হাঁটু দিয়ে জর্জ ফ্লয়েডের গলা চেপে ধরা সেই পুলিশকর্তার সাজা ঘোষণা শুক্রবার

হাঁটু দিয়ে জর্জ ফ্লয়েডের গলা চেপে ধরা সেই পুলিশকর্তার সাজাজর্জ ফ্লয়েড

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: হাঁটু দিয়ে জর্জ ফ্লয়েডের গলা চেপে ধরা সেই পুলিশকর্তার সাজা ঘোষণা শুক্রবার। আগামিকাল মিনেসোটার আদালত তাঁর সাজা ঘোষণা করবে। গত ২২ এপ্রিলই তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। আদালত সূত্রে খবর, ডেরেক শভিনের অন্তত ৩০ বছর কারাবাসের সাজা হবে। শাস্তি ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। জুরি রায় ঘোষণার পরে মিনিয়াপোলিস থেকে ২৫ মাইল দূরে স্টিলওয়াটারের সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হয় ওই প্রাক্তন পুলিশ অফিসারকে। আট সপ্তাহ পরে সাজা ঘোষণা করার কথা। সেই মতো শুক্রবার ওই সাজা ঘোষণা করা হবে।

২০২০-র ২৫ মে। পাড়ার একটি দোকানে গিয়েছিলেন বছর ছেচল্লিশের ফ্লয়েড। অভিযোগ, দোকানে একটি ২০ ডলারের জাল নোট চালানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। খবর পেয়ে পুলিশ আসে। দোকানের সামনে ফ্লয়েডকে আটকায় তিন পুলিশ অফিসার। তার পর মাটিতে ফেলে হাঁটু দিয়ে জর্জ ফ্লয়েডের গলা চেপে ধরেই খুন করেন পুলিশকর্তা ডেরেক শভিন। এমনটাই অভিযোগ ছিল। প্রায় ৯ মিনিট ২৯ সেকেন্ড এ ভাবেই ফ্লয়েডকে চেপে ধরে রেখেছিলেন তিনি। ওই সাড়ে ৯ মিনিটে অন্তত ২৭ বার ‘নিঃশ্বাস নিতে পারছি না’ বলেন ফ্লয়েড। তার পর থেমে যান। সে কথায় কানই দেননি শভিন বা তার সঙ্গীরা।

শেষমেশ ফ্লয়েডকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। পুলিশ সে দিনই বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল‌, গ্রেফতারিতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ফ্লয়েড। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতেই আঘাত লেগেছিল তার। পুলিশের ওই বিবৃতি যে সম্পূর্ণ ভুল, তা প্রমাণ হয়ে যায় পরের দিনই। প্রত্যক্ষদর্শী এক কিশোরী একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে ইন্টারনেটে। সে দিন ঘটনাস্থলেই ছিল সে। শভিন যখন হাঁটু দিয়ে ফ্লয়েডকে চেপে ধরেছে, তখন সেই ভিডিয়ো তুলে রেখেছিল ওই কিশোরী। সেই ভিডিয়ো থেকেই স্পষ্ট হয়, সে দিন কোনও রকম বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেননি ফ্লয়েড। ওই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই  ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলন শুরু হয়। চাপের মুখে পড়ে শভিন ও তার দুই সঙ্গীকে বরখাস্ত করে মিনেসোটা পুলিশ। কিন্তু তাতে আন্দোলন থামেনি। মিনেসোটা ছাড়িয়ে তা ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

ডেরেক শভিন

ডেরেক শভিন

তখন দেশের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর দমনমূলক নীতি পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে। সেই সময় ভোটের প্রচারে ডেমোক্র্যাট দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন বার বার কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার আন্দোলনের বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছিলেন। ফ্লয়েড-মামলায় শভিনকে অভিযুক্ত করার জন্য সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল কিশোরী ডার্নেলার তোলা ভিডিয়ো। এই মামলায় আর এক কৃষ্ণাঙ্গ মেয়ে, ডার্নেলার বোনঝির অবদানও ভোলার নয়। সে দিন ঘটনাস্থলে সে-ও ছিল তার মাসির সঙ্গে। তার চোখের সামনেই ঘটে গিয়েছিল ভয়াবহ ওই হত্যাকাণ্ড। ছোট্ট মেয়েটির মুখে সে দিনের ঘটনার বিবরণ শুনে চোখে জল এসে গিয়েছিল জুরিমণ্ডলীর সব সদস্যের।

অনিচ্ছাকৃত খুন, অসতর্কতা থেকে খুন এবং নরহত্যা— এই তিন ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে শভিনকে। কম পক্ষে ৩০ বছরের কারাদণ্ড হবে তাঁর।


প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)