আইএসএল ২০২০-২১, এটিকে মোহনবাগান বনাম এফসি গোয়া ম্যাচ

আইএসএল ২০২০-২১, এটিকে মোহনবাগান বনাম জামশেদপুর এফসিগোলের পর রয় কৃষ্ণা। ছবি—এটিকে মোহনবাগানের টুইটার থেকে।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: আইএসএল ২০২০-২১, এটিকে মোহনবাগান বনাম এফসি গোয়া ম্যাচে নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে পেনাল্টি থেকে গোল করে এটিকে মোহনবাগানকে হিরো আইএসএল ৭-এর চতুর্থ জয় এনে দিলেন তাদের সেরা তারকা রয় কৃষ্ণা। এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে এই প্রথম গোল পেলেন ফিজিয়ান তারকা। আর এই জয়ের ফলে এটিকে মোহনবাগান লিগ তালিকায় উঠে এল দুই নম্বরে। গত দুই ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট খোয়ানোয় যে ক্ষতি হয়েছিল তাদের, সেই ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে গেল এই জয়ে। ছয় ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট তাদের। অন্য দিকে ছয় ম্যাচে আট পয়েন্ট পেয়ে লিগ টেবলের ষষ্ঠ স্থানে গতবারে লিগসেরারা।

বুধবার ফতোরদা স্টেডিয়ামে পাঁচটি পরিবর্তন করে দল নামান এটিকে মোহনবাগান কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। এ দিন প্রথম এগারোয় ফিরে আসেন ডেভিড উইলিায়ামস ও তিরি। উইলিয়ামস দলে থাকা সত্ত্বেও প্রথম এগারোয় মনবীর সিংকে রাখা হয়। কিন্তু দুজনই এ দিন পিছন থেকে খেলেন কোচের সাজানো ৫-৪-১ ফর্মেশনকে বাস্তব রূপ দেওয়ার জন্য।

তবে শুরু থেকে কোনও দলই আগ্রাসী আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করেনি। পরষ্পরকে মেপে নেওয়ার জ্ন্যই সম্ভবত বাড়তি ঝুঁকি নেওয়ার চেষ্টা করেনি তারা। এটিকে মোহনবাগানকে এ দিন পাঁচ ডিফেন্ডার নিয়ে খেলতে দেখে অনেকে অবাক হতে  পারেন। গত দুই ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট খোয়া যাওয়ায় সম্ভবত হাবাসের এই ভাবনা। যার ফলে ২৮ মিনিটে গোলের সামনে রয় কৃষ্ণার একটি সুযোগ ছাড়া প্রথম তিরিশ মিনিটে আর তেমন কোনও বিপজ্জনক মুভ দেখা যায়নি। বিপক্ষের ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে রয়ের শট গোলের বাইরে দিয়ে চলে যায়। ৩৯তম মিনিটে ডেভিড উইলিয়ামস বক্সের মাথা থেকে একটি জোরালো শট নিলে তা পোস্টে লেগে ফিরে আসে।

সবুজ-মেরুন বাহিনীর কাউন্টার অ্যাটাকে ওঠার কোনও প্রবণতাই তেমন ভাবে দেখা যায়নি প্রথমার্ধে। এফসি গোয়া স্কোয়ার পাস, ব্যাক পাস করে তাদের আক্রমণে উঠতে বাধ্য করার চেষ্টা করেও বিপক্ষকে টেনে আনতে পারেনি। এতটা সাবধানে খেলতে ইদানিং এটিকে মোহনাবাগানকে দেখা যায়নি বোধহয়।

