ভারতীয় ফুটবলের ঐতিহাসিক জয় স্পেন ও জর্ডনে

ভারতীয় ফুটবলের ঐতিহাসিক জয়আর্জেন্তিনাকে হারানোর পর ভারতীয় ফুটবল দল। —নিজস্ব চিত্র।

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: ভারতীয় ফুটবলের ঐতিহাসিক জয় । ১০ জনে দুরন্ত জয়। তাও আবার আর্জেন্তিনার মতে দেশের বিরুদ্ধে। কটিফ কাপে তেমনটাই করে দেখিয়েছে ভারতীয় অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবল দল। কোচ ফ্লয়েড পিন্টো এই দিনটিকে ভারতীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ দিন হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। স্পেনে চলছে অনূর্ধ্ব-২০ কটিফ কাপ। এই ভারতীয় দলের আট জনই দেশের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ খেলেছেন। তাঁদের কাধে ভর করেই আর্জেন্তিনাকে হারাল ভারত।

ম্যাচ শুরুর চার মিনিটের মধ্যেই গোল করে ভারতকে এগিয়ে দিয়েছিলেন দীপক টাংড়ি। আর ৬৮ মিনিটে আনোয়ার আলির দুরন্ত ফ্রি-কিকে লেখা হল ভারতের জয়ের কাহিনী। পুরো ম্যাচেই দারুণ খেলল ভারত। প্রতিপক্ষকে ৯০ মিনিটই চাপে রেখেছিল ৪০ মিনিট ১০ জনে খেলেও। ৫০ মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন অনিকেত যাদব। তার পরও একইভাবে লড়াই চালিয়ে যান ভারতের ছেলেরা। ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার চার মিনিটের মাথায় ব্যবধান কমায় আর্জেন্তিনা। যদিও তা বিশেষ কাজে লাগেনি। ২-১ গোলে হারতেই হয় চ্যাম্পিয়ন দলকে।

এই আর্জেন্তিনা দলের কোচের দায়িত্বে রয়েছেন ২০০৬-এর বিশ্বকাপার লিওনেল স্কালোনি। আর্জেন্তিনার সেরা পাবলো আইমারও রয়েছেন এই দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে। পর পর দুই ম্যাচে হারের পর এই জয়ের নেপথ্যে কী ছিল বলতে গিয়েছে কোচ বলেন, ‘‘হারই আমাদের চাগিয়ে দিয়েছিল নতুন করে ভাবতে। বিশ্বকাপ রানার্স ভেনেজুয়েলার সঙ্গে ড্র আর আর্জেন্তিনার বিরুদ্ধে জয় প্রমাণ করে দিয়েছে আমাদের দলের গভীরতা কতটা। এই জয় আমাকে বিশ্বাস দিয়েছে আমরা সঠিক পথেই এগোচ্ছি।’’

বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত ম্যাচ, তাও আবার লিগের উদ্বোধনী খেলাই

যে দিন দাদারা আর্জেন্তিনাকে হারিয়ে ইতিহাস তৈরি করল সে দিনই অন্য দিকে তৈরি হল আরও এক ইতিহাস। জর্ডনের আম্মানে ভারতীয় অনূর্ধ্ব-১৬ দল হারিয়ে দিল এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন ইরাককে। খেলার ফল ১-০। এই ঐতিহাসিক জয় দেশের সব কোচদের উৎসর্গ করলেন অনূর্ধ্ব-১৬ জাতীয় দলের কোচ বিবিয়ানো ফার্নান্ডেজ। দেশের হয়ে একমাত্র গোলটি এল বুভেনেশের হেডে। কোনও ভারতীয় দলের এটাই ইরাকের বিরুদ্ধে প্রথম জয়।

অনূর্ধ্ব-১৬ দলকে কোচের শুভেচ্ছা ম্যাচ জেতার পর। —নিজস্ব চিত্র।

বিবিয়ানো বলেন, ‘‘আমি এই জয় আমার সব সতীর্থ কোচদের উৎসর্গ করছি। যারা আগে এই ছেলেদের ট্রেনিং দিয়েছে এআইএফএফ অ্যাকাডেমি ও জাতীয় দলে। আমরা নিজেদের উপর আস্থা রাখতে শুরু করেছি। প্রতিযোগিতা হোক বা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ যখন শেষ মুহূর্তের গোলে জয় আসে তখন সেই জয় সব সময়ই স্পেশ্য়াল হয়।’’ বিবিয়ানো ছেলেদের সব সময়ই লক্ষ্য স্থির রাখার নির্দেশ দিয়ে এসেছেন। আর সেখান থেকেই তৈরি হয়েছে ছেলেদের হাল না ছাড়া মানসিকতা।

দুই দলের এই ঐতিহাসিক জয়ে উৎসবের আবহ ফেডারেশনে। মনে করাই যেতে পারে তৈরি ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। যাঁরা একদিন জায়গা নেবে সুনীল ছেত্রী, গুরপ্রীতদের।