করোনাভাইরাসের প্রভাব ভারতীয় খেলায়, মাঠের আবহ থেকে বঞ্চিত দর্শকরা

করোনাভাইরাসের প্রভাব ভারতীয় খেলায়

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: করোনাভাইরাসের প্রভাব ভারতীয় খেলায় ঠিক কতটা তা টের পাওয়া গেল বৃহস্পতিবার, যখন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক তাদের বার্তা দেশের সবগুলো ক্রীড়া সংস্থার কাছে পাঠিয়ে দিল। এতদিন পর্যন্ত সংশয় ছিল, এ দিন তা নিশ্চিত হয়ে গেল। ইভেন্ট হতেই পারে কিন্তু তা হবে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে। করোনোভাইরাসের কারণে শুরু থেকেই জনবহুল স্থানে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। বেশি মানুষের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকাটা নিজেকে বাঁচানোর একটা বড় পদক্ষেপ। আর ক্রীড়া ইভেন্ট মানেই স্টেডিয়াম ভর্তি মানুষ। যেখান থেকে খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে করোনাভাইরাস। আর সে কারণেই ভারতে আয়োজিত বিভিন্ন খেলা জোর ধাক্কা খেল।

১৪ মার্চ গোয়ায় হতে চলেছে ইন্ডিয়ান সুপার লিগ তথা আইএসএল-এর ফাইনাল। ফাইনালে মুখোমুখি এটিকে এফসি ও চেন্নাইয়ান এফসি। কিন্তু মাঠে বসে দেখা যাবে না সেই খেলা। এমনটাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আয়োজকদের তরফে। ক্লোজড ডোর ফাইনাল ম্যাচ খেলতে চলেছে দুই দল।


(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)

এ তো গেল আইএসএল। যা শেষ পর্যায়ে এসে শেষ ম্যাচে ধাক্কা খেল। কিন্তু ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের কী হবে, এখন এটাই লাখ টাকার প্রশ্ন। ২৯ মার্চ থেকে শুরু হওয়ার কথা আইপিএল ২০২০। কিন্তু তার আকাশে কালো মেঘ। এক তো ভর্তি স্টেডিয়ামে খেলা করা বাতিল হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। অথবা স্থগিত করতে হবে ইভেন্ট। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও একটি বিষয়।

এই আইপিএল-এ আট ফ্র্যাঞ্চাইজি মিলে মোট ৬০ জন বিদেশি প্লেয়ার রয়েছেন। যাঁরা কেউই ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ভারতের মাটিতে পা রাখতে পারবেন না। ইতিমধ্যেই ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সব ভিসা বাতিল করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। যার ফলে আইপিএল চালাতে হলে ক্লোজড ডোরের সঙ্গে সঙ্গে বিদেশিহীনভাবেই খেলতে হবে দলগুলিকে।

১৪ মার্চ আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের মিটিংয়ে এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আইপিএল-এর প্রথম ম্যাচ হওয়ার কথা মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ও চেন্নই সুপার কিংসের মধ্যে। রাজ্য সরকারের তরফে ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে ক্লোজড ডোর ইভেন্টের।

মুম্বইতে চলা রোড সেফটি টুর্নামেন্টে লিজেন্ডদের ম্যাচও ক্লোজড ডোর করার সিদ্ধান্তে শীলমোহর পড়েছে। ১৪ মার্চ থেকে ফাইনাল পর্যন্ত সব ম্যাচ হবে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে। যেখানে সচিন, লারাদের দেখতে এতদিন ভির জমিয়েছিলেন সমর্থকরা।

এই মুহূর্তে ভারতকে তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজ খেলতে এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ম্যাচ ধর্মশালায় বৃষ্টির জন্য বাতিল হয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচ ক্লোজড ডোর হওয়ার সম্ভাবনাই রয়েছে।
বাংলা তথা ভারতীয় ফুটবলের জন্য সব থেকে বড় দুঃসংবাদ, এই মরসুমে আই লিগের শেষ ডার্বিও হবে ক্লোজড ডোর। এ ছাড়া লিগের বাকি সব ম্যাচই হবে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে। যদিও সর্ব ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। সব ক্লাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে স্কাইপি-র মাধ্যমে আলোচনায় বসবেন ফেডারেশনের কর্তারা শুক্রবার। তার পরই সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করে জানা যাবে।

ইতিমধ্যেই আগামী দু’সপ্তাহের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে লা লিগার ম্যাচ। ইতালি তথা জুভেন্টাস ডিফেন্ডার ড্যানিয়েল রুগানির শরীরের কোভিড-১৯ ভাইরা পাওয়া গিয়েছে। চিনের পর সব থেকে বেশি আক্রন্ত ইতালিই। তবে শীর্ষ স্থানীয় ফুটবলারদের মধ্যে এই প্রথম কারও শরীরে ভাইরাস পাওয়া গেল।

এদিকে, আতঙ্ক ছড়িয়েছে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের এক বার্তায়ও। এই মাঠেই কিছুদিন আগে হয়ে গিয়েছে মহিলা টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনাল। যেখানে ভাপতকে ৮৫ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু জানা গিয়েছে সেই ম্যাচে দর্শকাসনে ছিলেন এক করোনাভাইরাস আক্রান্ত একজন।

এ ছাড়া বাতিল হয়ে গিয়েছে,টেনিসের ফেড কাপ ফাইনাল বুদাপেস্টে। বাতিল হয়ে গিয়েছে ইন্ডিয়া ওপেন গলফ টুর্নামেন্ট। এর আগে এশিয়া কাপ থেকে নাম তুলে নিয়েছিল ভারতীয় তিরন্দাজি দল, স্থগিত হয়ে গিয়েছে আজলান শাহ হকি টুর্নামেন্ট, বাতিল হয়েছে ভারতীয় মহিলা হকি দলের চিন সফরও। আরও অনেক টুর্নামেন্ট যেগুলো থেকে অলিম্পিকের যোগ্যতা অর্জনের সুযোগ থাকছে সেগুলোকেই শেষ যোগ্যতা অর্জনের মঞ্চ হিসেবে দেখা হচ্ছে না।

এই সংক্রান্ত আরও খবর পড়তে ক্লিক করুন