ভারতীয় ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তি আইএম বিজয়ন আইএসএল নিয়ে কী বললেন

ভারতীয় ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তি আইএম বিজয়ন

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ভারতীয় ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তি আইএম বিজয়ন মুখ খুললেন আইএসএল নিয়ে। ফুটবল জীবনে কলকাতার দুই প্রধানে খেলে ঝড় তুলেছিলেন। ভারতীয় দলের অধিনায়কও ছিলেন। পেয়েছেন অর্জুন সন্মানও। সেই আই এম বিজয়ন এখন দেশের নতুন ফুটবল মহোৎসব হিরো ইন্ডিয়ান সুপার লিগে মুগ্ধ। তাঁর মতে, ভারতীয় ফুটবলপ্রেমীরা সর্বভারতীয় ফুটবল লিগ ও টুর্নামেন্ট তো অনেক দেখেছেন। কিন্তু হিরো আইএসলের মতো পেশাদার লিগ এ দেশ আগে কখনও দেখেনি। হিরো আইএসএলের নিজস্ব ওয়েবসাইট indiansuperleague.com কে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে বিজয়ন বলেছেন, “ভারতে ফুটবল লিগ তো আগেও অনেক হয়েছে। কিন্তু আইএসএল সারা বিশ্বকে জানিয়েছে, এদেশেও ফুটবল হয়। দেশের যুবক-তরুণরা ফুটবলকে পেশা হিসেবে নেওয়ার কথা ভাবতে শুরু করেছে আইএসএল-কে দেখেই। দেশের অনেক পরিবারকে তাদের ছেলেদের ফুটবল খেলায় উৎসাহ জোগাতে উদ্বুদ্ধ করেছে এই লিগ। এ দেশের ফুটবলে ইন্ডিয়ান সুপার লিগ অবদান বিশাল”।

দেশের এক নম্বর লিগে নিজে খেলতে না পারলেও নিয়মিত হিরো আইএসএলের খেলা দেখেন কেরালার এই ফুটবল কিংবদন্তি, যাঁকে কলকাতার ফুটবলপ্রমীরা ভালবেসে ‘কালো হরিণ’ নাম দিয়েছিল। ১৯৯১-এ তিনি কেরালা পুলিশ থেকে প্রথম কলকাতায় আসেন মোহনবাগান এসি-র হয়ে খেলতে। পরের বছর কেরালা পুলিশে ফিরে যান এবং তার পরের বছর ফিরে আসেন মোহনবাগানে। পরের চার বছর জেসিটি ও এফসি কোচিনের হয়ে খেলে ১৯৯৮-এ ফিরে আসেন মোহনবাগানে।

১৯৯৯ থেকে ২০০১-এ খেলেন এফসি কোচিনের হয়ে। ২০০১-এ যোগ দেন ইস্টবেঙ্গলে। ২০০২ থেকে ২০০৫ ফের জেসিটি ও চার্চিল ব্রাদার্সের হয়ে খেলার পরে আবার ফেরেন ইস্টবেঙ্গলে। ২০০৬-এ ইস্টবেঙ্গল ছাড়ার পরে আর কোনও ক্লাবের হয়ে খেলেননি। ১৯৯২ থেকে ২০০৩—এই এগারো বছরে ভারতের হয়ে ৭২টি ম্যাচ খেলেন বিজয়ন। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ৩০টি গোল করেছেন। ১৯৯৯-এর সাফ কাপে ভুটানের বিরুদ্ধে ১২ সেকেন্ডে গোল করেন, যা এখনও আন্তর্জাতিক ফুটবলে অন্যতম দ্রুততম গোল বলে বিবেচিত হয়। সেই সময়ে ভারতীয় দলে বিজয়ন ও ভাইচুং ভুটিয়ার জুটি ছিল ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার জুটি। ২০০৩-এ অ্যাফ্রো এসিয়ান গেমসের পরে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নেন বিজয়ন।

এটিকে মোহনবাগান ও এসসি ইস্টবেঙ্গল সম্পর্কে উচ্ছ্বসিত বিজয়ন এই সাক্ষাৎকারে বলেন, “এই দুই ক্লাবকেই আমি খুবই পছন্দ করি। কারণ, ওদের জন্যই এত মানুষ আমাকে চেনে। গত মরশুমে এসসি ইস্টবেঙ্গলের পারফরম্যান্স ভাল ছিল না ঠিকই, তবে আশা করি এই মরশুমে ওরা ঠিক ঘুরে দাঁড়াবে”।

নিজের রাজ্যের দল কেরালা ব্লাস্টার্সের সমালোচনাই করেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক। ২০১৬-র পর থেকে হিরো আইএসএলের সেমিফাইনালে উঠতে পারেনি ব্লাস্টার্স। গত মরশুমে লিগ টেবলের একেবারে নীচের দিকে দশ নম্বরে ছিল তাঁর রাজ্যের দল। ব্লাস্টার্স সম্পর্কে তিনি বলেন, “ওরা গত কয়েক বছর ধরে চোট ও রক্ষণের ভুলের জন্য ভুগছে। আমার মনে হয়, ওদের দলটা ঠিকঠাক বাছাই করা হয় না। তবে এ বার ওদের প্রাক মরশুম পারফরম্যান্স যে রকম ছিল , এ বছর মনে হচ্ছে আশা রয়েছে। কয়েকটা ম্যাচ না গেলে সঠিক ভাবে ওদের সম্পর্কে মূল্যায়ন করা যাবে না”। শুক্রবার হিরো আইএসএলের উদ্বোধনী ম্যাচে অবশ্য গতবারের রানার্স-আপ এটিকে মোহনবাগানের কাছে ২-৪ হারে কেরালা ব্লাস্টার্স। বিজয়ন অবশ্য ওই ম্যাচের আগেই কথাগুলো বলেন।

১৫ বছর আগে খেলা ছেড়ে দিলেও ফুটবল এখনও তাঁর প্রাণ। নিয়মিত ভারতীয় ফুটবল দেখেনও। নিজের প্রিয় তারকাদের নিয়ে বলেন, “সুনীল ছেত্রী আমার সবচেয়ে পছন্দের ফুটবলার। ওর পরিশ্রম ও নিখুঁত টেকনিকের প্রতিফলন সব সসময় দেখা যায় মাঠে। কেরালা ব্লাস্টার্স দলে আমার প্রিয় খেলোয়াড় কেপি রাহুল”। শুক্রবারের ম্যাচে প্রথম গোলে অ্যাসিস্ট করার পর অবশ্য চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে যেতে বাধ্য হন রাহুল।

(লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)