আইপিএল ২০২০: সেমিফাইনাল আলাদা লড়াই তাই অতীত ভুলে সুনীলদের সমীহ করছেন হাবাসের

আইপিএল ২০২০এটিকে কোচ অ্যান্তোনিও হাবাস

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: আইপিএল ২০২০ এসে দাঁড়িয়েছে শেষ পর্যায়ে। এখন সামনে সেমিফাইনাল। চলতি হিরো আইএসএলে যাদের বিরুদ্ধে দু’টোর একটা ম্যাচও হারেননি আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের দলের ছেলেরা, সেই বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধেই সেমিফাইনালের লড়াইয়ে তারা নামতে চলেছে রবিবার, কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে। তবু বিপক্ষকে সমীহ করায় এতটুকু ঘাটতি নেই এটিকে এফসি-র স্প্যানিশ কোচের। বেঙ্গালুরু যেহেতু গতবারের চ্যাম্পিয়ন ও সুনীল ছেত্রীদের দলকে যথেষ্ট ব্যালান্সড বলে মনে করেন হাবাস, তাই তিনি মনে করছেন, রবিবার তাঁদের সেমিফাইনালের প্রথম লেগের ম্যাচে কৌশলের লড়াই উঠবে তুঙ্গে।

কলকাতার দল যেমন ভারসাম্যযুক্ত। আক্রমণ, মাঝমাঠ, রক্ষণ, সবের মধ্যেই বোঝাপড়া অসাধারণ, বেঙ্গালুরু তেমনই দল বলে মনে করেন কোচ। শনিবার বিকেলে বেঙ্গালুরু উড়ে যাচ্ছেন। তার আগে শুক্রবার কলকাতার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমি বেঙ্গালুরুকে সেরা ফর্মেই দেখতে চাই রবিবার। আশা করি ওরা ওদের সেরাটা উজাড় করে দেবে আমাদের বিরুদ্ধে। তবে সেই সেরা বেঙ্গালুরুর জন্য আমরা তৈরি। দুই দলেই প্রতিযোগিতার মনোভাব যথেষ্ট, সাজানো গোছানো, আসল ফুটবল খেলে দুই দলই। সবচেয়ে বড় কথা দুই দলই সবচেয়ে কম গোল খেয়েছি। তাই আমি এই ম্যাচে কৌশলের লড়াই আশা করছি। সুতরাং আগে কী হয়েছে না হয়েছে, সে সব ভুলে যাওয়াই ভাল।”


এই সংক্রান্ত আরও খবর পড়তে ক্লিক করুন

লিগ পর্বে প্রথম ম্যাচে বেঙ্গালুরুকে ঘরের মাঠে ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছিল কলকাতা। ৮৫ মিনিট পর্যন্ত দুই গোলে পিছিয়ে থেকে ২-২ গোলে তারা ড্র করে। তবু হাবাস বলছেন, “সেমিফাইনালে ওদের হারাতে গেলে আমাদের একশো শতাংশ দিতে হবে।” এর ব্যাখ্যাা দিয়ে তিনি বলেন, “ওরা গতবারের চ্যাম্পিয়ন। সমীহ তো করতেই হবে ওদের। এ বারের সেমিফাইনালের পরে কী হবে, কারা নতুন চ্যাম্পিয়ন হবে, তা অবশ্য জানি না। তবে যেহেতু ওরা এখনও পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন ওদের আলাদা নজরে দেখতেই হবে।”

লিগের শেষ পর্যায়ে অবশ্য এটিকে কিছুটা থমকে গিয়েছিল। এফসি গোয়ার-র বিরুদ্ধে হেরে লিগে এক নম্বরে থেকে শেষ করে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সরাসরি যোগ্যতা অর্জন করার সুযোগ হাতছাড়া করল তারা। চেন্নাইন এফসি-র কাছেও ঘরের মাঠে ৩-১ গোলে হার মানে তারা। শেষে বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে ৮৫ মিনিট পর্যন্ত পিছিয়ে থেকে চার মিনিটে পরপর জোড়া গোল দিয়ে ড্র করে। নিজেদের সেরা ছন্দে ফিরিয়ে আনতে পারবে তো এটিকে? এই প্রশ্ন স্বাভাবিক ভাবেই উঠছে।

এটিকে কোচ ভাল সময়ের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, “এই পর্যন্ত আসতে গিয়ে আমরা মাত্র চারটি ম্যাচ হেরেছি। আমরাই সেই দল, যারা লিগে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে এক নম্বরে থেকেছি। সমস্যাটা হল, শেষের দিকে গোয়া ব্যর্থ হয়নি আর চেন্নাইনের বিরুদ্ধে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। তবে এখন নিজেদের সম্পুর্ণ নতুন দল বলে মনে রাখতে হবে। নতুন খেলোয়াড়, নতুন উদ্দেশ্য। এখন আমাদের দলের ভারসাম্য একেবারে নিখুঁত জায়গায় রয়েছে। এখন আমাদের সেমিফাইনালে মনোনিবেশ করতে হবে। তবে রেফারিংটা আরও উন্নত হওয়া দরকার। এর আগে কয়েকটা ম্যাচে খুব বাজে বাজে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রেফারিরা। এ বার যেন আর নিম্নমানের রেফারিং দেখতে না হয়।”

সেমিফাইনালে বিপক্ষে থাকবেন ভারতের এক নম্বর ফুটবল তারকা সুনীল ছেত্রী। তাঁর সম্পর্কে হাবাস বলেন, “ও তো এ দেশের ফুটবলের কিংবদন্তি। ভাল ফুটবলার। শুধু বেঙ্গালুরু এফসি নয়, ভারতীয় ফুটবল দলেরও অধিনায়ক তিনি।”

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় কোচের পাশে ছিলেন এটিকে দলের স্প্যানিশ মিডফিল্ডার হাভিয়ে হার্নান্ডেজ। আট নতুন খেলোয়াড়ে নামা বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে ৮৫ মিনিট পর্যন্ত দুই গোলে পিছিয়ে থাকা ও সেই বেঙ্গালুরুর সেমিফাইনালে পূর্নশক্তি নিয়ে নামা প্রসঙ্গে নির্ভরযোগ্য এই মিডফিল্ডার বলেন, “প্রতি ম্যাচই আলাদা হয়। প্রতি ম্যাচ কঠিনও। তাই কিছু ম্যাচে হয়তো হেরেছি আমরা। ওদের কৌশলের জন্য বেঙ্গালুরু বেশি গোল খায় না। এই ধরনের ম্যাচে, মানে সেমিফাইনালে (যেখানে অ্যাওয়ে গোলের নিয়ম থাকছে), বাইরের মাঠে খেলাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাইরের মাঠে যথাসম্ভব গোল করে রাখা জরুরি। বেশি গোল করে ম্যাচ জেতাই হবে আমাদের লক্ষ্য।”

ভারতীয় দলের শিবিরে এটিকের চার খেলোয়াড় প্রবীর দাস, প্রীতম কোটাল, মাইকেল সুসাইরাজ ও সুমিত রাঠির ডাক পাওয়ায় খুশি হাবাস। কিন্তু তাঁর দলের আরও কয়েকজনকে, বিশেষ করে গোলকিপার অরিন্দম ভট্টাচার্যের ডাক না পাওয়া নিয়ে তিনি বলেন, “এটা ভারতীয় দলের কোচের সিদ্ধান্ত। এই নিয়ে আমি কিছু বলব না।”

(খবর ও ছবি সৌজন্যে আইএসএল)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)