বার্সেলোনা আসবে? তার আগে ফুটবলারদের নিয়মিত মাইনে দিন মিস্টার মিত্র

মোহনবাগান সচিব অঞ্জন মিত্র।

সম্বিত মোদক
(ফুটবলপ্রেমী)


বার্সেলোনা বনাম মোহনবাগান। শুনলেই সবুজ-মেরুন রক্ত বয়ে যাচ্ছে শরীর দিয়ে। তার পর…

মোহনবাগান খেলোয়াড়দের ঠিক কত মাসের মাইনে বাকি? এই মরসুমের কথা কিন্তু একদমই বলছি না।

এই মরসুমে তো সবে দল গড়া চলছে। বাজেটের মধ্যেই দল গড়ার চেষ্টা করছেন ক্লাব কর্তৃপক্ষ। বলতে চাইছি গত মরসুমের কথা।

গত মরসুম শেষ হয়ে নতুন মরসুমের জন্য প্রস্তুতি প্রায় সেরে ফেলেছে সব ক্লাব। বিশ্বকাপ শেষ হলেই শুরু হয়ে যাবে কলকাতা লিগ। কলকাতার দলগুলো আপাতত সে জন্যই দল গোছাচ্ছে। মোহনবাগানও। সদ্য ক্লাবের সভাপতি, সহ-সভাপতি, কোষাধ্যক্ষ— সকলে সরে দাঁড়িয়েছিলেন যে যাঁর পদ থেকে।

অভিযোগের কেন্দ্রস্থলে ছিলেন ক্লাবসচিব অঞ্জন মিত্র। শেষ পর্যন্ত সব মেটানোর চেষ্টা করেছিলেন টুটু বসু। নিজের পদত্যাগের সিদ্ধান্তও তুলে নিয়েছেন দিন কয়েক আগে। তার মধ্যেই ফুটবলারদের বকেয়া মেটাতে ফের নিজের পকেট থেকে টাকা দিয়েছেন তিনি। তাতে হয়তো কিছুটা মিটেছে। কিন্তু, এখনও অনেক বাকি। তার মধ্যেই নাকি বার্সেলোনার টিমকে মোহনবাগান ক্লাবকর্তারা নিয়ে আসছেন কলকাতায়। ভাবা যায়!

সুনীল আপনি বরং ফুটবল খেলাটা ছেড়েই দিন

একটা দল, যার কোনও স্পনসরই নেই! একটা ক্লাব, যারা নিয়মিত ফুটবলারদের মাইনে দিতে পারে না। ফুটবলারদের সঙ্গে সাপোর্ট স্টাফদেরও একই অবস্থা। সেই ক্লাব দলের পিছনে টাকা খরচ না করে বার্সেলোনার ‘বুড়ো’দের এনে কী প্রমাণ করতে চাইছে?

সেই দলে নাকি রোনাল্ডিনহো, এডমিলসন, প্যাট্রিক ক্লয়ভার্ট, ফেদেরিখ দেয়ু, মিগেল নাদাল,  ফ্র্যাঙ্ক দে বুয়ে, কোকো, সিমাওয়ের মতো ফুটবলাররা আছেন। নামের তালিকাটা ছাপার অক্ষরে বেরিয়েছে। সেখান থেকেই তুলে দিলাম। ২০০৪ সালে এই দলটি বার্সেলোনার হয়ে দাপিয়ে খেলেছে। এই দলটি এখন বিভিন্ন দেশে খেলে বেড়ায়। সব জায়গাতেই তারা খেলে প্রাক্তন কোনও দলের সঙ্গে। এখানে মোহনবাগানের মূল দলের সঙ্গেই খেলার কথা শোনা যাচ্ছে। আর সে কারণেই আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর যুবভারতী স্টেডিয়াম চেয়ে নাকি রাজ্য ক্রীড়া দফতরের কাছে চিঠি দিয়েছেন স্বয়ং অঞ্জন মিত্র।

প্রশ্নটা উঠছেই। প্রশ্নটা উঠতে শুরু করেছে মোহনবাগান ক্লাবের অন্দরেই। বড় কাগজের হাত ধরে প্রচারটা যদিও শুরু করে দিয়েছেন সচিব অঞ্জন মিত্র। কিন্তু দিনটা ভাবুন! ২৮ সেপ্টেম্বর। তত দিন পর্যন্ত আপনাদের মনে থাকবে তো, এ রকম একটা ম্যাচের আয়োজন করেছিল মোহনবাগান। নাকি এখনই সরব হওয়া উচিত এই বলে, এ সব লোক দেখানো বিদেশি দল না এনে দলটাকে ভাল মতো তৈরি করুক ক্লাব কর্তারা। যাঁর প্রধান সচিব অঞ্জন মিত্র।

ঠিক কতটা খরচ হবে এই একটা ম্যাচ আয়োজন করতে অঞ্জনবাবু?

আপনি অবশ্য বলবেন, এটা তো ক্লাবের অন্দরের ব্যাপার। আসলে ব্যাপারটা ক্লাবের অন্দরের নয়। এই মোহনবাগান ক্লাবকে ঘিরে যে সারা বছর আবেগে ডুবে থাকেন হাজার হাজার মানুষ, বিষয়টা আসলে তাঁদের। ব্যাপারটা তাঁদেরও, যাঁরা এই ক্লাবের জন্য দিনের পর দিন টাকা না পেয়েও নিজেকে উজাড় করে দেন। আগে তাঁদের দেখুন ‘মিস্টার সচিব’। তার পর তো এই শো-অফের অবকাশ। আগে একটা ভাল দল তৈরি করুন আগামী মরসুমের জন্য। তার পর তো বার্সেলোনা। তাই না!

ও মনে পড়েছে, এই বছরই তো মোহনবাগান ক্লাবে নির্বাচন হওয়ার কথা। সেপ্টেম্বরের আগেই তো। ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আপনি থাকবেন তো অঞ্জনবাবু?