আগুন শপিংমলে, ঝলসে মারা গেল ৬৪টি তরতাজা প্রাণ!

আগুন শমিংমলেআগুন শমিংমলে

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: রবিবার ছুটির দিন জমজমাটই  ছিল শপিংমল চত্বর। অন্যান্য দিনের তুলনায় ভিড়ও অনেকটাই বেশি। কচিকাঁচাদের চিৎকারে রমরম করছিল জায়গাটি। হঠাৎই তা বদলে গেল আর্তনাদে। শপিংমলে আগুন লেগে পুড়ে মারা গেলেন ৬৪ জন। মস্কো থেকে প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার পুব দিকে কেমেরোভো শহরে এই ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় স্কুলগুলিতে সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। ত্রেসেভেস্কি শহরের এক স্কুলের একদল ছাত্রছাত্রী এসেছিল উইন্টার চেরি মলে সিনেমা দেখতে। সঙ্গে আরও আনন্দ। আইসক্রিম খাওয়া, গেমস, হুটোপাটি— সবই ছিল তালিকায়। কিন্তু মুহূর্তে বদলে গেল সবটা।

‘‘আমরা পুড়ে যাচ্ছি। গুডবাই।’’ মারিয়া

হঠাৎই আগুন লেগে গেল মলে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, মলের ইমারজেন্সি এক্সিট বন্ধ ছিল। সুইচ অফ করা ছিল ফায়ার অ্যালার্মেরও।  ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় অনেকের। অনেকের প্রাণ গিয়েছে আগুনে পুড়ে। কোনও কোনও ছাত্রছাত্রী তাদের জীবনের শেষ ফোনটা ওই সময়েই পরিবারের লোকজনদের করে। ১৩ বছরের মারিয়া যেমন সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লিখেছিল, ‘‘আমরা পুড়ে যাচ্ছি। গুডবাই।’’ ৩০ জন ছাত্রছাত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই বার্তা দিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। আর কখনও তাদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের সবুজ আলোটা জ্বলে উঠবে না!

ফের রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন ভ্লাদিমির পুতিন

এখনও মৃতদের পুরো তালিকা পাওয়া যায়নি। তবে যা খবর, ৬৪ জনের মধ্যে বেশির ভাগই ওই স্কুলের ছাত্রছাত্রী। তাদের পরিবারের লোকেরা এখনও আশায় বুক বেঁধে হাসপাতালে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। যদি কোথাও কোনও কোণায় বেঁচে থাকে তাঁদের ছোট্ট ‘সোনা’টি। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন স্কুলের ডিরেক্টর পাভেল অরিস্কি। এক জন জানিয়েছেন, বাড়ির খুদেটি তাঁকে বিকেল সওয়া চারটে নাগাদ ফোন করেছিল। আগুন লাগার ঠিক পর পরই। সে বলেছিল, ‘‘সব জায়গায় আগুন জ্বলছে। দরজা বন্ধ।’’ বিকা বলেছিল, ‘‘মাকে বোলো আমি মাকে খুব ভালবাসি। সবাইকে বোলো আমি সবাইকে ভালবাসি।’’

দেখুন ভিডিও…

তদন্তে নেমে পুলিশ ওই মলের মালিক এবং রক্ষণাবেক্ষণের কাজে যুক্ত মোট চার জনকে আটক করেছে। একটি ফৌজদারি মামলাও দায়ের করেছে পুলিশ। আপৎকালীন পরিস্থিতি সামাল দিতে রাশিয়ার যে মন্ত্রক রয়েছে তারই মন্ত্রী ভ্লাদিমির পুচকভ জানিয়েছেন, ওই অগ্নিকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ৬ জন নিখোঁজ। গুরুতর জখম অবস্থায় ১৩ জন হাসপাতালে ভর্তি। তবে পুড়ে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগকেই শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেকের দেহই ১০০ শতাংশ পুড়ে দলা পাকিয়ে গিয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া তাদের দেহ শনাক্ত করা সম্ভব নয়।