রাজার মুকুট, রাজার সাজ রাজার হাতে উঠল আজ

রূপসা ভট্টাচার্য: এবছরই হয়ত নামী কিছু ফুটবলারদের শেষ বিশ্বকাপ। তা নিয়েই এবারের বিশ্বকাপ প্রথম থেকেই ফুটবল্প্রেমীদের মধ্যে এক অন্যরকম উত্তেজনার কারণ ছিল। মেসি তাঁর শেষ বিশ্বকাপে অবশেষে স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন কিনা তার জন্যই গোটা বিশ্বের নজর ছিল তাঁর দিকে। অন্যদিকে তরুণ ফুটবলার এম্বাপে কি আবারও দেশকে ট্রফি এনে দেবে তা দেখতেই রবিবার লুসাইল স্টেডিয়ামে ভিড় জমিয়েছিলেন ফ্রান্স সমর্থকেরা।

কাতার বিশ্বকাপের ফাইনাল এক রোমাঞ্চকর ম্যাচের সাক্ষী থাকল গোটা বিশ্ব। মাঠের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের উত্তেজনা দেখা দিল স্টেডিয়ামেও। একবার এই দলের ভক্ত্ররা আনন্দে মেতে ওঠে তো পরক্ষণে অন্য দলের সমর্থকেরা উচ্ছ্বাস করে। এরকম রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ অনেকদিন পর উপোভোগ করল দর্শক। ফাইনালের প্রথম অর্ধায়ে মেসিরা ২-০ গোলে এগিয়ে থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে সেই গোল শোধ করে দেয় এম্বাপে। সেই সঙ্গে আর্জেন্তেনিয় সমর্থকদের আনন্দে জল ঢেলে দেন তিনি। ২মিনিটের মধ্যে পর পর দু’টো গোল ম্যচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। অতিরিক্ত সময়ে মেসি তাঁর দিনের দ্বিতিয় গোল করে স্বপ্ন পূরণের দিকে পা বাড়ানো মাত্রই আবার তাঁর স্বপ্নের বাঁধা হয়ে আসে এম্বাপে। অতিরিক্ত সময়ের শেষে এসে হ্যাট্রিক করেন তিনি। তারই সঙ্গে গোল্ডেন বুটও হয়ে যায় তাঁরই নামে।

গোল্ডেন বুট হাতে পেয়েও হতাশায় ডুবে থাকলেন এম্বাপে। প্রথম অর্ধায়ে দি-মারিয়ার দাপটে বোতলবন্দি থাকলেও পরে মারিয়ার অনুপস্থিতিতে দুর্দান্ত খেললেন তিনি। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হল না। টাই ব্রেকারে ফ্রান্সকে হার মেনে নিতে হল মার্টিনেজের কাছে। পুরো ম্যাচ জুড়ে অসাধারণ কিপিং-এর জন্য তাঁর হাতেও উঠে আসে গোল্ডেন গ্লাবস।

টাই ব্রেকারে সুনিশ্চিত জয় লাভের পর আনন্দে কান্নায় ভেঙে পড়লেন মেসি। আর্জেন্তেনিয় সমর্থকেরাও আনন্দে চোখের জল ধরে রাখতে পারল না। অবশেষে বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন পূরণ হল মেসি্র। বিশ্বকাপ জেতার আনন্দ ভাগ করে নিলেন তাঁর দুই পরিবারের সঙ্গেই। একদিকে দলের ছেলেদের জড়িয়ে ধরে তাঁর স্বপ্ন পুরণের মুহুর্ত ভোগ করলেন অন্যদিকে স্ত্রী-সন্তান্দের নিয়ে মুহুর্তগুলো ক্যামেরা বন্দি করে রাখলেন। ম্যাচ চলাকালিন যে আগ্রাসী রূপে তাঁকে দেখা গিয়েছিল তার বিপরীত চরিত্রে দেখা গেল ম্যাচ শেষে। নিতান্তই একজন ‘ফ্যামিলি ম্যান’। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটালেও দর্শকদের অভিনন্দনের উত্তরও দিয়েছেন তিনি।

বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে পাওয়ার আগেই তাঁর হাতে ওঠে গোল্ডেন বল। সেই পুরস্কার নেওয়ার আগেই বিশ্বকাপে চুম্বন দিয়ে জয়ের স্বাদ নিলেন তিনি। প্রথম ম্যাচ হেরে যাওয়া থেকে বিশ্বকাপ ফাইনাল জেতা। ৩৬ বছর বয়সে এসেও যে স্বপ্নপূরণ করা যায় তা দেখিয়ে দিল মেসি। তৈরি করে দিল আরও একটি ইতিহাস।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: FacebookTwitterGoogle