করত। দ্বিতীয়সন্তান জন্ম নেওয়ার পরও চলতে থাকে। আমি ছেড়ে বেরতে পারছিলাম না মেয়েরা ছোট থাকায়।’’

তিনি এও জানিয়েছেন, পুলিশে জানিয়েও বিশেষ কোনও লাভ হয়নি। ২৪ ঘণ্টা পরেই ছাড়া পেয়ে বাড়ি এসে আবার অত্যাচার শুরু করতেন তাঁর স্বামী। তিনি জানান, ২০১৮-র সেপ্টেম্বরে তাঁর স্বামী তাঁর মুখ ভেঙে দিয়েছিলেন। তখনই তিনি বাড়ি ছেড়ে পালান। ছ’মাস রাস্তায় রাস্ততায় কাটানোর পর রেসকিউ সেন্টারে জায়গা হলেও তা বেশিদিন তাঁকে জায়গা দেয়নি। পুলিশ তাঁকে তাঁর স্বামীর কাছে চলে যেতে বলে।

সেই সময় আবার অত্যাচারের ভয়ে তিনি আত্মহত্যা করার কথা ভাবেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি সব শেষ করে দিতে চেয়েছিলাম। কোথাও থেকে কোনও সাহায্য পাইনি। আমার পরিবারের কাছ থেকেও না। কারণ এই মানুষটা আঅমাকে সামাজিক সম্পর্ক থেকে দূরে রেখেছিল। আর সেকারণে আর বাঁচতে চাইনি।’’

তখনই তিনি সমুদ্রে ঝাঁপ দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু তার পর আর কিছু মনে নেই। তিনি জ্ঞ্যান হারিয়ে সমুদ্রে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘যে আমাকে উদ্ধার করেছে সমুদ্র থেকে তিনি বলেন, আমার জ্ঞ্যান ছিল না, আমি ভাসছিলাম।’’ স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম তার মেয়েদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরা জানান, তাঁরা গত দু’বছর ধরে তাঁর খবর জানে না। তিনি এও জানিয়েছেন, অত্যাচারের কথা মিথ্যে।

মাকে ফেরাতে এ বার টাকা তুলতে শুরু করেছে দুই বোন। যাতে অ্যাঞ্জেলিকা পরিবারের কাছে ফিরতে পারেন।

(বিদেশের আরও খবরের জন্য এখানে ক্লিক করুন)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)