সেলিম মালিক ঘুষ দিতে চেয়েছিলেন দু‘লাখ ডলার, মুখ খুললেন আর এক ক্রিকেটার

সেলিম মালিকসেলিম মালিক।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: সেলিম মালিক নাকি ঘুষ দিতে চেয়েছিলেন তাঁকে। ক্রিকেটে ঘুরে ফিরে এসেছে গড়াপেটা কাণ্ড। নাম জড়িয়ে গিয়েছে বড় বড় ক্রিকেটারের। তবে এই সবের মাঝে ছিল ক্রিকেটের বাইরে কোনও বুকি। এ বার তো স্বয়ং ক্রিকেটার ঘুষ দিতে চাইলেন ক্রিকেটারকে। সদ্য প্রকাশিত বইয়ে এমনটাই জানিয়েছেন আলোচনার শীর্ষে থাকা অস্ট্রেলিয় ক্রিকেটার শেন ওয়ার্ন

ওয়ার্নের নতুন বইয়ের নাম ‘নো স্পিন’। যেখানে তাঁর জীবনে অনেক ব্যাক্তিগত তথ্য উঠে এসেছে বলে দাবি স্বয়ং ওয়ার্নেরই। তিনি এনডি টিভিতে এক চ্যাট শোয়ে বলেন, ‘‘এই বইয়ে আমার ব্যাক্তি জীবনের অনেক গোপন কথা রয়েছে। এই বইয়ে আমি চূড়ান্ত সততা দেখিয়েছি। আমার ব্যাক্তিগত জীবন, আমার সম্পর্ক আমার সন্তান আমার ক্রিকেট পরিবার সব নিয়ে লিখেছি। সব কথার গভীরে গিয়েছি। বিশেষ করে ২০০৮ আইপিএল নিয়ে।’’

এই বইয়ে এমন একটি খোলসা করেছেন ওয়ার্ন যা নিয়ে আপাতত তোলপাড় ক্রিকেট বিশ্ব। সরাসরি এক নামজাদা ক্রিকেটারের মুখোশ খুলে দিয়েছেন তিনি। সেটা ১৯৯৪-৯৫ মরসুম। পাকিস্তানে অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান টেস্ট সিরিজ চলছে। করাচি টেস্টের ঘটনা। সেই সময় পাকিস্তান দলে খেলছেন সেলিম মালিক।

শেন ওয়ার্ন বলেন, ‘‘সেলিম মালিক আমাকে দু’লাখ ডলার দিতে চেয়েছিল। ও বলেছিল আধঘণ্টার মধ্যে আমার ঘরে এই টাকাটা পৌঁছে যাবে। তবে যদি আমি অফ স্টাম্পের বাইরে ওয়াইড বল করি এবং ম্যাচ ড্র হয়। ওর বক্তব্যের সারমর্ম ছিল এটাই।’’ এখানেই শেষ নয় তিনি মনে করেছেন সেই সময়কে যখন শ্রীলঙ্কার এক বুকি তাঁকে গড়াপেটা করার প্রস্তাব দিয়েছিল।

সেরা দশে রয়েছেন ভারতের তিনজন ব্যাটসম্যান

ওয়ার্ন বলেন, ‘‘আমি ক্যাসিনোতে গিয়ে ৫ হাজার ডলার হেরেছিলাম। তখন মার্ক ওয়ার এক বন্ধু ৫ হাজার ডলার ফেরত দিতে চেয়েছিল। আমি না করে দিয়েছিলাম। ও বলেছিল, কোনও সমস্যা হবে না।’’ ২০০৫ সালে স্ত্রী সিমন কালাহানের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায় ওয়ার্নের। জড়িয়ে পড়ে নতুন সম্পর্কে। কিন্তু এলিডাবেথ হার্লের সঙ্গে সেই সম্পর্কও দীর্ঘায়িত হয়নি।

ওয়ার্ন তাঁর সম্পর্ক নিয়ে বলেছেন, ‘‘আমার দুটোই সঠিক সম্পর্ক ঠিল। এক জনরের সঙ্গে ১০ বছর বৈবাহিক জীবন কাটিয়েছি। এবং এলিজাবেথ। দূর্ভাগ্যজনকভাবে সেই সম্পর্ক না চললেও আমরা এখনও খুব ভাল বন্ধু।’’ এর সঙ্গে তিনি জুড়ে দেন, ‘‘বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ সন্তানদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করে। কিন্তু ওরা আমার সঙ্গে ও ওদের মায়ের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক রেখেছে। এখন আমাদের সবার সঙ্গে সবার খুব ভাল সম্পর্ক। জীবনের এই ওঠাপড়াই অনেক কিছু শিখিয়ে যায়। আমি খুব ভাগ্যবাণ যে আমার সন্তানদের সঙ্গে আমার দারুণ সম্পর্ক।’’

বিতর্কের বাইরে বেরিয়ে ওয়ার্ন তাঁর দেখা সেরা ব্যাটসম্যানদের কথাও লিখেছেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘সচিন তেন্ডুলকর ও ব্রায়ান লারা আমার প্রজন্মের সেরা ব্যাটসম্যান। আমার যদি মনে হয় টেস্টের শেষ দিন একটা সেঞ্চুরি চাই তাহলে আমি লারাকে ব্যাট করতে পাঠাব। আর আমি যদি চাই একজন দিনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাট করাতে চাই তাহলে সেটা সচিন।’’

জীবনের প্রথম ৩ হাজার ডলার থেকে পিজা শপে কাজ করা। সেখান থেকে কী ভাবে বিশ্বের সেরা স্পিনার হয়ে ওঠা সবই রয়েছে শেন ওয়ার্নের এই বইয়ে। এক উচ্ছন্নে যাওয়া ক্রিকেটার। অজস্র সম্পর্ক। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে জর্জরিত একজন ক্রিকেটার। যাঁর জীবন এ বার উঠে এল এক মলাটে।