ফিফা বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ লাইফ দেখা হল না! অথচ ফুটবলই ওদের জান-প্রাণ

ফিফা বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ লাইভফিফা বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ লাইভ

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: ফিফা বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ লাইভ দেখা হবে না ওদের। অথচ ওরা এখন যেখানে রয়েছে, সেখানে টিভি, ডিস অ্যান্টেনা, কেবল সংযোগ— সব আছে। কিন্তু, ওরা যে এখনও সুস্থ নয়।

বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ দেখার জন্য ফিফা ওদের ১৩ জনকেই আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। কিন্তু, রাশিয়ায় গিয়ে লুঝনিকি স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখা তাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতো করে ওরা টিভিতেই লাইভ দেখতে চেয়েছিল ফাইনাল ম্যাচ। কিন্তু, সেই অনুমতিও মিলল না। কারণ, রাত জেগে খেলা দেখার মতো শারীরিক অবস্থা ওদের ১৩ জনের কারও নেই।

থাম লুয়াং গুহা থেকে উদ্ধার হওয়ার পর ‘ওয়াইল্ড বোরস’ ফুটবল দলের ১২ জন খেলোয়াড় এবং তাদের কোচ এখন ভর্তি রয়েছে চিয়াং রাইয়ের প্রচানুখরো হাসপাতালে। ওদের কারও বয়স ১১, কারও বা ১৬। আর কোচ এক্কাপল চান্টাওং-এর বয়স ২৫। রবিবার সন্ধ্যা ৬টায় যখন মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে ফিফা বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ শুরু হবে, থাইল্যান্ডে তখন রাত ১০টা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, অত রাতে খেলা দেখলে ওই ফুটবলারদের শরীরের ক্ষতি হতে পারে। তাই ম্যাচ রেকর্ড করে রাখা হবে। সোমবার সকালে সকলকে সেই রেকর্ডেড ম্যাচ দেখানো হবে।

রবিবার সন্ধ্যা ৬টায় যখন মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে ফিফা বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ শুরু হবে, থাইল্যান্ডে তখন রাত ১০টা।

তাই লুকা মদ্রিচ বা কিলিয়ান এমবাপেরা যখন লুঝনিকির মাটি কাঁপিয়ে বিশ্বকাপ জয়ের জন্য লড়াই করবে, ওরা ১৩ জন তখন হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শারীরিক কষ্টের মধ্যেই লড়াই করবে মানসিক যন্ত্রণার সঙ্গে। ফুটবলকে ভালবেসেও তাকে একটু ছুঁয়ে দেখা গেল না। মাঠে যাওয়ার সুযোগটাও হাতছাড়া হতে সময় লাগেনি। হবে নাই বা কেন! ওদের চার জন তো থাইল্যান্ডের নাগরিকই নয়। পাসপোর্ট কোথা থেকে হবে! তার মধ্যে আবার ওই ফুটবল দলের কোচ এক্কাপল চান্টাওং রয়েছেন। এক্কাপল চান্টাওং এবং তার তিন শিষ্য ডুল, মার্ক ও টি-এর নাগরিকত্বই নেই। পাসপোর্ট-ভিসা তো অনেক দূরের বিষয়।

ওরা এখন হাসপাতালে ভর্তি।

ওরা এখন হাসপাতালে ভর্তি। ছবি: টুইটার থেকে।

ব্রিটিশ উদ্ধারকারী দল ওই গুহায় পৌঁছে ফুটবল দলের খোঁজ পাওয়ার আগে ন’টা দিন গুহার অন্ধকারেই কাটিয়েছে ওরা। ঘুম নেই, খাওয়া নেই, অন্ধকারে জলের উপরে জেগে থাকা চ্যাপ্টা পাথরে বসে কাটিয়ে দেওয়া ঘণ্টার পর ঘণ্টা! শুধুই অপেক্ষা। গত ২৩ জুন দলের ১২ জন খেলোয়াড়কে নিয়ে ওই গুহায় ঢুকেছিলেন এক্কাপল। ঠিক ৯ দিন পর তাদের উদ্ধার করা হয়।

মাঠে যাওয়ার সুযোগটাও হাতছাড়া হতে সময় লাগেনি। হবে নাই বা কেন! ওদের চার জন তো থাইল্যান্ডের নাগরিকই নয়।

ওদের বেঁচে ফেরার ঘটনায় গোটা দুনিয়া খুশি হয়েছে। ফুটবল বিশ্ব আনন্দে আত্মহারা। তাই ফিফা থেকে আমন্ত্রণ এসেছে বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচ দেখার। সামনের মরসুমে ক্লাবের মাঠে খেলা দেখার জন্য ওদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড। কিন্তু পাসপোর্ট ছাড়া তো যাওয়া সম্ভব নয়। ওরা তো চিয়াং রাইয়ের বাইরে কোথাও খেলতে যেতেও পারত না।

‘সোনার পাহাড়’, সম্পর্কের টানাপড়েনের কাহিনি ছুঁয়ে যায় মনকে

কিন্তু এ সব এতটা আপসোস ছিল না। খারাপ লাগা থাকলেও মনটা শক্ত ছিল। তবে, বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ না-দেখাটা ওরা মেনে নিতে পারছে না কিছুতেই। কিন্তু, আগামী বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার আগে পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের কথা শোনা ছাড়া আর তো কোনও উপায়ও নেই। শরীরটা ভাল নয় যে!