আইজলের সঙ্গেও ড্র, সুপার কাপ থেকে বিদায় ইস্টবেঙ্গলের

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: গোটা একটা মরশুম কেটে গেলেও একাধিক গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরও গোল খেয়ে জয় হাতছাড়া করার পুরনো রোগ সারল না ইস্টবেঙ্গল এফসি-র। হিরো সুপার কাপের গ্রুপ পর্বে প্রথম দুই ম্যাচের মতো তৃতীয় ম্যাচেও একই ভাবে দু’গোলে এগিয়ে থেকেও ২-২ ড্র করে মাঠ ছাড়ল তারা। ফলে গ্রুপ লিগ থেকেই বিদায় নিতে হল তাদের। মূলত অনভিজ্ঞ ফুটবলারদের নিয়ে গড়া আইজল এফসি জোড়া গোল খাওয়ার পরেও এ দিন যে ভাবে ঘুরে দাঁড়াল, তার প্রশংসা করতেই হয়।

আইজল এফসি অবশ্য আগেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে। তবে সোমবার মাঞ্জেরির পাইয়ানাড স্টেডিয়ামে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে তাদের পারফরম্যান্স প্রশংসা দাবি করতেই পারে। ২২ মিনিটের মধ্যে লাল-হলুদ বাহিনী দুই গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরে ৪২ ও ৪৮ মিনিটের মাথায় পরপর দু’গোল করে সমতা আনে আইজল। কলকাতার দলকে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে ম্যাচটি জিততেও পারত তারা। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের সৌভাগ্য যে, সেই অসন্মানের হাত থেকে বেঁচে যায় তারা।

এ দিন বল পজেশনে ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে (৫২-৪৮) থাকলেও ১৬টি শটের মধ্যে যেখানে সাতটি গোলে রাখে মণিপুরের দলটি, সেখানে ন’টি শটের মধ্যে মাত্র তিনটি গোলমুখী ছিল ইস্টবেঙ্গলের। সারা ম্যাচে একটিও কর্নার আদায় করতে পারেনি তারা। কিন্তু আইজল তিনটি কর্নার পেয়েছে।

শুরুর দিকে আইজল এফসি ইস্টবেঙ্গল রক্ষণকে কিছুটা ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করলেও ইস্টবেঙ্গল এফসি যখন ছন্দে ফিরে আসে এবং পাল্টা আক্রমণ শুরু করে, তখন তারা বেশ চাপে পড়ে যায়। ১৭ মিনিটের মাথায় নাওরেম মহেশ সিং ও ২২ মিনিটের মাথায় সুমিত পাসির গোলে তারা আরও কোণঠাসা হয়ে পড়ে।

মাঝমাঠ থেকে অ্যালেক্স লিমার বাড়ানো বল নিয়ে বাঁ দিক বরাবর উঠে বক্সে ঢুকে সুমিত পাসির উদ্দেশ্যে ক্রস দেন নাওরেম, যা আইজলের মিডফিল্ডার আকিতোর গায়ে লেগে গোলে ঢুকে যায় (১-০)। এর পাঁচ মিনিট পরেই ডানদিক দিয়ে ওঠা ভিপি সুহেরের উড়ন্ত ক্রসে হেড করে দ্বিতীয় গোল করেন সুমিত পাসি (২-০), যিনি এ দিন জেক জার্ভিসের জায়গায় প্রথম এগারোয় আসেন।

একাধিক চেষ্টার পর তাদের প্রথম সাফল্য আসে ৪২ মিনিটের মাথায়। বক্সের মধ্যে থেকে নেওয়া রুয়াতিয়ার শট কমলজিৎকে পরাস্ত করে সোজা গোলে ঢুকে যায়। তার আগে আকিতো বক্সে ঢুকে গোলের চেষ্টা করলেও লাল-হলুদ গোলকিপার সেই চেষ্টা বানচাল করেন, কিন্তু বল দখলে আনতে পারেননি, ছিটকে আসে ডেভিডের কাছে। তিনি স্কোয়ার পাস করেন রুয়াতিয়াকে এবং তাঁর জোরালো শট জালে জড়িয়ে যায় (২-১)।

দ্বিতীয়ার্ধে আইজলের স্ট্রাইকার ডেভিড অনবদ্য দূরপল্লার শটে গোল করে দলকে সমতা এনে দেন। একটি বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে কমলজিৎ গোল ছেড়ে অনেকটা এগিয়ে এসে যে ভুল করেন, তারই মাশুল দিতে হয় তাঁকে। ক্লিয়ার হওয়া বল পেয়ে কিছুটা এগিয়ে এসে প্রায় ৩৫ গজ দূর থেকে যখন গোলে শট নেন, তখনও নিজের জায়গায় ফিরে যেতে পারেননি ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপার (২-২)। অনেকটা লাফিয়ে বল আটকানোর চেষ্টা করেও পারেননি তিনি। এই সময়ে নিজেদের গোল এরিয়ায় ইস্টবেঙ্গলের একাধিক ডিফেন্ডার থাকা উচিত ছিল। কিন্তু একজনও ছিলেন না।

শুধু সমতা আনা নয় এগিয়ে যাওয়ারও সুযোগ পায় আইজল এফসি। ৫৮ মিনিটের মাথায় সার্থকের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে ডেভিড ডান দিক থেকে যে ক্রস দেন, তা গোলে শট নেন আমাউইয়া। কমলজিৎ তা আটকালেও বল ফিরে আসে ডেভিডের পায়ে। কিন্তু তিনি অফ সাইডে থাকায় বিপদ থেকে মুক্তি পায় ইস্টবেঙ্গল। ৭৫ মিনিটের মাথায় ফের গোলের ভাল সুযোগ পায় আইজল এফসি। ডানদিক দিয়ে ওঠা সাইলো বক্সের মধ্যে ঢুকে গোলে শট নিলে তা কমলজিতের হাতে লেগে গোলের সামনে ডেভিডের পায়ে লেগে জালে জড়িয়ে গেলেও অফ সাইডের পতাকা তুলে দেন সহকারী রেফারি।

ম্যাচের পর হতাশ লাল-হলুদ কোচ স্টিফেন কনস্টান্টাইন টিভি সাক্ষাৎকারে বলেন, “ফের একই  ভুল হল আমাদের। আমরা ওদের শ্রদ্ধা করতে পারিনি। আবার বাজে, অনর্থক গোল খেয়েছি আমরা। যে খেলোয়াড়ের যেখানে যখন থাকার কথা ছিল, তখন সেখানে থাকতে পারেনি তারা। নিজেদের ভুলে ফের জয় হাতছাড়া হল আমাদের”।

ইস্টবেঙ্গল দল: কমলজিৎ সিং (গোল), চ্যারিস কিরিয়াকু, লালচুঙনুঙ্গা, সার্থক গলুই, তুহীন দাস (মহম্মদ রকিপ), অ্যালেক্স লিমা (জর্ডন ও’ডোহার্টি), মোবাশির রহমান, ভিপি সুহের (হীমাংশু জাঙরা), নাওরেম মহেশ, সুমিত পাসি (সেম্বয় হাওকিপ), ক্লেটন সিলভা।

 (লেখা ও ছবি— আইএসএল ওয়েব সাইট থেকে)

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: FacebookTwitterGoogle