আইএসএল ২০২০-২১, এফসি গোয়া বনাম এসসি ইস্টবেঙ্গল ম্যাচ ড্র

আইএসএল ২০২০-২১, এফসি গোয়া বনাম এসসি ইস্টবেঙ্গল

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: আইএসএল ২০২০-২১, এফসি গোয়া বনাম এসসি ইস্টবেঙ্গল ম্যাচ ঘটনাবহুল হয়েই রয়ে গেল। দুর্দান্ত ও দাপুটে ফুটবল খেলেও ৪০ মিনিট দশ জনে খেলা এফসি গোয়াকে হারাতে পারল না এসসি ইস্টবেঙ্গল। প্রথম মিনিটে পাওয়া পেনাল্টির সুযোগ হাতছাড়া করার মাশুল তাদের দিতে হল ১-১ ড্র করে। এই নিয়ে তাদের সাতটি ড্র ম্যাচ খেল ইস্টবেঙ্গল।

৩৯ মিনিটের মাথায় আলবার্তো নগুয়েরার বাড়ানো থ্রু থেকে গোল করে এফসি গোয়াকে এগিয়ে দেন ইগর অ্যাঙ্গুলো। ৬৫ মিনিটের মাথায় অ্যান্থনি পিলকিংটনের ফ্রি কিক থেকে পাওয়া গোলে সমতা আনেন ড্যানিয়েল ফক্স। সমতা আসার পরই দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় গোয়ার নির্ভরযোগ্য মিডফিল্ডার এডু বেদিয়াকে। এই ড্রয়ের ফলে এফসি গোয়া ২১ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরেই রয়ে গেল। এসসি ইস্টবেঙ্গল ১৩ পয়েন্ট নিয়ে দশ নম্বরে।      

প্রথম মিনিটেই পেনাল্টি পায় এসসি ইস্টবেঙ্গল ও সেই সুযোগ নষ্ট করেন অ্যান্থনি পিলকিংটন। গোলমুখী নারায়ণ দাসকে বক্সের মধ্যে এফসি গোয়ার তরুণ ডিফেন্ডার মহম্মদ আলি অন্যায় ভাবে বাধা দিলে পেনাল্টি দেন রেফারি হরিশ কুণ্ডু। কিন্তু তা অভাবনীয় ভাবে গোলের বাইরে মারেন অ্যান্থনি পিলকিংটন।

এ দিন এফসি গোয়ার সেরা স্কোরার ইগর অ্যাঙ্গুলোকে শুরু থেকেই প্রথম এগারোয় রেখেছিল গোয়া। তিনি ও আলবার্তো নগুয়েরার জুটি লাল-হলুদ রক্ষণকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলেন। রাজু গায়কোয়াড়ের অভাবে তাদের রক্ষণে তৈরি হওয়া দুর্বলতার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা তাঁরা করছিলেন বারবার। অঙ্কিত মুখার্জিকেও এ দিন শুরু থেকে নামাননি কোচ রবি ফাউলার। পঞ্চম মিনিটেই গোলের সামনে থেকে শট নিয়েছিলেন অ্যাঙ্গুলো। কিন্তু বাঁচিয়ে দেন দেবজিৎ মজুমদার।

নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার ইনোবাখারে ব্রাইটকে এ দিন শুরু থেকেই নামান ও তাঁকে বরাবরের মতো তৎপর হতেও দেখা যায়। কিন্তু তিনি পায়ে বল পাওয়া মাত্রই তাঁকে ঘিরে ধরছিলেন একাধিক গোয়ানিজ ডিফেন্ডার। ১৮ মিনিটের মাথায় মাঘোমার পাস থেকে পাওয়া বল নিয়ে অনেকটা দৌড়ে বাঁ দিক দিয়ে গোয়ার বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়েছিলেন ব্রাইট। তিনি গোলের সামনে নিখুঁত ভাবে বল রাখেনও। কিন্তু সেই বল জালে জড়ানোর মতো কেউ ছিলেন না। ইগরের ক্লিয়ারেন্সে বল ফিরে যায় বক্সের বাইরে।

(সব খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন)

সদ্য এটিকে মোহনবাগান থেকে এফসি গোয়ায় আসা তরুণ গোলকিপার ধীরজ সিং এ দিন চলতি আইএসএলের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন। শুরুর দিকে তাঁকে একটু নড়বড়ে লাগলেও পরের দিকে নিজেকে অনেকটা সামলে নেন তিনি। ২০ মিনিটের মাথায় ধীরজ ঘুসি মেরে বল বার করে দিলে তা রফিকের পায়ে গিয়ে পড়ে। রফিক সোজা গোলে শট নেন, কিন্তু আদিল খানের শরীরে লেগে বল গোলের বাইরে চলে যায়। ২৭ মিনিটের মাথায় ফের ব্রাইট একটা ভাল সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিলেন পিলকিংটনের জন্য। কিন্তু সে বারও তিনি ব্যর্থ হন।

২৩ মিনিটের মাথায় ফের ইগর বনাম দেবজিৎ ডুয়াল দেখা যায়। মাঝমাঠ থেকে জর্জ ওর্টিজ বল নিয়ে গোলের সামনে চলে যান। সেখানে ক্লিয়ার হওয়া বল চলে আসে ইগরের কাছে এবং একটুও সময় নষ্ট না করে গোলে শট নেন সুযোগসন্ধানী ইগর। ফের দেবজিৎই বাধা হয়ে ওঠেন তাঁর। ৩৬ মিনিটে ওর্টিজের ফ্রি কিক থেকে ফের গোল বাঁচান দেবজিৎ।

৩৯ মিনিটের মাথায়  নগুয়েরা ও ইগরের জুগলবন্দিতে অসাধারণ গোলটি হয়। নগুয়েরা মাঝমাঠ থেকে নিখুঁত থ্রু বাড়ান প্রায় অরক্ষিত অ্যাঙ্গুলোর জন্য, যা নিয়ে বক্সের মধ্যে ঢুকে গোলকিপার দেবজিৎকে ধোঁকা দিয়ে সোজা গোলে বল ঠেলে দেন।

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)

৬৫ মিনিটের মাথায় বাঁদিকের কর্নার স্পটের সামনে থেকে নেওয়া পিলকিংটনের ফ্রি কিক দখলে নিতে ব্যর্থ হন ধীরজ। তাঁর হাত থেকে পিছলে যাওয়া বল গোলের সামনে থেকে জালে জড়িয়ে দিয়ে সমতা আনেন ড্যানিয়েল ফক্স। ব্রাইট এদিন ম্যাচের শেষ ১৫ মিনিটে ঝড় তুলে দেন বিপক্ষের গোল এরিয়ায়। বাঁ দিকের উইং দিয়ে বারবার তিনি বিপজ্জনক ভাবে উঠে যাচ্ছিলেন। একের পর এক গোলের সুযোগ তৈরি করেন তিনি। ম্যাচের সেরাও তিনি।

এসসি ইস্টবেঙ্গল দলদেবজিৎ মজুমদার (গোল), স্কট নেভিল, রাণা ঘরামি (ওয়াহেংবাম লুয়াং), ড্যানিয়েল ফক্স, নারায়ণ দাস, মহম্মদ রফিক (অঙ্কিত মুখার্জি), অজয় ছেত্রী, জাক মাঘোমা (অ্যারম হলোওয়ে), অ্যান্থনি পিলকিংটন, ব্রাইট ইনোবাখারে, জেজে লালপেখলুয়া (হরমনপ্রীত সিং)

(লেখা ও ছবি আইএসএল ওয়েবসাইট ও টুইটার)