ISL 2022-23 EBFC vs CFC: আবার হার লাল-হলুদ ব্রিগেডের

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ফের একঝাঁক ভুল ও সেই ভুলের খেসারত দিতে হল ইস্টবেঙ্গল এফসি-কে। একাধিক গোলের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও ঘরের মাঠে চেন্নাইন এফসি-র কাছে হারল ইস্টবেঙ্গল এফসি (ISL 2022-23 EBFC vs CFC)। শুক্রবার কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে চেন্নাইয়ের ১-০ গোলে জিতে লিগ তালিকায় পাঁচ নম্বরে উঠে এল। পাঁচ ম্যাচে চতুর্থ হারের পর কলকাতার দল নেমে গেল দশে। হিরো আইএসএলে প্রথম এই দুই দলের ম্যাচে ফয়সালা হল এবং তা গেল চেন্নাইয়ানের পক্ষেই। যুবভারতীতে নেমে এর আগে এটিকে মোহনবাগানকেও হারিয়েছে তারা। এ বার কলকাতার অপর দলের কাছ থেকেও তিন পয়েন্ট ছিনিয়ে নিল চেন্নাইন এফসি।

এ দিন চেন্নাইনের দীর্ঘদেহী ইরানি ডিফেন্ডার ভাফা হাখামানেশির গোলে জয় পায় চেন্নাই। দ্বিতীয়ার্ধে ৬৯ মিনিটের মাথায় কর্নার থেকে দুর্দান্ত হেড করে গোল করে দলকে জয় এনে দেওয়ার পরেই অবশ্য ম্যাচের দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছেড়ে চলে যান তিনি। তবে ইস্টবেঙ্গল এফসি-র ডিফেন্ডার সার্থক গলুইও দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ায় ম্যাচের শেষ কুড়ি মিনিট দুই দলকেই দশ জনে খেলতে হয়।

এ দিন দুই দলের মধ্যেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলেও বল পজেশনের লড়াইয়ে অনেকটা এগিয়ে (৬০-৪০) থাকে চেন্নাইয়ান এফসি। তবে সুযোগ তৈরির দিক থেকে ইস্টবেঙ্গলই এগিয়ে ছিল। ভিপি সুহের ও ক্লেটন সিলভা যে দুটি গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন, তা সমর্থকদের হতাশায় ডুবিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। ডার্বির প্রথম একাদশকেই এ দিন খেলার জন্য বেছে নেন ইস্টবেঙ্গল এফসি-র কোচ স্টিফেন কনস্টান্টাইন। তবে ডার্বিতে ভিলেন হয়ে ওঠা গোলকিপার কমলজিৎকে অধিনায়কের ব্যান্ড দিয়ে তাঁকে মানসিক ভাবে কিছুটা চাঙ্গা করার চেষ্টা করেন কোচ। শুরু থেকেই তারা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠার চেষ্টা করে। দু’মিনিটের মাথাতেই বক্সের মধ্যে গোলের সামনে ফাঁকায় বল পেয়ে যান জন ও’ডোহার্টি। কিন্তু প্রায় ৪৫ ডিগ্রি কোণ থেকে নিজে গোলে শট নেবেন, না কাউকে দেবেন, এই দোনোমনা করতে গিয়ে সুযোগটা হাতছাড়া করেন।

২১ মিনিটের মাথায় গোলের যে সুবর্ণ সুযোগটি পান ভিপি সুহের, তা আসে মাঝমাঠ থেকেই। ও’ডোহার্টির পা থেকে এমন একটা জায়গায় বল পান সুহের, যেখানে তাঁকে আটকানোর কেউ ছিল না। বল নিয়ে যখন বক্সে ঢুকে পড়েন তিনি, তখন সামনে গোলকিপার দেবজিৎ মজুমদার ছাড়া কেউ ছিলেন না। তাঁর বাঁ দিক দিয়ে সুহের বল গোলে রাখার চেষ্টা করলেও তা দ্বিতীয় পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। এমন সুবর্ণ সুযোগ বড় একটা পাওয়া যায় না।

এই ঘটনার তিন মিনিট পরেই পেশীতে টান ধরায় মাঠের বাইরে যেতে বাধ্য হন চেন্নাইনের বাঙালি ডিফেন্ডার নারায়ণ দাস। তাঁর জায়গায় নামেন আকাশ সাঙ্গওয়ান। তবে এই ঘটনার ফলে কিছুটা হলেও দুর্বল হয়ে পড়ে চেন্নাইনের রক্ষণ। এই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে দু’বার ডানদিক দিয়ে সুহের আক্রমণ তৈরির চেষ্টা করলেও ফিনিশিংয়ের দুর্বলতায় তা নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য অবশ্য চেন্নাইনের রক্ষণেরও কৃতিত্ব প্রাপ্য। এ ভাবেই ফের গোলের সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন ক্লেটন সিলভাও।

গোল করে দলকে এগিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও গোলের পরেই লাল কার্ড দেখে দলকে পিছিয়েও দেন ভাফা। গোল করার পর জার্সি তুলে তাঁর উল্লাসের কারণে ম্যাচের দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে তাঁকে মাঠ ছাড়তে হয়। অর্থাৎ ৭০ মিনিটের পর থেকেই দশজনে খেলা শুরু করে চেন্নাইন এফসি। এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগাতে সুহেরের জায়গায় মোবাশির রহমান ও গঞ্জালেজের জায়গায় এলিয়ান্দ্রোকে নামায় লাল-হলুদ শিবির। একই সঙ্গে রহিমকে বসিয়ে নিনথোঙবা মিতেই ও প্রশান্তের জায়গায় সৌরভ দাসকে নামান চেন্নাইন কোচ থমাস ব্রদারিচ।

কিন্তু ৭৫ মিনিটের মাথায় অনিরুদ্ধ থাপাকে বল ছাড়া কনুই দিয়ে আঘাত করার জন্য ম্যাচের দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় লাল-হলুদ ডিফেন্ডার সার্থক গলুইকে। অর্থাৎ মাঠে ফুটবলারদের সংখ্যার দিক থেকে পাঁচ মিনিটের বেশি এগিয়ে থাকতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। ৭৫ মিনিটের পর থেকে দুই দলই দশজনে খেলতে শুরু করে।

এক গোলে পিছিয়ে থাকলেও শেষ ১৫ মিনিটে যে আক্রমণগুলি করে ইস্টবেঙ্গল এফসি, সেগুলি কার্যত ছিল নির্বিষ। ক্লান্তি এবং হাল ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা ফুটে ওঠে তাদের পারফরম্যান্সে। শেষে পাঁচ মিনিটের বাড়তি সময় দেন রেফারি। এই সময়ও কাজে লাগাতে পারেনি স্টিফেন কনস্টান্টাইনের দল।

ইস্টবেঙ্গল দল: কমলজিৎ সিং (গোল) (অধি), সার্থক গলুই, লালুচুঙনুঙ্গা, ইভান গঞ্জালেজ (এলিয়ান্দ্রো), জেরি লালরিনজুয়ালা, চ্যারিস কিরিয়াকু, জর্ডন ও’ডোহার্টি, ভিপি সুহের (মোবাশির রহমান), নাওরেম মহেশ সিং (হীমাংশু জাঙরা), ক্লেটন সিলভা, সেম্বয় হাওকিপ (অনিকেত যাদব)।

(লেখা ও ছবি আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: FacebookTwitterGoogle