থাইল্যান্ডের গুহা থেকে উদ্ধার সকলেই, শেষ হল একটা যুদ্ধ

থাইল্যান্ডের গুহা থেকে উদ্ধারগুহার মধ্যে ফুটবল দল। ছবি: টুইটার

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: থাইল্যান্ডের গুহা থেকে উদ্ধার সকলেই। শেষ হল প্রায় তিন সপ্তাহের যুদ্ধ। যুদ্ধের থেকে কম কিছু ছিল না। গোটা বিশ্ব তাকিয়ে ছিল থাইল্যান্ডের দিকে। আর শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ জয় থাইল্যান্ড প্রশাসনের। যে ভাবে গোটা দুনিয়া তাকিয়ে ছিল এই দিক ঠিক সে ভাবেই থাইল্যান্ড প্রশাসনের তৎপড়তা এতগুলো প্রাণকে। ওদের স্যালুট না করে পারছি না। স্যালুট সেই সব ডাইভারদের যাঁরা নিজেদের প্রাণ সংশয়ে ফেলেও ওই ফুটবল দলকে বাঁচানোর চেষ্টার শেষ সীমায় পৌঁছে গিয়েছে। ওরা ফিরেছে সকলেই। তবুও এই যুদ্ধে একটা মৃত্যু লেখা হয়ে গিয়েছে। তিনি প্রাক্তন এক সেনা প্রধান। যিনি নেমেছিলেন এই উদ্ধারকার্যে। দম বন্ধ হয়ে প্রথম দিকেই মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। হয়তো জীবন দিয়ে সবাইকে বাঁচিয়ে গেলেন তিনি।

তিন দিনে শেষ হল উদ্ধারকাজ। মঙ্গলবার ছিল এই উদ্ধারকার্যের শেষ দিন। ১২জন ফুটবলার ও তাঁদেএর ২৫ বছর বয়সী কোচকে উদ্ধার করতে সক্ষম হলেন ডাইভাররা।  সকলেই সুস্থ রয়েছে। তবুও চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে তাদের। ইতিহাসে লেখা থাকবে এই ‘রেসকিউ অপারেশন’। লেখা থাকবে থাই প্রশাসনের তৎপড়তার কাহিনীও। দেশ, বিদেশ থেকে উড়িয়ে আনা ডাইভাদের নামও লেখা থাকবে স্বর্ণাক্ষরে। এই তালিকায় ছিলেন ব্রিটিশ, অস্ট্রেলিয়া, চাইনিজ ও থাই ডাইভার। এই উদ্ধারকাজকে ঘিরে গুহার বাইরে তৈরি হয়ে গিয়েছিল একাধিক ফুট স্টল। আটকে থাকা দলের পরিবারের সদস্যরা এসে উপস্থিত হয়েছিলেন এখানে। সঙ্গে উদ্ধাকাজ আসা প্রচুর মানুষ ও প্রশাসনের লোকেরা।

থাইল্যান্ডের গুহা থেকে ফুটবল দলকে উদ্ধারের সব খবর পড়তে এখানে ক্লিক করুন

এই লড়াই সব থেকে বেশি ছিল প্রকৃতির বিপক্ষে। বৃষ্টিই হয়েই চলেছিল থাইল্যান্ডে। প্রথমে মনে করা হয়েছিল বৃষ্টি মরসুম না গেলে সম্ভব নয় উদ্ধারকাজ। কিন্তু সেটা তো চার মাসের ধাক্কা। অতদিন গুহার মধ্যে আটকে থাকলে এমনিই অসুস্থ হয়ে পড়বে সকলে। তাই নতুন রাস্তার খোঁজ শুরু হয়। সেই খোঁজে নেমে মৃত্যু হয় একজনের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৯ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায় গুহার ভিতর হারিয়ে যাওয়া দলকে একটি উঁচু পাথড়ের উপর। তাঁদের কাছে খাওয়া ও জল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়। কিন্তু রাস্তা কিছুতেই পাওয়া যাচ্ছিল না। অন্যদিকে বৃষ্টি বেরেই চলেছে।

রবিবার প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয় আর দেড়ি করা যাবে না। শুরু হয় এক এক করে উদ্ধারকাজ। এক এক জনকে উদ্ধার করতে লেগেছে পাঁচ থেকে ছ’ঘণ্টা। প্রতিদিন চার জনের বেশি উদ্ধার করা যায়নি। তিন দিনে উদ্ধার করা হল ১৩ জনকে। তৈরি করা হয় ছোট সাবমেরিন। শেষ পর্যন্ত সফল থাই প্রশাসন, সফল গোটা বিশ্বের প্রার্থণা।