চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অল-ইংলিশ ফাইনালে বাজিমাত চেলসির

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অল-ইংলিশ ফাইনালে

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অল-ইংলিশ ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল চেলসি ও ম্যানচেস্টার সিটি। পোর্তোর মাঠে যে ব্রিটিশ ফুটবলের উদ্দাম লড়াই দেখার সম্ভাবনা ছিল তা এদিন অধরাই থেকে গেল। বরং মাঠের বাইরে দুই কোচের মগজাস্ত্রের লড়াইয়ে বাজি মাত করলেন থমাস টাচেল। বলা যেতে পারে বিশ্বের অন্যতম সেরা কোচদের মধ্যে থাকা গোয়ার্দেওলার পেপ টককে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ম্যাচ ছিনিয়ে নিল থমাসের টাচ। তাঁর অত্যধিক ভাবনা-চিন্তার ফল হাতে নাতে পেল সিটি। প্রথমার্ধের শেষে হজম করা ১ গোল শোধ করতে পারল না পুরো একটা ৪৫ মিনিট পেয়েও।

এমনটাও বলা যেতে পারে, থমাস টাচেল জমিয়ে বদলা নিলেন প্রতিপক্ষ কোচের থেকে। যখন থেকে চেলসির দায়িত্ব নিয়েছেন  তার পর থমাস টাচেলকে দু’দুবার হারতে হয়েছিল তাঁর কাছে। বা তিনি তাঁর কোচিং প্রতিভা প্রমাণ করলেন জার্মান কোচকে হারিয়ে। থমাস টাচেল যাই ঠিক করুন না কেন পেপ গোয়ার্দেওলা শুরু থেকেই ভুল করে গেলেন। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ছাড়া দল সাজানোটাই তাঁর জন্য বুমেরাং হয়ে গেল।

তিনি শুরু থেকেই গণ্ডোগোলটা করে ফেলেছিলেন। না ফার্নান্ডিনহো না রোডরিকে দলে রেখেছিলেন। যার ফলে শুরু থেকেই রক্ষণ অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছিল। সঙ্গে ম্যানসিটি আক্রমণের মূল স্তম্ভ ইকে গান্দোগানকে নামিয়ে দিয়েছিলেন মাঝ মাঠে। সেখানেই পুরোটা ঘেটে গেল। এই মরসুমে ৬০টি ম্যাচ খেলেছে সিটি। তার মধ্যে দুই ডিফেন্ডারকে ছাড়া মাত্র খেলেছেন একটি ম্যাচ অলিম্পিয়াকোসের বিরুদ্ধে। কিন্তু মরসুমের সেরা লড়াইয়ে এই ফাটকাটা বুমেরাং হয়ে গেল। পুরো মরসুম দুরন্ত ফুটবল খেলার পর ফাইনালে এভাবে মুখ থুবড়ে পড়াটা অতি বড় সমর্থকও মেনে নিতে পারবেন না।

শুরু থেকেই সুযোগের সন্ধানে ছটফট করতে দেখা গেল চেলসিকে। নিশ্চিত গোলের সুযোগও নষ্ট হল। কিন্তু ম্যাচ ছিল গাঢ় নীলের দখলেই। প্রথমে কিছুটা সচল থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে একেবারেই অচল হয়ে পড়ল হালকা নীলের ঝলক। চেলসি খেলে গেল পাল্টা আক্রমণে।  ৩৬ মিনিটে থিয়াগো সিলভা চোট পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়লেন। এত বড় মঞ্চ থেকে বেরিয়ে যাওয়াটা কখনওই সহজ নয়। একইভাবে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে হল ডি ব্রুয়েনকে। দুই দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ার দুই অর্ধে মাঠ ছাড়লেন চোটের জন্য।

৪২ মিনিটে ম্যাচের যে একমাত্র গোলে চেলসি চ্যাম্পিয়ন হল সেটার কৃতিত্ব যত না গোলদাতার তার থেকে অনেক বেশি ভু‌ল প্রতিপক্ষ রক্ষণের। তবে প্রতিপক্ষ রক্ষণের ভুলকে দারুণভাবে কাজে লাগালেন চেলসির সব থেকে দামি ফুটবলার হারভার্টজ। সিটি রক্ষণকে প্রায় দাঁড় করিয়ে রেখেই বল নিয়ে বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়েছিলেন তিনি। সামনে তখন শুধু গোলকিপার। খুব স্বাভাবিকভাবেই গোল ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন এডারসন জায়গা ছোট করতে কিন্তু তার আগেই তাঁকে কাটিয়ে বল জালের ঠিকানায় পাঠিয়ে দেন হারভার্টজ। চেলসির জার্সিতে প্রথম গোল করলেন তাও আবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে। কেরিয়ারের সেরা গোল হিসেবে লেখা থাকবে তাঁর ফউটবল জীবনে।

১-০ গোলে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নেমেছিল চেলসি। তাদের সামনে ছিল ব্যবধান ধরে রাখার লড়াই। উল্টোদিকে সিটির সামনে ছিল সমতায় ফেরার চেষ্টা। শুরুটা করলেও লক্ষ্যে পৌঁছতে ব্যর্থ ম্যানচেস্টার সিটি। কিছুক্ষণ পর থেকেই ছন্নছাড়া লাগতে শুরু করে পেপের ছেলেদের। চেলসি নিজেদের লক্ষ্য ধরে রাখতে দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা রক্ষণাত্মক হয়ে পড়তেই আক্রমণের সব রাস্তা হারিয়ে ফেলে ইপিএল চ্যাম্পিয়নরা।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)