ভারতীয় বংশোদ্ভুত গণিতজ্ঞের দেহ ভেসে উঠল নিউ ইয়র্কের হাডসন নদীতে

ভারতীয় বংশোদ্ভুত গণিতজ্ঞের দেহশুভ্র বিশ্বাসের ফেসবুক থেকে নেওয়া ছবি।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ভারতীয় বংশোদ্ভুত গণিতজ্ঞের দেহ ঘিরে নিউ ইয়র্কে তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য। ৩১ বছরের শুভ্র বিশ্বাস বাঙালি। তিনি কাজ করছিলেন ক্রিপটোকারেন্সি এবং আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স নিয়ে। সোমবার তাঁর পচা-গলা দেহ ভাসতে দেখা যায় নদীতে। পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর জীবন সংশয়ের কোনও ইঙ্গিত ছিল বলে জানা যায়নি। ছিল না শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ণও।

বহুদিন ধরেই নিউ ইয়র্কে রয়েছেন শুভ্র ও তাঁর পরিবার। তবে শুভ্রর দাদা বিপ্রজিৎ বিশ্বাস পুলিশকে জানিয়েছে, বছর কয়েক ধরে তিনি মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। কাউকে কিছু জানাতেন না। তবুও তাঁরা চেষ্টা করেছিলেন শুভ্রর পাশে দাঁড়াতে। তিনি জানান, এই খবরে গোটা পরিবার ভেঙে পড়েছে।

তিনি আরও জানিয়েছেন, কোথাও চাকরী করতেন না শুভ্র বরং নিজের ব্যবসা ছিল। সম্প্রতি ক্রিপটোকারেন্সি সিকিউরিটি প্রোগ্রামের উপর কাজ করছিলেন।  শুভ্রর অন-লাইন প্রোফাইলে দেখা যাচ্ছে তিনি আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্সের উপরও কাজ করতেন। তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে তিনি শেষ পোস্ট করেছিলেন ২০২০-র ১৯ সেপ্টেম্বর। যেখানে তিনি ওয়াইল্ড ফায়ার্স ইন জ্যাকসন কাউন্টিতে কিছু অনুদান দিয়েছিলেন।

গত এক বছর ধরে তাঁর ব্যবহারে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করেছিল পরিবার। কিন্তু কিছু খুলে না বলায় কেউ কিছু জানতে পারেনি। পরিবারের তরফে তাঁকে বার বার অনুরোধ করা হয়েছিল সমস্যার কথা কাউকে বলতে। বিপ্রজিৎ বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করেছিলাম আমাদের পুরোটা দিয়ে যাতে ও কোনও পেশাদারের সাহায্য নেয়।  কিন্তু ও সব সময়ই কোনও সাইকিয়াট্রিকের সাহায্য নিতে চায়নি।’’

গত ফেব্রুয়ারিতে শুভ্র বিশ্বাস যেখানে থাকতেন ৩৭ স্ট্রিট অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ের ম্যানেজমেন্ট তাঁকে ম্যানহাটন সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে গিয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে বিল্ডিংয়ের ভিতরে অদ্ভুত কাণ্ডকারখানা করার অভিযোগ ছিল। কখনও ঘরের ভিতরে ম্যাট্রেসে আগুন লাগিয়ে দিতেন আবার কখনও সবার সামনে ছুঁড়িতে ধার দিতেন, কখনও বিল্ডিংয়ের সিঁড়িতে গন্ধযুক্ত রক্ত ছড়িয়ে দিতেন। যা দেখে ওই বিল্ডিংয়ের বাকি আবাসিকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। জীবন সংশয় দেখা দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন তাঁরা।

এ ছাড়া বেআইনি ভাবে বিল্ডিংয়ে ক্যামেরা ও অ্যালার্ম লাগানোর অভিযোগও ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এর পর বিল্ডিংয়ের চার দিক গুলি চালিয়ে পুলিশে মিথ্যে কেস করতেন বহিরাগত ঢোকার। মানসিকভাবে তিনি যে ঠিক ছিলেন না তাঁর এই সব কর্মকাণ্ডতেই পরিষ্কার। আপাতত তাঁর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। তাঁর রিপোর্ট এলে তবেই মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতভাবে জানা যাবে।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)