আইএসএল ২০২০-২১, এসসি ইস্টবেঙ্গল বনাম এটিকে মোহনবাগান ম্যাচ

Foreigners Of ISL 2022-23

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: আইএসএল ২০২০-২১, এসসি ইস্টবেঙ্গল বনাম এটিকে মোহনবাগান ম্যাচ দিয়ে মরসুম শুরু করে দিল লাল-হলুদ ব্রিগেড। ডার্বি দিয়ে মরসুম শুরু একটা অনবদ্য বিষয় তো বটেই। সবুজ-মেরুন ব্রিগেড অবশ্য কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে আইএসএল শুরু করেছে জয় দিয়েই। দুই দলের সামনেই নতুন টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রমান করার লক্ষ্য। আইএসএল-এর প্রথম ডার্বিতে বাজিমাত করে গেল মোহনবাগানই। প্রথমার্ধে দাপট দেখাল ইস্টবেঙ্গল আর দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচ ছিনিয়ে নিল মোহনবাগান। মোহনবাগান ২-০ গোলে জিতে নিল ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে। প্রথম আইএসএল-এর কলকাতা ডার্বি লেখা থাকল মোহনবাগানের নামে। দুই গোলদাতা রয় কৃষ্ণা ও মনভীর সিং।

প্রথমার্ধের খেলা

শুরু থেকেই নিজেদের জাত চেনাতে শুরু করে দিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। ফওলারের কোচিংয়ে দারুণ পাসিং ফুটবলের নজির দিয়েই আইএসএল শুরু করল এসসি ইস্টবেঙ্গল। পিছিয়ে ছিল না এটিকে মোহনবাগানও। প্রথম থেকেই আক্রমণে উঠতে শুরু করে দিয়েছিলের প্রবীর-প্রীতমরা। এ দিন প্রীতমের অধিনায়কত্বে আইএসএল-এর প্রথম কলকাতা ডার্বি খেলতে নেমেছিল মোহনবাগান।

ম্যাচ শুরুর দু’মিনিটের মধ্যেই কর্নার তুলে নিয়েছিল মোহনবাগান। কিন্তু তা থেকে গোল তুলে নিতে পারেনি। সাত মিনিটে মোহনবাগানের রক্ষণ চিরে ঢুকে পড়েছিল ইস্টবেঙ্গলের পিলকিংটন। বক্সের মধ্যেই সেই বল ক্লিয়ার করেন প্রীতম। পেনাল্টির হালকা দাবি উঠলেও রেফারি গুরুত্ব দেননি।

১১ মিনিটে আবার ফ্রি কিক তুলে নেন এটিকে এমবি। এবারও তা থেকে গোলের মুখ খুলতে পারেনি। ১৫ মিনিটে আবার আক্রমণে ওঠে ইস্টবেঙ্গল। বাঁ দিক থেকেই সুচন্দ্রা সিংকে লক্ষ্য করে বল উড়ে এসেছিল কিন্তু গোল কিকের বিনিময়ে তা বাঁচিয়ে দেন বাগান গোলকিপার অরিন্দম ভট্টাচার্য। ১৯ মিনিটে আবারও ইস্টবেঙ্গলের গোলমুখি আক্রমণ। মাঘোমা থেকে বল পেয়ে গোলের লক্ষ্যে উঠে গিয়েছিলেন পিলকিংটন। কিন্তু গোলের নিচে এবারও তৈরি ছিলেন অরিন্দম।

এদিন পুরোটাই অফ কালার ছিলেন ইস্টবেঙ্গল স্ট্রাইকার বলবন্ত সিং। না হলে তিনি যে সুযোগ পেয়েছিলেন তা থেকে গোল না হওয়াটাই অস্বাভাবিক। ২৪ মিনিটে আবারও কর্নার তুলে নেয় মোহনবাগান। ডানদিক থেকে ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে দেখা যায় প্রবীর দাসকে।২৯ মিনিটে আবারও গোলের সুযোগ চলে আসে ইস্টবেঙ্গলের সামনে। বাঁ দিক থেকে নারায়ন দাসের ক্রস পেয়ে গিয়েছিলেন মাঘোমা। কিন্তু তাঁর হেড বাইরে চলে যায়।

