ক্রিকেটার হয়েই পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন রিঙ্কু

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় টি-টোয়েন্টি লিগ নয় শুধুমাত্র তার গ্ল্যামার, প্লেয়ার ডুয়েলস, প্যাকড স্টেডিয়াম এবং ক্রিকেটের সমৃদ্ধির জন্যই বরং এটি যেই হোক না কেন প্রত্যেকের জন্য একটি সমান মঞ্চ দেয় নিজেকে প্রমাণ করার, তাদের ব্যক্তিজীবন যাই হোক না কেন। কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) ব্যাটার রিঙ্কু সিংয়ের গল্পও ঠিক তেমনই। আইপিএল কীভাবে কাউকে দারিদ্র্যের চরমসীমা থেকে সুপারস্টারডমে পৌঁছে দিতে পারে রিঙ্কু সিং তার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। আইপিএল ২০২২ মরসুমে রিঙ্কু ব্যাটে কী করতে পারে তার একটা আভাস পাওয়া গিয়েছিল। ২০২৩ মরসুম বিশ্বকে তার সম্ভাব্য সক্ষমতার একটি সত্য উদাহরণ দিয়েছে।

২৫ বছরের রিঙ্কু উঠে এসেছে খুবই দুস্থ পরিবার থেকে। তাঁকে এবং তার বাবা-মাকে যে কঠিন জীবনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল সেটা তাঁদের জীবনের সৌন্দর্যকে নষ্ট করে দেয়নি। তাঁর মুখে সবসময় যে বড় হাসিটা লেগে থাকে তাএক মুহূর্তের জন্যও হারিয়ে যায়নি।

তাঁর বাবা খানচাঁদ সিং একজন গ্যাস সিলিন্ডার ডেলিভারি ম্যান যিনি তাঁর সাইকেলে করে সিলিন্ডার নিয়ে যেতেন এবং তাঁর বড় ছেলের সাহায্যে ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতেন। তিনি এবং তার স্ত্রী বীনা এখনও একটি গ্যাস সিলিন্ডার গোডাউনের কাছে দু’কামরার একটি জীর্ণ ঘরে বাস করে।

এমনকি একটা সময় পরিবারের টানাপড়েনের মধ্যে পড়ে রিঙ্কুর কাছেও ঝাড়ুদারের কাজের অফার এসেছিল। তাঁর বড় ভাই সে সব করতেন। কিন্তু, লোকটি রিঙ্কুর বিশ্বাস ছিল তাঁর মধ্যে ক্রিকেটের সম্ভাবনা রয়েছে এবং খেলা দিয়েই তিনি দারিদ্রতাকে জয় করতে পারবেন।

রিঙ্কু বলছেন, “যখন আমি সবে শুরু করছিলাম এবং তখনও সঠিক ক্রিকেট খেলতে পারিনি, তখন আমাকে একটি চাকরির জন্য আমার ভাইয়ের সঙ্গে যোগ দিতে বলা হয়েছিল। একটি কোচিং সেন্টারে ঝাড়ু দেওয়ার কাজ পেয়েছিলাম। কিন্তু আমি রাজি হইনি কারণ আমার পছন্দ ছিল না কাজটি।’’কেকেআর-এর তরফে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে বলতে শোনা যায় রিঙ্কুকে।

“আমি সবাইকে বলেছিলাম যে আমি ক্রিকেট খেলব এবং আমি সেখানেই আটকে আছি। আমার শিক্ষাগত যোগ্যতাও ছিল না কিন্তু আমি সবসময় বিশ্বাস করতাম ক্রিকেট আমাকে জায়গা দেবে। আমার কাছে অন্য কোনও বিকল্প ছিল না তাই আমি আমার সমস্ত মনোযোগ ক্রিকেটকেই দিয়েছিলাম। আমি সত্যিই প্রচুর পরিশ্রম করেছি এবং সেগুলোই এখন ফল দিচ্ছে,” তিনি যোগ করেছেন।

রবিবার গতবারের চ্যাম্পিয়ন গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধে কেকেআর-এর ঐতিহাসিক জয়ের পরে বলছিলেন, তাঁর জন্য প্রতি পদক্ষেপে প্রতিকূলতার পাহাড় ছিল কিন্তু তিনি আশা ছাড়েননি এবং শেষ ৫ বলে ২৮ রান করা যায় সেই বিশ্বাস ছিল।

মাঠের পরিস্থিতি তাঁর জীবনের থেকে খুব একটা আলাদা ছিল না যেখানে তাঁর পেশাদার ক্রিকেটার হওয়ার সম্ভাবনা ছিল খুবই কম। কিন্তু, গুজরাটের বিরুদ্ধে খেলার মতোই, সদা হাস্যোজ্জ্বল রিঙ্কু সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে নিজের সেরাটা দিয়ে চলেছেন এবং ইতিমধ্যেই তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন যা এখনও পর্যন্ত তিনি পেয়েছেন তার থেকে আরও অনেকবেশি কিছু পাওয়ার পথে রয়েছেন তিনি।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: FacebookTwitterGoogle