আইএসএল ২০২০-২১, মনবীর সিং বলছেন, কলকাতা ডার্বির গোলটাই সেরা

আইএসএল ২০২০-২১, মনবীর সিং

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: আইএসএল ২০২০-২১, মনবীর সিং নামে নতুন তারকার জন্ম দিয়েছে। স্ট্রাইকার যখন, গোল করাটাই তাঁর কাজ। তবে একেকজন স্ট্রাইকারের করা কিছু গোল চিরকাল স্মৃতিতে থেকে যায়। পঞ্জাবের স্ট্রাইকার মনবীর সিংয়ের যেমন শুক্রবার কলকাতা ডার্বির গোলটি। ম্যাচের ৮৫ মিনিটে করা এই একক প্রচেষ্টার গোলই এটিকে মোহনবাগানের জয় সুনিশ্চিত করে। আর এই গোলটিকেই জীবনের সেরা গোল বলে ঘোষণা করে দিলেন মনবীর।

ডান দিকের উইং দিয়ে উঠে কাট করে বক্সের ভিতরে ঢুকে কোনাকুনি শটে মনবীরের গোল বিশেষজ্ঞদের মুগ্ধ করেছে। মোহনবাগানের প্রাক্তন তারকা ফরোয়ার্ড ব্রাজিলের হোসে রামিরেজ ব্যারেটো হিরো আইএসএলের সম্প্রচারকারী স্টার স্পোর্টসে বলেন, “এটা এ বারের হিরো আইএসএলের অন্যতম সেরা গোল। এত ভাল গোল সাধারণত ভারতীয় ফুটবলে দেখা যায় না”। অতীতের আর এক তারকা বাইচুং ভুটিয়াও মনবীরের গোলের প্রশংসা করে বলেন, “মনবীরের গোল দেখে একজন ভারতীয় হিসেবে গর্ব হচ্ছে। আমাদের দেশের এক স্ট্রাইকার এমন অসাধারণ গোল করছে দেখে খুবই ভাল লাগে।”


খেলার জগতের আরও খবর জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

জলন্ধর থেকে যখন কলকাতার ক্লাব ফুটবলে খেলতে গিয়েছিলেন মনবীর, তখন বাংলার সন্তোষ ট্রফি দলেও ডাক পড়ে তাঁর। ২০১৭-য় সেই ফাইনালে এই গোয়াতেই (জিএমসি স্টেডিয়াম, বাম্বোলিম) অতিরিক্ত সময়ে গোল করে বাংলাকে জিতিয়েছিলেন তিনি। বাংলার ফুটবলে তাঁর সেই গোলও যেমন গুরুত্বপূর্ণ ছিল, শুক্রবার কলকাতা ডার্বিতে তাঁর গোলও স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

এই গোল নিয়ে মনবীর নিজেও বেশ খুশি। এটিকে মোহনবাগান মিডিয়াকে তিনি বলেন, “উইং দিয়ে উঠে গোল করাই আমার প্রিয়। শুক্রবারের গোলটাই এখন পর্যন্ত সেরা। কারণ, এই ধরনের ম্যাচে এক গোলে এগিয়ে থাকা মানেই জয় নিশ্চিত নয়, যে কোনও সময় শোধ হয়ে যেতে পারে। দ্বিতীয় গোল করে আমি দলের জয় নিশ্চিত করতে পেরেছি। তা ছাড়া কলকাতায় খেললেও কখনও ডার্বি খেলার সুযোগ পাইনি, এটাই আমার প্রথম ডার্বি। কলকাতা ডার্বিতে গোল করার স্বপ্ন দেখতাম। এত দিনে সেই স্বপ্ন পূরণ হল”।

কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে রয় কৃষ্ণার গোলে অ্যাসিস্ট করেছিলেন মনবীরই। এ বার নিজেই গোল করলেন। এ বছর এফসি গোয়া থেকে এটিকে মোহনবাগানে যোগ দেওয়া এই স্ট্রাইকারের গোলটি নিয়ে সতীর্থ রয় কৃষ্ণাও উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, “প্রায় পঁচিশ গজ দৌড়ে বিপক্ষের রক্ষণের চোখে ধুলো দিয়ে নিখুঁত নিশানায় বলটা গোলে রেখেছে মনবীর। পরিশ্রম ও বুদ্ধি দুটোই ছিল এই গোলে। বিশ্বমানের গোল এটা”।

২০১৬-১৭ মরশুমে মনবীর মহমেডান স্পোর্টিংয়ের হয়ে খেলেছিলেন। সে বারই বাংলার হয়ে সন্তোষ ট্রফি খেলে দলকে জেতান। সন্তোষ ফাইনালে যাদের হারায় বাংলা, সেই গোয়ার ক্লাবেই পরের মরশুমে যোগ দেন মনবীর এবং গত তিনটি হিরো আইএসএল মরশুমে সেই ক্লাবেই ছিলেন। ২০১৭-১৮ মরশুমে হিরো আইএসএলে মোট ন’টি ম্যাচ খেলেন। সেবার লিগ টেবলে তিন নম্বরে ছিল এফসি গোয়া। পরের মরশুমে ১৯টি ম্যাচ খেলেন। সে বার ফাইনাল খেলে গোয়ার দল। গত মরশুমেও হিরো আইএসএলে ১৯টি ম্যাচ খেলেন এবং দু’টি খুব গুরুত্বপূর্ণ গোল করে দলকে লিগ তালিকায় সবার উপরে থাকতে সাহায্য করেন। শুক্রবারের গোলটি হিরো আইএসএলে চতুর্থ গোল তাঁর।

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন) 

দেশের সেরা লিগে ৫০তম ম্যাচের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা ২৫ বছর বয়সি এই স্ট্রাইকারের বাবা কুলদীপ সিংও ছিলেন ফুটবলার। ফেডারেশন কাপ-সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট খেলেছেন পঞ্জাব স্টেট ইলেকট্রিসিটি বোর্ডের হয়ে। ছেলে মনবীর আরও অনেকটা ওপরে উঠে গিয়েছেন। ভারতের জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছেন তিনি। এ বার খেলছেন কলকাতা তথা ভারতের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী ক্লাবের জার্সি গায়ে। এর চেয়ে ভাল স্বপ্নপূরণ আর কীই বা হতে পারে?

(লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)