মেন্টাল হেলথ, হতাশার সময় কীভাবে কাটিয়ে উঠেছিলেন সানিয়া মির্জা

মেন্টাল হেলথ

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: মেন্টাল হেলথ এই মুহূর্তে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমরা শরীরের সমস্যা নিয়ে এতটাই ব্যস্ত থাকি যে মানসিক সমস্যার কথা ভাবার সময় পাই না। বরং মানসিক স্বাস্থ্যকে কেউ গুরুত্ব দিয়ে দেখে না। আর সেটা দেখলে পাগলের তকমা দেওয়া হয়। কিন্তু শরীরের স্বাস্থ্যের সঙ্গে সঙ্গে মনের স্বাস্থ্যও গুরুত্বপূর্ণ বরং বেশি করে ভাবা উচিৎ মনের স্বাস্থ্যের কথা। ২০০৮-এ ঠিক যেভাবে হতাশায় ডুবে গিয়েছেন দেশের সেরা টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা। কী ভাবে তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলেছিল একটি ঘটনা, তা এতদিন পর জানিয়েছেন তিনি।

২০০৮-এ বেজিং অলিম্পিকের প্রথম রাউন্ড থেকেই বেরিয়ে যেতে হয়েছিল চোটের জন্য। কব্জির চোট তাঁকে আর এগোতে দেয়নি। প্রথম প্রতিপক্ষ চেক রিপাবলিকের ইভেতা বেনেসোভার বিরুদ্ধে খেলতে মেনে মাঝ পথেই থামেন তিনি। তখন তিনি ৬-২, ২-১-এ পিছিয়ে ছিলেন। চেষ্টা করেছিলেন খেলার কিন্তু প্রচন্ড ব্যথা তাঁকে খেলা চালাতে দেয়নি।

একটি সাক্ষাৎকারে সানিয়া বলেন, ‘‘হ্যাঁ, অনেকবার। শুধু টেনিস নয়, কোর্টের বাইরেও, তার জন্য। আসলে আমরা অনেক সময় ভেবেনি কেরিয়ারটাই আমাদের জীবন যেটা আনন্দ নিয়ে আসে। আমরা ভুলে যাই কেরিয়ার আমাদের জীবনের একটা অংশ, এটা সত্যিই আমাদের জীবন নয়।’’

‘’৩৪ বছর বয়সে এসে এখন বিষয়টি আমার কাছে পরিষ্কার কিন্তু ২০ বছরে, এমন অনেক কিছু ঘটেছে টার পর মনে হয়েঠে এটা আমি পারব না,’’ বলেন সানিয়া। একটি ঘটনার কথা মনে করিয়ে দেন সানিয়া। তিনি বলেন, ‘‘যখন বেজিং ২০০৮ অলিম্পিকে কব্জির চোটের জন্য আমাকে অলিম্পিক থেকে ছিটকে যেতে হয়েছিল তখন প্রায় ৩-৪ মাস আমি হতাশায় ডুবে গিয়েছিলাম। আমার মনে আছে কোনও কারণ ছাড়াই কেঁদে ফেলতাম। এরকম হতো, আমি দারুণ ভাল আছি আর তার পরই হঠাৎ করে কান্নায় ভেঙে পড়তাম। মনে আচে একমাসের বেশি সময় আমি নিজের ঘরের বাইরে যাইনি, খেতেও না।’’

এর পর সেখান থেকে তিনি কী করে বেরিয়ে এলেন, সেটাই আসল। আসলে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি চাইলে নিজেই করা যায়। তবে তার জন্য প্রয়োজন সময়। কাছের মানুষদের পাশে থাকা। সানিয়া বলেন, ‘‘আমার মনে হত আমি আর কখনও টেনিস খেলতে পারব না। আমি খুব কন্ট্রোলের মধ্যে থাকতে ভালবাসি কিন্তু যখন নিজের মতো বিষয়গুলো হয় না তখন সেটা হজম করা কঠিন হয়ে যায়। তখন এমন কিছু বাধ্য হয়ে করতে হয় যা আমি পারি না, যেটা আমি ভালবাসি আর যেটা আমি করছি, আমাকে খুব ভাবাত। যেকোনও মানুষের জন্য যে কোনও বয়সে এটা অনেক বড় হতে পারে কিন্তু আমার জন্য  বয়সটা ছি ২০ বছর। সেই বয়সে এটা মনে হওয়া যে তুমি শেষ, তুমি আর অলিম্পিকে যেতে পারবে না।’’

সানিয়া মির্জার কব্জির চোট এতটাই বেশি ছিল যে তিনি নিজে হাতে চুলও আছড়াতে পারতেন না। তিনি বলেন, ‘‘আমার কব্জির অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে আমি চুল আছড়াতে পারতাম না। আমার গতি পুরো হারিয়ে গিয়েছিল এবং অস্ত্রোপচার করতে হত। অস্ত্রোপচারের পর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। বিষয়টি আরও জটিল হয়ে যায়। আমার মনে হতে শুরু করে আমি আমার পরিবার ও দেশের সম্মানরক্ষা করতে পারছি না। আমার পরিবার সঠিক রাস্তা দেখাতে সাহায্য করে এবং যে সাহায্যটা দরকার ছিল সেটা আমি পাই। তার পর দেশে কমনওয়েলথ গেমসে দুটো পদক পাই।’’

এশিয়ান গেমস, কমনওয়েলথ গেমস, অ্যাফ্রো এশিয়ান গেমস মিলে ১৪টি পদক পেয়েছেন সানিয়া মির্জা। তার মধ্যে রয়েছে ৬টি সোনা। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ছ’টি গ্র্যান্ডস্লাম টাইটেলও।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)