জর্জ ফ্লয়েড হত্যা মামলায় দোষী পুলিশকর্তার সাড়ে ২২ বছরের জেল

জর্জ ফ্লয়েড হত্যাডেরেক শভিন

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: জর্জ ফ্লয়েড হত্যা মামলায় দোষী পুলিশকর্তা ডেরেক শভেনকে সাড়ে ২২ বছর কারাবাসের সাজা শোনাল আদালত। শুক্রবার ওই সাজার কথা ঘোষণা করেছে মিনেসোটার এক আদালত। শুক্রবার ডেরেকের দীর্ঘ কারাদণ্ডের কথা ঘোষণা করে বিচারক তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, প্রাক্তন ওই পুলিশ আধিকারিক ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। শুধু তাই নয় বিশ্বাসভঙ্গতার পাশাপাশি তিনি নিষ্ঠুর আচরণ করেছেন। এ সবের কারণেই এই সাজা।

গত ২১ এপ্রিল ১২ সদস্যের জুরি বোর্ড জর্জ ফ্লয়েড হত্যা মামলায় ডেরেক শভিনকে দোষী সাব্যস্ত করে। আগেই ঠিক ছিল শুক্রবার তার সাজা ঘোষণা করা হবে। সেই মতোই সাজা ঘোষণা করল আমেরিকার ওই আদালত। সাড়ে ২২ বছর কারাদণ্ড দেওয়ার ফলে দীর্ঘ দিন তাঁকে জেলের অন্তরালেই থাকতে হবে। কিন্তু বিচারকের পর্যবেক্ষণ, ডেরেক শভিন বাকি জীবন এক জন দাগি আসামি হয়েই থাকবেন। সাজা খাটার পরেও তিনি কোনও রকমের অস্ত্র ব্যবহারের ছাড়পত্র পাবেন না বলেও এক নির্দেশে জানিয়েছে আদালত। আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে ফ্লয়েডের পরিবার-পরিজনেরা। ফ্লয়েডের বোন ব্রিজিত ফ্লয়েড রায় ঘোষণার পর বলেন, “পুলিশের নির্মমতাকে রাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত গুরুত্ব দিতে বাধ্য হচ্ছে। এই রায় সে কথাই বলছে। তবে আমাদের আরও অনেক পথ যেতে হবে।”

ওই পরিবারের আইনজীবী বেন ক্রাম্প টুইটারে লিখেছেন, ‘অপরাধী জীবনের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য হয়েছে। ঐতিহাসিক এই রায় ফ্লয়েডের পরিবার এবং আমাদের সমাজের ক্ষতকে সারিয়ে তোলার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেল।’

মামলার শুনানি চলাকালীন ফ্লয়েডের ভাই টেরেন্স ফ্লয়েড আসামির সর্বোচ্চ সাজা অর্থাৎ ৪০ বছরের কারাদণ্ড চেয়েছিলেন। ফ্লয়েডের সাত বছরের মেয়ে জিয়ানা একটি ভিডিয়োয় বলেছিল, “বাবা আমাকে দাঁত ব্রাশ করিয়ে দিত। আমি যাতে নিজে নিজে ব্রাশ করি, তাতে সাহায্য বাবা করত। ওর কথা আমি সবাইকে জিজ্ঞেস করি।” তবে শভিন শুনানির সময় ফ্লয়েডের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছিলেন।
২০২০-র ২৫ মে। পাড়ার একটি দোকানে গিয়েছিলেন বছর ছেচল্লিশের ফ্লয়েড। অভিযোগ, দোকানে একটি ২০ ডলারের জাল নোট চালানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। খবর পেয়ে পুলিশ আসে। দোকানের সামনে ফ্লয়েডকে আটকায় তিন পুলিশ অফিসার। তার পর মাটিতে ফেলে হাঁটু দিয়ে জর্জ ফ্লয়েডের গলা চেপে ধরেই খুন করেন পুলিশকর্তা ডেরেক শভিন। এমনটাই অভিযোগ ছিল। প্রায় ৯ মিনিট ২৯ সেকেন্ড এ ভাবেই ফ্লয়েডকে চেপে ধরে রেখেছিলেন তিনি। ওই সাড়ে ৯ মিনিটে অন্তত ২৭ বার ‘নিঃশ্বাস নিতে পারছি না’ বলেন ফ্লয়েড। তার পর থেমে যান। সে কথায় কানই দেননি শভিন বা তার সঙ্গীরা। শেষমেশ ফ্লয়েডকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

এর পর ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলন শুরু হয়। চাপের মুখে পড়ে শভিন ও তার দুই সঙ্গীকে বরখাস্ত করে মিনেসোটা পুলিশ। কিন্তু তাতে আন্দোলন থামেনি। মিনেসোটা ছাড়িয়ে তা ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।


প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)