জার্মানিতে নয়া চ্যান্সেলর ১৬ বছর পর, সরবেন আঙ্গেলা

Germany

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: জার্মানিতে নয়া চ্যান্সেলর ১৬ বছর পর আসতে চলেছেন। সরতে হল প্রাক্তন চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে। জার্মানির সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা ওলাফ সোজে জানিয়েছেন, তিনি জার্মানির ফ্রি ডেমোক্রেটিক ও গ্রিনস দলের সঙ্গে জোট গড়ার চুক্তি করেছেন। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছেন। এর ফলে জার্মানিতে আঙ্গেলা ম্যার্কেল যুগের অবসান ঘটল।

প্রায় দু’মাস ধরে আলোচনার পর ওলাফ সোজের দল অন্য দুই দলের সঙ্গে ১৭৭ পাতার চুক্তি করেছে। চুক্তিতে তিন দল সবুজ প্রযুক্তি এবং ডিজিটালাইজেশনে বিনিয়োগকে ত্বরান্বিত করার কথা বলেছে। এই চুক্তির মধ্য দিয়ে জার্মানিতে প্রথম বারের মতো এসপিডি, এফডিপি ও গ্রিনসের মধ্যে জোট হল। একই সঙ্গে ১৬ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা ম্যার্কেলের নেতৃত্বাধীন রক্ষণশীল দল ক্ষমতার বাইরে চলে গেল। বার্লিনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে সোজে বলেন, ‘‘আমরা আরও অগ্রগতি চাই। জার্মানিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমরা ব্যাপক ভাবে বিনিয়োগ করব।’’

যদিও বাস্তব বলছে, ম্যার্কেল যে কাজ করে গিয়েছেন, তা পূরণ করতে অনেক কিছু করতে হবে সোজের সরকারকে। জার্মানি ও ইউরোপের অনেক বড় বড় সমস্যার সময় হাল ধরেছেন ম্যার্কেল। এ ছাড়া বিশ্বজুড়ে কর্তৃত্ববাদ বেড়ে যাওয়ার মুখে উদার গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়ন ছিলেন তিনি। তবে ম্যার্কেলের সমালোচকেরা বলে থাকেন, তিনি সমস্যার সমাধান করার পরিবর্তে অন্য ব্যবস্থা করতেন। তাঁর উত্তরাধিকারীকে অনেক দিক থেকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মাসে এই জোট নতুন সরকার গঠন করবে। শপথও নেবে।

আঙ্গেলা ম্যার্কেলের হাত ধরে জার্মানিতে আধিপত্য গড়ে তুলেছিল মধ্য ডানপন্থী দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন (এসডিইউ)। দেড় যুগের সেই আধিপত্যের অবসান ঘটিয়ে গত সেপ্টেম্বরের নির্বাচনের পর জার্মানির সবচেয়ে পুরনো দল সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টিকে সামনে নিয়ে আসেন ওলাফ সোজে। জার্মানির চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নের অনেক বছরের জোটসঙ্গী ছিল সোজের দল। জার্মানিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকায় এই সরকারকে দ্রুত কঠোর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে।

মহামারির সময় ম্যার্কেলের মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রী ও ভাইস চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পালন করেন ওলাফ সোজে। সঙ্কটের সময় নিজেকে অবিচলিত রাখার জন্য জার্মানিতে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। জার্মানির পূর্বাঞ্চলে কিছু দিন আগেই ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল। বন্যায় দুর্গতদের ত্রাণ ও জরুরি সাহায্যে বিলিয়ন বিলিয়ন ইউরো বিতরণ হয়েছিল সোজের হাত দিয়েই। করোনার সময়ও একই কাজ করে গিয়েছেন তিনি। ৬৩ বছর বয়সি সোজে রাজনীতিক হিসেবে মৃদুভাষী। আবেগঘন বক্তব্য দিতে দেখা যায় না তাঁকে। এ কারণে জার্মানিতে অনেকেই তাঁকে ‘সোজেমাত’ বলেন। বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, সোজের এই বৈশিষ্ট্যের কারণেই হয়তো ভোটাররা তাঁকে ভোট দিতে উৎসাহী হয়েছেন। সোজে ভিন্ন দলের নেতা হয়েও এসডিইউ নেতৃত্বাধীন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে সরকারপ্রধান হিসেবে ম্যার্কেলের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন।

সোজের জন্ম জার্মানির উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য লোয়ার স্যাক্সোনিতে। তাঁর বেড়ে ওঠা জার্মানির অন্যতম ধনী শহর হামবুর্গে। পরবর্তী সময়ে হামবুর্গের মেয়রও নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। রাজ্যের রাজনীতি থেকেই তিনি জাতীয় রাজনীতিতে উঠে আসেন। সোজে পরবর্তী সময়ে ম্যার্কেলের প্রথম মন্ত্রিসভায় শ্রম ও সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)