ঘটনাবহুল আইপিএল, ঋশভের রেকর্ড, চেন্নাইয়ের শেষ চার, বিদায় মুম্বই-পাঞ্জাব

চেন্নাই সুপার কিংস

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: ঘটনাবহুল আইপিএল, শেষ হল লিগ পর্ব। চার নম্বর দলের লড়াইয়ে রবিবার দুই অর্ধে নেমেছিল তিন দল। এ দিনে ম্যাচে অনেক কিছুই থেকে গেল। থাকল নক-আউটের কাছে গিয়েও পৌঁছতে না পারা। ছিটকে যাওয়া দলের কাছে হেরে ছিটকে গেলে কেউ। আবার একই লক্ষ্য নিয়ে নামা দুই দলের একজনকে বিদায় নিতে হল শেষ পর্যায়ে এসে। ঠিক এমনটাই একগুচ্ছ ওঠা-পড়ার মধ্যে দিয়ে শেষ হল আইপিএল-এর গ্রুপ পর্ব। বা বলা যায় শেষ হল নক-আউটে পৌঁছনোর লড়াই।

রবিবার প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল দিল্লি ডেয়ার ডেভিলস ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। শেষ চারে যেতে হলে দিল্লিকে হারাতেই হত মুম্বইয়ের। দিল্লির সামনে কোনও লক্ষ্যই ছিল না। আগেই তাঁরা ছিটকে গিয়েছে আইপিএল থেকে। এটা ছিল নিমরক্ষার ম্যাচ। আর সেই ম্যাচেই দিল্লির কাছে হেরে ছিটকে যেতে হল মুম্বইকে। যেখানে রেকর্ড ছড়িয়ে গেলেন দিল্লির ব্যাটসম্যান ঋশভ পন্থ। ৪৪ বলে ৬৪ রানের ইনিংস খেলে আইপিএল-এর ইতিহাসে উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান হিসেবে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড তো করলেনই সঙ্গে সর্বোচ্চ ছক্কা হাঁকানোরও রেকর্ড নিজের ঝুলিতে পুড়ে নিলেন।

রেকর্ড ম্যান ঋশভ পন্থকে দলের শুভেচ্ছা।

প্রথম ম্যাচে ঘরের মাঠে প্রথমে ব্যাট করে মুম্বইয়ের সামনে চার উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রানের টার্গেট রেখেছিল দিল্লি। দুই ওপেনার পৃথ্বী শ (১২) ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (২২) ফিরে যাওয়ার পর মাত্র ৬ রান করে প্যাভেলিয়নে ফেরেন শ্রেয়াস আয়ারও। এর পরই দিল্লি ইনিংসের হাল ধরেন ঋশভ ও ভি শঙ্কর। ঋশভ পন্থকে যোগ্য সঙ্গত দিয়ে যান শঙ্কর। ৩০ বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন তিনি। শেষে তাঁকে সঙ্গ দেন অভিষেক শর্মা (১৫)। মুম্বই বোলিং দিল্লিকে কোনওভাবেই চাপে ফেলতে পারেনি। যদিও লক্ষ্য খুব কঠিন ছিল না।

বিদায় রোহিত অ্যান্ড ব্রিগেড।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৯.৩ ওভারে ১৬৩ রানেই শেষ হয়ে যায় মুম্বইয়ের ইনিংস। মুম্বইয়ের হয়ে ব্যাক্তিগত সর্বোচ্চ রান এভিন লুইসের ৪৮। এক পর ৩৭ রান করে দ্বিতীয় স্থানে থাকবেন বেন কাটিং। আর কেউই দাঁড়াতে পারেননি। সূর্যকুমার যাদব (১২), ঈশান কিষান (৫), কেরন পোলার্ড (৭), রোহিত শর্মা (১৩), ক্রনাল পাণ্ড্যে (৪), হার্দিক পাণ্ড্যে (২৭), মারকান্দে (৩) ও বুমরা কোনও রান না করেই ফিরে যান প্যাভেলিয়নে। মুস্তাফিজুর নামলেও খাতা খোলার সুযোগ পাননি। দিল্লির বোলারদের সামনে রীতিমতো ধরাশায়ী শুরু থেকে ট্রফির দাবিদার মুম্বই। তিনটি করে উইকেট নেন নেপালের তারকা বোলার লামিচানে, হর্শল প্যাটেল ও অমিত মিশ্রা।

ক্যাপ্টেনের কাছে হার ক্যাপ্টেনের। তবুও ভারতীয় ক্রিকেটের দুই গ্রেট ধরা দিলেন এক ফ্রেমে।

দ্বিতীয় ম্যাচে দুই দলই ছিল ফাইনালের দাবিদার। কিন্তু ফাইনালে যেতে হলে জিততেই হত। যে কাজটি করে গেল ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস, কিংস একাদশ পাঞ্জাবকে হারিয়ে। প্রথমে ব্যাট করে বড় রানে টার্গেটই দিতে পারলেন না অশ্বিনরা। প্রথম তিন ব্যাটসম্যান ডাহা ফেল। লোকেশ রাহুল ৭, ক্রিস গেইল ০ ও অ্যারন ফিঞ্চ ৪ রান করে ফিরে গেলেন প্যাভেলিয়নে। এর পর কিছুটা পাঞ্জাব ইনিংসকে সামলাতে মাঠে নামেন মনোজ তিওয়ারি। তাঁর ব্যাট থেকে আসে ৩৫ রান। ডেভিড মিলার করেন ২৪। শেষে করুন নায়ারের হাফ সেঞ্চুরি (৫৪) কিছুটা আস্বস্ত করলেও তা যথেষ্ট ছিল না জয়ের জন্য। যার ফল ১৯.৪ ওভারে ১৫৩ রানে শেষ হয়ে যায় পাঞ্জাবের ইনিংস। ঠিক যেমনটা রান তাড়া করতে নেমে হাল হয়েছিল মুম্বইয়ের।

শেষ চার আগেই নিশ্চিত করেছে কেকেআর

চেন্নাইয়ের হয়ে চার উইকেট নেন এনগিদি। দুটো করে উইকেট ঠাকুর ও ব্রাভোর। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৯.১ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় চেন্নাই। সুরেশ রায়না প্রায় একাই চেন্নাই ইনিংসকে লক্ষ্যের কাছে নিয়ে যান। ৪৮ বলে অপরাজিত ৬১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। না হলে শুরুটা প্রায় পাঞ্জাবের মতই খারাপ হয়েছিল চেন্নাইয়েরও। অমঊআতি রায়ডু ১ ও ফাফ দুপ্লেসি ১৪ রান করে বিদায় নিয়েছিলেন ক্রিজ থেকে। তিনে নেমে হাল ধরেন রায়না। কিন্তু চার নম্বরে নেমে কোন রান না করেই আউট ন বিলিংস। এর পর হরভজন সিংহর ১৯, চাহারের ৩৯ ও ধোনির অপরাজিত ১৬ রানের দৌলতে লক্ষ্যে পৌঁছতে বেগ পেতে হয়নি চেন্নাইকে। প্রত্যাবর্তনে নক-আউটে পৌঁছে স্বভাবতই খুশি চেন্নাই শিবির।