জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: স্টিভ স্মিথ ফিরলেন টেস্ট ক্রিকেটে। শুরু হয়েছিল ডেভিড ওয়ার্নারকে দিয়ে। ছাড় পাননি স্টিভ স্মিথও। নির্বাসন থেকে ফিরে টেস্ট ক্রিকেটের প্রত্যাবর্তন ম্যাচে সেঞ্চুরি করেও বিদ্রুপের মুখে পড়তে হল এই অসি ব্যাটসম্যানকে। যদিও ব্রিটিশ দর্শকদের আচরণকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না স্টিভ স্মিথ। এই ঘটনায় একেবারেই বিচলিত নন তিনি।
বল বিকৃতির জন্য নির্বাসনের কবলে পড়তে হয়েছিল ডেভিড ওয়ার্নার, ক্যামেরন ব্যানক্রফট ও স্টিভ স্মিথকে। অ্যাশেজের প্রথম দিনই শিরীষ কাগজ দেখিয়ে ওয়ার্নারকে বিদ্রুপ করা হয়। স্মিথকেও ওয়ার্নারের মতো বিদ্রুপের মুখে পড়তে হয়েছিল। ইংল্যান্ড বোলারদের সামনে বুক চিতিয়ে যত রুখে দাঁড়িয়েছিলেন, বিদ্রুপের মাত্রা ততই বেড়েছে। এমনকী তাঁর ক্রন্দনরত মুখোশ পরে দর্শকরা ক্রমাগত উপহাস করে গেছেন স্মিথকে।
যা শুরু হয়েছিল তিনি যখন ব্যাট করার জন্য বাইশ গজের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তা সত্ত্বেও মনঃসংযোগে বিঘ্ন ঘটেনি স্মিথের। বরং আরও দৃঢ় সংকল্প হয়ে উইকেটে পড়ে থেকেছেন। উপহাস–ব্যঙ্গ উপেক্ষা করে টেস্টে ২৪তম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছিলেন স্মিথ।
ব্রিটিশ দর্শকদের এই আচরণ তাঁকে বিচলিত করেনি, জানান স্মিথ। তিনি বলেন, ‘সত্যি বলছি, দর্শকদের আচরণে একেবারেই বিরক্ত হইনি। সতীর্থরা আমার পাশে আছে, এটাই আমার কাছে অনেক বড় ব্যাপার। সেঞ্চুরির পর যখন ড্রেসিংরুমের ব্যালকনির দিকে তাকিয়েছিলাম, দেখছিলাম সতীর্থরা পাগলামি শুরু করেছে। ওদের দেখে আমার শিরদাঁড়ায় শিহরন জেগে উঠেছিল। দীর্ঘদিন পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরে সেঞ্চুরি পেয়েছি। এটা আমার কাছে অসাধারণ মুহূর্ত। আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। এই মুহূর্তে কী বলা উচিত, সত্যিই আমি জানি না।’
Listen to #SteveSmith as he speaks with media after his innings of 144 in the first #Ashes Test @Edgbaston here – https://t.co/AGRiov9nTj
— Cricket Australia (@CricketAus) August 1, 2019
নির্বাসিত হওয়ার পর নিশ্চিত ছিলেন না আবার ক্রিকেটে ফিরবেন কিনা। এমনই জানিয়েছেন স্মিথ। তিনি বলেন, ‘গত ১৫ মাস আমার মধ্যে কী ঘটেছে তা একমাত্র আমিই জানি। আবার ক্রিকেটে ফিরব কিনা নিশ্চিত ছিলাম না। ক্রিকেটের প্রতি আবেগ, ভালবাসা হারিয়ে ফেলেছিলাম। বিশেষ করে যখন কনুইয়ে অস্ত্রোপচার হয়েছিল, তখন মনে হয়েছিল আর ক্রিকেটে ফিরতে পারব না। সুস্থ হয়ে ওঠার পর আবার ক্রিকেটকে ভালবাসতে শুরু করি। মাঠে ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেছিলাম।’
এদিকে, সেঞ্চুরি করার পরও যেভাবে স্মিথকে বিদ্রুপ করা হয়েছে তাতে যথেষ্ট বিরক্ত গ্লেন ম্যাকগ্রাথ। তিনি বলেন, ‘শুরুর দিকে এই ধরনের ঘটনা ঘটতেই পারে। তবে সারাক্ষণ এটা চলা উচিত হয়নি। বিশ্বকাপের সময়ও এই ধরনের ঘটনা দেখেছিলাম। ১৬ মাস আগের ঘটনার রেশ এখনও চলছে। মানুষ মাত্রই ভুল হয়। ওরা ভুলের মাশুল দিয়েছে। দুর্দান্ত ইনিংস খেলার পরেও যেভাবে স্মিথকে বিদ্রুপ করা হয়েছে, খুবই হতাশাজনক।’
অ্যাশেজের প্রথম দিনেই বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে আম্পায়ারদের। নিরপেক্ষ আম্পায়ারের দাবি তুলেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক রিকি পন্টিং। তিনি বলেছেন, ‘আমার মনে হয় নিরপেক্ষ আম্পায়ার দিয়ে ম্যাচ পরিচালনার সময় এসেছে। অনেকেই হয়তো বলবে, প্রযুক্তি চলে এসেছে। সুতরাং নিরপেক্ষ আম্পায়ার দিয়ে ম্যাচ পরিচালনা করা হল কী হল না, সেটা বড় কথা নয়। কিন্তু একটা কথা বলতেই হবে, বারবার ভুল সিদ্ধান্ত দেখাটা খুবই দৃষ্টিকটু।’
অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে জিমি অ্যান্ডারসনকে না দেখে অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। তাঁর জায়গায় শেষ মুহূর্তে দলে ঢোকেন স্টুয়ার্ট ব্রড। কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে গিয়ে চোট পেয়েছিলেন অ্যান্ডারসন। প্রথম টেস্টের আগে পুরো ফিট হয়ে উঠতে পারেননি। তার জন্য সতীর্থদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ইংল্যান্ডের এই জোরে বোলার।
(খেলার আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)