Juan Ferrando দল নিয়ে আত্মবিশ্বাসী, সেরাটাই দেবে ছেলেরা

Juan Ferrando

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: গত বছর এএফসি কাপের নক আউট পর্বে যোগ্যতা অর্জন করা এটিকে মোহনবাগান এ বারের এএফসি কাপের গ্রুপ পর্বে নেমে শুরুতেই যে ধাক্কা খেয়েছে, তা মোটেই প্রত্যাশিত ছিল না (Juan Ferrando)। গত বুধবার অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ৪-২-এ জিতে এএফসি কাপের অভিষেক স্মরণীয় করে রাখে গোকুলম কেরালা এফসি। এখন সামনের দুটি ম্যাচে তাদের জিততেই হবে। না হলে গ্রপ পর্ব থেকেই ছিটকে যেতে হতে পারে তাদের। শনিবার তারা যে দলের মুখোমুখি, সেই ঢাকার বসুন্ধরা কিংস প্রথম ম্যাচেই জয় দিয়ে শুরু করে আত্মবিশ্বাসে টগবগ করে ফুটছে।

এই অবস্থায় জয়ে ফেরাটা কঠিন হলেও অসম্ভব নয় বলে মনে করেন এটিকে মোহনবাগানের স্প্যনিশ কোচ হুয়ান ফেরান্দো। তাঁর আশ্বাস, শনিবার গত ম্যাচের চেয়ে ভাল ফুটবলই খেলবে তাঁর দল। শুক্রবার সাংবাদিকদের তিনি ঠিক কী বললেন, তার উল্লেখযোগ্য অংশ একানে তুলে ধরা হল।

কালকের ম্যাচ আপনাদের কাছে মরা-বাঁচার লড়াই। আপনার শিবিরের কী অবস্থা এবং কালকের ম্যাচ নিয়ে কী ভাবছেন?

সবাই ঠিক আছে। কয়েকটা বিষয় আমাদের শোধরাতে হবে। কিন্তু বসুন্ধরাকে হারাতে গেলে কাল আমাদের সেরাটা দিতেই হবে।

পরের রাউন্ডে ওঠার ব্যাপারে আপনি কতটা আশাবাদী?

আমরা সেরাটা দেওয়ার জন্য তৈরি। জয়টাই আমাদের লক্ষ্য। আমাদের প্রতিপক্ষ বসুন্ধরা যে যথেষ্ট ভাল দল, তা আমরা জানি। ওরা ওদের দেশে চ্যাম্পিয়ন। তবে আমরা আমাদের পরিকল্পনা ও খেলার স্টাইল নিয়ে বেশি ভাবছি। কারণ, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমাদের সম্ভাবনা রয়েছে।

কাল কি আপনাদের রক্ষণ বিভাগের কঠিন পরীক্ষা বলে মনে করেন?

না, তা মনে হয় না। আমরা আমাদের প্ল্যান ও স্টাইল বজায় রেখেই খেলব। কিছু ছোটখাটো ব্যাপারে আরও নজর দিতে হবে। ফুটবলে এমন হয়েই থাকে। কখনও এমন পরিস্থিতি আসে, যখন নিজেদের পরিকল্পনা বদলাতে হয়, কখনও ঝুঁকিও নিতে হয়। কখনও সাফল্য আসে, কখনও আসে না। এটাই ফুটবল। দলের ছেলেদের প্রতি আমার আস্থা আছে। ওরা সেরাটা দিতে চায়। আশা করি, গত ম্যাচের চেয়ে আমরা কাল অনেক ভাল খেলব।

কালকের ম্যাচে যেহেতু দুই দলই জেতার জন্য মরিয়া হয়ে খেলবে। তাই এই ম্যাচটা কি মূলত মানসিকতার লড়াই?

অবশ্যই এই ম্যাচে মনস্তাত্বিক লড়াইটা অনেক বেশি। রিকভারির জন্য আমরা মাত্র একদিন হাতে পেয়েছি। প্রস্তুতির জন্য বেশি সময় পাইনি কোনও দলই। দুটো ম্যাচের মাঝখানে ছ-সাত দিন থাকলে অনেক ভাবনা-চিন্তা করা যায়। এই দু’দিনে দলের পারফরম্যান্স, মানসিকতা দুই দিক নিয়েই ভেবেছি। দলের ছেলেরা এখন পরের ম্যাচের জন্য মানসিক ভাবেও তৈরি। ম্যাচটা যে কঠিন হবে, তা জানি। কিন্তু আমরা ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে রয়েছি। দলের সবাই নিজেদের একশো শতাংশ দেওয়ার জন্য উজ্জীবিত।

প্রাক মরশুম প্রস্তুতি যথেষ্ট না হওয়াতেই কি এত চোট-আঘাত হচ্ছে?