আক্রমণে পিছিয়ে ছিল না মোহনবাগানও। ৩৬ মিনিটে হার্নান্ডেজের গোলমুখি শট দারুণ দক্ষতার সঙ্গে বাঁচিয়ে দেন ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার দেবজিৎ মজুমদার। পুরো প্রথমার্ধ জুড়ে ইস্টবেঙ্গলেরই দাপট ছিল বেশি। ৩৮ মিনিটে বলবন্তের সামনে আবারও সুযোগ চলে এসেছিল। শেষ পর্যন্ত গোলের মুখ খুলতে পারেনি। প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্যভাবেই।

(খেলার জগতের আরও খবর জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)

আইএসএল ২০২০-২১, এসসি ইস্টবেঙ্গল বনাম এটিকে মোহনবাগান ম্যাচ

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন) 

দ্বিতীয়ার্ধের খেলা

দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হয় প্রায় মোহনবাগানের গোল দিয়েই। আক্রমণে বেশি উঠলে গোলের মুখ প্রথমে খুলল মোহনবাগানই। ৪৯ মিনিটে সেই রয় কৃষ্ণা এটিকের ত্রাতা। আক্রমণটা তৈরি করেছিলেন জয়েশ রানেই। বাঁ দিক থেকে সেই বল তিনি পাস দেন জেভিয়ার হার্নান্ডেজকে। তার থেকেই বল পেয়ে যান রয় কৃষ্ণা। বক্সের প্রায় বাইরে থেকে জোরালো শটে দেবজিতকে মাত দেন তিনি। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় মোহনবাগান।

৫৯ মিনিটে আবারও সেই বলবন্ত। গোলের বল আকাশে উড়িয়ে দেন। ৬৩ মিনিটেও গোলের সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। দ্বিতীয়ার্ধে মনভীরকে তুলে উইলিয়ামসনকে নামায় মোহনবাগান। বলবন্তের জায়গায় ইস্টবেঙ্গলে আসেন মহম্মদ রফিক। তাতেও ইস্টবেঙ্গলের ভাগ্য ফেরেনি। আক্রমণ দ্বিতীয়ার্ধেও চলে কিন্তু গোলের মুখ খুলতে পারেনি।

৬৮ মিনিটে পিলকিংটন ডান দিক থেকে আক্রমণ তুলে আনার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁর ক্রস লক্ষ্য করে জায়গায় পৌঁছতে পারেনি কোনও ইস্টবেঙ্গল প্লেয়ার। সহজেই সেই বল ক্লিয়ার করে দেয় মোহনবাগান ডিফেন্স। পুরো ম্যাচে দারুণ খেলল মোহনবাগান রক্ষণ। দ্বিতীয়ার্ধে ইস্টবেঙ্গলকে চেনা ছন্দে দেখা যায়নি। দাপট দেখিয়ে যায় মোহনবাগান শেষ পর্যন্ত।

৮৪ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচে ফেরার সব আশা শেষ করে দেয় মোহনবাগানের দ্বিতীয় গোল। দুরন্ত গোল করে যান মনভীর। নিজেই তৈরি করেন গোলের বল আর সেই বল টেনে নিয়ে গিয়ে ইস্টবেঙ্গলের জালে জরান তিনি। কেটে যায় ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণ। এবং তাঁর জোরাল শট আটাকেত পারেনি দেবজিৎ।

দ্বিতীয় গোলের পরই রয় কৃষ্ণাকে তুলে সুমিত রাঠিকে নামান হাবাস। ৮৪ মিনিটে দ্বিতীয় গোল হজম করে আর ম্যাচে ফেরার জায়গায় ছিল না ইস্টবেঙ্গল। হেরেই আইএসএল শুরু করতে হল ইস্টবেঙ্গলকে তাও আবার মোহনবাগানের বিরুদ্ধে। মোহনবাগান পর পর দুই ম্যাচ জিতে আইএসএল-এ ভাল জায়গায় চলে গেল। ইস্টবেঙ্গলের সামনে এ বার ঘুরে দাঁড়ানোর পালা।