‌‌ফাইনালে টটেনহ্যাম, লুকাসের হ্যাটট্রিকে আবার সেই প্রত্যাবর্তনের ছবি

‌‌ফাইনালে টটেনহ্যাম

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ‌‌ফাইনালে টটেনহ্যাম । আবারও এক দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের অধ্যায় রচিত হল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে!‌ সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ঘরের মাঠে হার। বুধবার দ্বিতীয় লেগে বিরতিতে ২ গোলে পিছিয়ে টটেনহ্যাম। আমস্টার্ডাম এরিনা বুঁদ হয়ে আছে ফাইনালে ওঠার স্বপ্নে। কিন্তু চব্বিশ ঘণ্টা আগেই অ্যানফিল্ড দেখিয়ে দিয়েছে, জেদ থাকলে, নিষ্ঠা থাকলে, গোলের জন্য মরিয়া হলে, আগ্রাসী হলে ফুটবলে কোনও কিছুই অসম্ভব নয়। সেই ছবিটাই আবার ভেসে উঠল আয়াক্সের ঘরের মাঠে। ৫ মিনিটে ডি লাইট এবং ৩৫ মিনিটে হাকিম জিয়েখের গোলে ২–০ এগিয়ে যায় আয়াক্স।

প্রথম লেগের ১ গোলে জয় ধরলে ৩–০ ব্যবধানে এগিয়ে। তবুও শেষরক্ষা হয়নি ডাচ দলের। দ্বিতীয়ার্ধে লুকাস মৌরা হ্যাটট্রিক করে টটেনহ্যামকে পৌঁছে দিলেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে। ৫৫ মিনিটে প্রথম গোল লুকাসের। মিনিট চারেক পরেই দ্বিতীয় গোল। খেলার শেষমুহূর্তে, ইনজুরি টাইমের ৬ মিনিটে লুকাসের হ্যাটট্রিকেই ফাইনালের দরজা খুলে যায় টটেনহ্যামের সামনে। দুই লেগ মিলিয়ে ৩–৩, কিন্তু অ্যাওয়ে গোলে এগিয়ে থেকে খেতাবি লড়াইয়ের চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছে গেল টটেনহ্যাম। ১ জুন রাতে ফাইনাল, মাদ্রিদে তারা মুখোমুখি হবে লিভারপুলের।

বুধবার রাতে খেলা শেষের বাঁশি বাজতেই স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণায় কাতর আমস্টার্ডাম এরিনা। তীব্র হতাশায় ভেঙে পড়েন আয়াক্স ফুটবলাররা। অন্যদিকে, ফাইনালে ওঠার উচ্ছ্বাসে আত্মহারা টটেনহ্যামের কোচ থেকে ফুটবলার, সবাই। প্লেয়ারদের জড়িয়ে ধরে কোচ পোচেত্তিনো যখন অভিনন্দন জানাচ্ছেন, তখন তাঁর চোখে জল। আনন্দাশ্রু!‌ পরে সাংবাদিক সম্মেলনে পোচেত্তিনোর মন্তব্য, ‘‌প্রচণ্ড আবেগের মুহূর্ত। যা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। অবিশ্বাস্য ফল। ফুটবল, তোমাকে ধন্যবাদ।’‌

‌লিভারপুলের কাছে হার বার্সেলোনার, মেসিকে ফেলে বিমানবন্দরে দল!‌

একটু থেমেই টটেনহ্যাম কোচের সংযোজন, ‘‌ধন্যবাদ আমার প্লেয়ারদেরও। ওরাই হিরো। গতবছরই বলেছিলাম, যে প্লেয়ারদের আমি পেয়েছি, তারা সবাই হিরো।’‌ আনন্দে, উত্তেজনায় মাখামাখি পোচেত্তিনো থামতেই চাইছিলেন না, ‘‌দ্বিতীয়ার্ধটা সত্যিই অবিশ্বাস্য। ফুটবল ছাড়া এই আবেগ কোথায় পাবেন?‌ ফুটবল ছাড়া বাঁচাই সম্ভব নয়। এই মুহূর্তে খুবই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছি।’‌

যাঁর হ্যাটট্রিকে অসম্ভবকে সম্ভব করল টটেনহ্যাম, সেই লুকাস মৌরা কী বলছেন?‌ কোনও রাখঢাক না রেখেই ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার জানিয়ে দিলেন, ‘‌আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত।’‌ কোচের সুরেই সুর মিলিয়ে হ্যাটট্রিক–হিরো বলেছেন, ‘‌এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার নয়। আমি প্রচণ্ড খুশি, গর্বিত সতীর্থদের জন্য। মাঠে সবাই নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিয়েছে। এই যে মুহূর্তটা এসেছে, তার সত্যিই যোগ্য আমরা। কঠোর পরিশ্রম করেছে সবাই। এখানে আয়াক্সের বিরুদ্ধে খেলাটা মোটেই সহজ ছিল না। কিন্তু বিশ্বাস ছিল সতীর্থদের ওপর। ফুটবলই এমন মুহূর্তের জন্ম দেয়।’‌

আবার ফুটবলই বুধ–রাতে ‘‌নিষ্ঠুর’ হয়ে দেখা দিল আয়াক্সের কাছে। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দারুণ ফুটবল উপহার দিয়েছে তারা। আয়াক্সের টোটাল ফুটবলে মোহিত হয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু ফাইনালে ওঠার রাস্তায় হোঁচট খেতে হল তাদের। শেষমুহূর্তে গোল হজম করে। আয়াক্স কোচ এরিক তেন হ্যাগ ম্যাচের পর বলেছেন, ‘‌জিতে শেষ করতে পারিনি আমরা। ফুটবল কখনও নিষ্ঠুরও হয়। কিন্তু আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এই দলকে নিয়ে আমি গর্বিত।’‌‌

(খেলার আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)