পঞ্চায়েত ভাগ্য ঝুলছেই, ফের পিছলো শুনানি

কাটল অনিশ্চয়তা, ১৪ মে পঞ্চায়েত নির্বাচন।কাটল অনিশ্চয়তা, ১৪ মে পঞ্চায়েত নির্বাচন।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: শুনানি পিছিয়ে গেল আবার। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভাগ্য নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে ফের শুনানি আগামী কাল বুধবার সকাল ১০টায়। ফলে, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্থগিদাদেশ বহালই থাকল।

এ দিন দুপুরে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের বেঞ্চে মামলাটির শুনানি শুরু হয়। দু’পক্ষের সওয়াল জবাব শেষে বিচারপতি জানিয়ে দেন, এই মামলার শুনানি ফের বুধবার সকালে হবে।

বেশ কয়েক দিন ধরেই গোটা রাজ্যের নজরই পড়ে রয়েছে আদালতের দিকে। কখনও সুপ্রিম কোর্ট, কখনও বা হাইকোর্ট। তবে, সব তরী শেষে এসে ভিড়েছে হাইকোর্টে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের সিঙ্গল বেঞ্চে। গত ১২ এপ্রিল বিচারপতি তালুকদারের বেঞ্চই পঞ্চায়েত নির্বাচনের সমস্ত প্রক্রিয়ার উপরে অন্তর্বর্তিকালীন স্থগিতাদেশ জারি করে। সোমবারও সেই মামলার শুনানি ছিল। ওই দিন তিনি জানিয়েছিলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভোট প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ বজায় থাকবে। শুনানির দিন ঠিক হয়েছিল মঙ্গলবার বেলা দুটোয়। কিন্তু, বেশ কয়েক ঘণ্টা শুনানির শেষে বিচারপতি জানিয়ে দেন, ফের ১৮ এপ্রিল শুনানি হবে।

বিচারপতি তালুকদারের সিঙ্গল বেঞ্চ ভোট প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ জারি করার পরেই তৃণমূল এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ও বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলা দায়ের করেছিল। ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার তাদের নির্দেশে বলে, এই নির্বাচনের বিষয়ে তারা কোনও ভাবেই নাক গলাবে না। চলতি ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের মেয়াদ আগামী অগস্ট পর্যন্ত জানার পর তারা নির্দেশ দেয়, এ সংক্রান্ত সমস্ত সিদ্ধান্ত সিঙ্গল বেঞ্চই নেবে। পাশাপাশি তারা পরামর্শ দেয়, সিঙ্গল বেঞ্চ প্রয়োজনে প্রতি দিন শুনানি করে দ্রুত ওই মামলার নিষ্পত্তি করবে। এবং এ ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ বিচারপতি তালুকদারের বেঞ্চকে মাথায় রাখতে হবে।

পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে টানাপড়েন চলছেই

আগামী ১, ২ এবং ৫ মে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে বলে নির্দেশিকা জারি করেছিল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার অমরেন্দ্র কুমার সিংহ। গত ২ এপ্রিল জারি হওয়া ওই নির্দেশিকা মেনেই রাজ্য জুড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর্ব শুরু হয়। কিন্তু, প্রতি দিনই রাজ্যের প্রায় সব জায়গায় অশান্তির ঘটনা ঘটে। শাসক দলের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলে সব বিরোধী দলগুলি। এমন একটা সময়ে বিজেপি সুপ্রিম কোর্টে এ নিয়ে মামলা দায়ের করে। সেই মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, তারা এ ব্যাপারে কোনও ভাবেই হস্তক্ষেপ করবে না। এর পরেই রাজ্য নির্বাচন কমিশন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর এক দিন তা বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু, পর দিন সকালেই নিজের জারি করা সেই নির্দেশ বাতিল করে দেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার একে সিংহ।

এই মেয়াদ বাড়ানো এবং তা বাতিল করা নিয়ে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে মামলা দায়ের করে বিজেপি। মামলা করা হয় সুপ্রিম কোর্টেও। কিন্তু, শীর্ষ আদালতে ওই মামলা খারিজ হয়ে যায়। পরে তৃণমূল বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করে।

মামলার চক্করে পড়ে আপাতত রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভাগ্য ঝুলছে হাইকোর্টে, বিচারপতি তালুকদারের সিঙ্গল বেঞ্চে।