দ্বিতীয়ার্ধে হাবাসের দলকে কিছুটা চনমনে লাগলেও প্রতি আক্রমণে উঠতে দেখা যাচ্ছিল তাদের বিপক্ষকে। ৫৬ মিনিটের মাথায় বিপক্ষের বক্সের ডান দিক থেকে ক্রসে জোরালো হেড করে প্রায় গোল করেই দিয়েছিলেন আলবার্তো নগুয়েরা। কিন্তু অরিন্দমের হাতে তা জমা হয়ে যায়। প্রথমার্ধের চেয়ে দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলেরই গোল-প্রবণতা বেশি দেখা যায়। দুই উইং দিয়ে ওঠার চেষ্টা বেশিই করছিল এফসি গোয়া। কিন্তু এটিকে মোহনবাগানের উইং প্লে এ দিন সে ভাবে দেখাই যায়নি বলা যায়। প্রবীর দাস মাঠে না থাকায় এই জায়গাটায় পিছিয়েই ছিল তারা।

৬৬ মিনিটের মাথায় জয়েশ রানের জায়গায় এডু গার্সিয়াকে নামান হাবাস। অবশ্যই আক্রমণে ধার বাড়ানোর জন্য। কিন্তু তাতেও খুব একটা ধারালো হয়ে উঠতে দেখা যায়নি তাদের। বরং বেশ কয়েকবার বিপক্ষের অঞ্চলে হানা দিতে দেখা যায় এফসি গোয়াকে। বল পজেশন বাড়িয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণও করতে দেখায় যায় তাদের। কিন্তু আসল কাজটা করতে পারেনি কোনও দলই। ৭৯ মিনিটে জর্জ মেন্ডোজা বল নিয়ে ঢুকেই পড়েছিলেন। কিন্তু গোলকিপার অরিন্দমের তৎপরতায় সে যাত্রায় বেঁচে যায় এটিকে মোহনবাগান।

শেষ মুহূর্তে একটি গোল পাওয়ার জন্য ৮১ মিনিটের মাথায় মনবীরের জায়গায় প্রবীর দাসকে নামান হাবাস। তবে সেই পরিবর্তনের জন্য নয়, এটিকে মোহনবাগান বহু আকাঙ্খিত গোলটি পেয়ে যায় সেই রয় কৃষ্ণার জন্যই। ৮৫ মিনিটের মাথায় গোলমুখী রয় বক্সের মধ্যে অন্যায় ভাবে বাধা পাওয়ায় পেনাল্টি পেয়ে যান এবং পেনাল্টি থেকে গোল করতে কোনও অসুবিধা হয়নি তাঁর।

গোল হজম করার পরে তা শোধ করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে এফসি গোয়া। ৯০ মিনিটের মাথায় বিপদ থেকে উদ্ধারও করেন সন্দেশ ঝিঙ্গন। গোল যে খাবেন না তাঁরা, সেই সংকল্প নিয়েই ফেলেছিলেন সবুজ-মেরুন খেলোয়াড়রা। ইনজুরি টাইমে ডেভিডের জায়গায় নামেন শেখ সাহিল। কিন্তু তাতে অবশ্য ব্যবধান বাড়াতে পারেনি তারা। উল্টে ক্রমশ চাপ বাড়াতে থাকে এফসি গোয়া। যা সামলাতে এটিকে মোহনবাগানের বেশিরভাগ ফুটবলারই চলে এসেছিলেন গোলের সামনে। তবু বাড়তি সময়ের একেবারে শেষ মিনিটে সেভিয়ার গামার দূরপাল্লার শট দুর্দান্ত সেভ করে দলকে বাঁচান অরিন্দম, যা তিনি আগেও বহুবার করেছেন।

এটিকে মোহনবাগান দল: অরিন্দম ভট্টাচার্য (গোল), প্রীতম কোটাল, সন্দেশ ঝিঙ্গন, তিরি, শুভাশিস বসু, কার্ল ম্যাকহিউ, প্রণয় হালদার, জয়েশ রানে (এডু গার্সিয়া), মনবীর সিং (প্রবীর দাস), ডেভিড উইলিয়ামস (শেখ সাহিল), রয় কৃষ্ণা

(লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)

(খেলার জগতের আরও খবর জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)