গাজায় মৃত্যু বাড়ছে, কোনও পরিবারে বেঁচে নেই কেউ, কোথাও ১ জন

গাজায় মৃত্যু বাড়ছে

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: গাজায় মৃত্যু বাড়ছে ক্রমশ। চোখের সামনে শেষ হয়ে যাচ্ছে প্রিয় জনেরা। কোনও পরিবারে একজন বেঁচে তো কোনও পরিবারে দু’জন। কোথায় পুরো পরিবারই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। এমনই এক হতভাগ্য বাবার মর্মান্তিক কাহিনী সামনে এসেছে সম্প্রতি। ৩৭ বছরের মহম্মদ আল-হাদিদি পাঁচ সন্তানের বাবা। এখন বেঁচে রয়েছে মাত্র একজন। ছোট্ট ওমরকে কোলে নিয়েই আল-হাদিদির স্বগোতক্তি, ‘‘তুই ছাড়া এই বিশ্বে আমার আর কেউ বেঁচে নেই।’’ ছোট্ট ওমরের তা বোঝার ক্ষমতা নেই। সে বেঁচে আছে এটাই তার বাবার কাছে যথেষ্ট। পা ভেঙে গিয়েছে।

ধ্বংসস্তুপের মধ্যে থেকে ওমরকে উদ্ধার করে উদ্ৱারকারী দল। মৃত মায়ের কোলে তখন ঘুমিয়ে ৫ মাসের ওমর। ওই ছোট্ট পা ভেঙেছে তিন জায়গায়। হাসপাতালে ছেলের বেডের পাশেই সময় কাটছে আল-হাদিদির। তিনি বলেন, ‘‘ওরা ভগবানের খোঁজে গিয়েছে, আমরাও এখানে বেশিদিন থাকব না। ওদের সঙ্গে দ্রুত দেখা হবে, আমি আর তুই। হে ভগবান, এটা যেন বেশি দেড়ি না হয়।’’

তাঁর চার সন্তান সুহেব ১৩, আহায়া ১১, আবদেহরামান ৮ ও ওসামা ৬ বছর বয়সের। সঙ্গে স্ত্রী মাহা আবু হাতাব, বয়স ৩৬। শেষ হয়ে গিয়েছে সকলেই। সবাইকে ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। মাঝে মাঝেই একমাত্র সন্তানকে আদর করছেন নিরুপায় বাবা। ডান পায়ে প্লাস্টার করা ৫ বছরের শিশুটির। মুখে রয়েছে অজস্র কাটা দাগ। এখন শুধুই সন্তানের সুস্থ হয়ে ওঠার অপেক্ষায় যদিও জানেন না তার পরও বেঁচে থাকবেন কিনা। যদিও তিনি যেতে চান তাঁর মৃত পরিবারের কাছেই।

শনিবার ছিল রামাদান মাসের উপোস শেষ করার দিন। সেই উৎসবেই যোগ দিয়েছিল এলাকার সব মুসলিম পরিবার। তার আগে শুক্রবার আল-হাদিদির স্ত্রী তাঁর সন্তানদের নিয়ে গাজা শহরের বাইরের সাতি রিফিউজি ক্যাম্পের কাছে যেখানে তাঁদের পুরো পরিবার রয়েছে সেখানে যায় তুতো ভাই-বোনদের সঙ্গে দেখা করতে। উৎসবের মেজাজেই মামার বাড়ি গিয়েছিল সবাই।

আল-হাদিদি বলেন, ‘‘আমাকে ফোন করে ওরা সেই রাতটা ওখানেই থেকে যেতে চায়। আমিও বলি ঠিক আছে। বাড়িতে আমি সেই রাতে একাই ঘুমোচ্ছিলাম। বিস্ফোরণের শব্দে হঠাৎই ঘুম ভেঙে যায়। এক প্রতিবেশি জানায় তাঁর শালার বাড়িতে ইজরায়েলি মিসাইল এসে পড়েছে। আমি দ্রুত সেখানে পৌঁছই কিন্তু টতক্ষণে পৌঁছই পুরো বাড়িটা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে এবং উদ্ধারকারী দল দেহ বের করছে।’’

সেই পরিবারের স্ত্রী ও চার সন্তানও এই ঘটনায় মারা গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত এক সন্তানকে জীবিত অবস্থায় পেয়ে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন বটে কিন্তু হারানোর ক্ষত সারাজীবনের সঙ্গী হয়ে গিয়েছে তাঁর। সোমবার পর্যন্ত ইজরায়েলি বিমান হানায় ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছে তার মধ্যে ৫৯ জন শিশু।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)