না, তা নয়। আমাদের খেলোয়াড়রা বেশির ভাগই দুর্ভাগ্যবশত চোট পেয়েছে। যেমন তিরি। অনেকেরই ছোটখাটো চোট লেগেছে। ফুটবলে কঠিন মুহূর্ত প্রায়ই আসে, তাতে পেশীতে চোট লেগেই থাকে, সে রকমই। এর জন্য কোনও নির্দিষ্ট কারণ আছে বলে মনে করি না। তিরির চোট হলেও হুগো বুমৌস এখন অনেক ভাল আছে। ৯০ শতাংশ সেরে উঠেছে। কাল ম্যাচের আগে পর্যন্ত ওর জন্য অপেক্ষা করব। আসলে কখনও কখনও এমন পরিস্থিতি আসে, যখন ঝুঁকি নিতে হয়। আবার কখনও ঝুঁকি নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।

তিরির চোটের জন্য কি কার্ল ম্যাকহিউয়ের সঙ্গে সন্দেশ ঝিঙ্গনকে খেলানো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে? গ্রুপ থেকে যেহেতু একটিই টিম জোনাল সেমিফাইনালে উঠবে, আপনারা নিশ্চয়ই খুব চাপে রয়েছেন?

চাপ সমবসময়ই থাকে। আগেও বলেছি আমাদের ২৬জন খেলোয়াড় আছে। প্রত্যেকের ওপরই আমার আস্থা রয়েছে। তিরি এখন খেলতে পারবে না ঠিকই। তবে গিল আছে, সুমিত আছে। ওরা দলকে সাহায্য করার জন্য সব সময় তৈরি। সব সময় যে মনের মতো এগারো হাতে পাওয়া যায়, তা নয়। গত ম্যাচে যেমন কার্ল খেলতে পারেনি, কিন্তু লেনিকে খেলিয়েছিলাম। আমার হাতে যথেষ্ট ভাল দল আছে। ওরা খুব পরিশ্রমী। ওদের সঙ্গে কাজ করতে পারাটা আমার কাছে আনন্দের।

বসুন্ধরা কিংসকে নিয়ে কী বলবেন?

যথেষ্ট ভাল দল ওরা। গত পাঁচটি ম্যাচেই ওরা ভাল খেলেছে। যথেষ্ট সঙ্ঘবদ্ধ দল ওরা। দলটা লড়াকু। ওদের পরিকল্পনাও খুব স্পষ্ট। দুই উইং দিয়ে আক্রমণে ওঠে। দলের ভাল ভাল ফুটবলার আছে। দলটার মধ্যে অনেক ইতিবাচক দিক আছে। ওদের বিরুদ্ধে ভাল কিছু করতে গেলে আমাদের সেরাটা দিতে হবে।

আপনি দলের খেলোয়াড়দের মানসিক ক্লান্তির কথা বলে চলেছেন। অন্য দলগুলোও তো আপনাদের মতো পরিস্থিতিতেই খেলে চলেছে। অন্য দলগুলিকে তো যথেষ্ট চাঙ্গা লাগছে। আপনাদের এই সমস্যা কেন?

গোকুলম গত এক মাস ধরে খেলার মধ্যে রয়েছে। ১৯ এপ্রিলের পর থেকে আমরা আর কোনও টুর্নামেন্ট খেলিনি। তবে অজুহাত দিতে চাই না। গোকুলাম গত একমাসে যতটা ফুটবল খেলেছে, যতটা তীব্রতা নিয়ে খেলেছে, আমরা গত একমাসে সেই সুযোগ পাইনি। তবে ফুটবলে এগুলো হয়েই থাকে। ম্যাচে একটা দলই জেতে। এখন আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বসুন্ধরা, যাদের আমরা যথেষ্ট শ্রদ্ধা করি। যা হয়ে গিয়েছে, হয়ে গিয়েছে। এখন আর এ সব নিয়ে ভাবছিই না।

গত ম্যাচে একাধিক গোলের সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে আপনাদের। প্রথম ১৫ মিনিটেই দু-তিন গোল দিতে পারতেন আপনারা। এটা কি দলের একটা বড় সমস্যা বলে মনে করেন?

হ্যাঁ ঠিকই, গত ম্যাচে ৩০-৩৫ মিনিট পর্যন্ত আমরা ভাল খেলেছি। দুর্ভাগ্যবশত একাধিক গোলের সুযোগ নষ্ট হয়েছে। ফুটবলে এটা হয়। যখন পরপর কতগুলো সহজ সুযোগ হাতছাড়া হয়, তখন মনে হয় কেন এমন হচ্ছে, মানসিকতার দিক থেকেও দল কিছুটা পিছিয়ে পড়ে। ৯০ মিনিটে দলের খেলোয়াড়দের গতি, আবেগে পরিবর্তন আসে। ৯১ মিনিটেও যে খেলার ফল পরিবর্তন হতে পারে, তার উদাহরণ তো আমরা সম্প্রতি উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও (সেমিফাইনালে) পেয়েছি। ৯১ মিনিটে গোল করে পুরো ছবিটাই পাল্টে দেয় রিয়াধ মাহরেজ। এটি কি শারীরিক শক্তির জন্য? না একেবারেই নয়, দলের গতি, আবেগ পরিবর্তনের জন্যই। এগুলো হয়েই থাকে। তিন-চারটে গোল হাতছাড়া হওয়ার পরে মানসিক ভাবে কিছুটা পিছিয়ে পড়ি আমরা।

(তথ্য ও লেখা আইএসএল ওয়েব সাইট)

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক)