বিবিয়ানো ফার্নান্ডেজ বলেন, ‘আমাদের পৃথিবী এখানেই শেষ হয়ে যাচ্ছে না’

বিবিয়ানো ফার্নান্ডেজ

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: বিবিয়ানো ফার্নান্ডেজ বুঝিয়ে গেলেন, এটা শেষ নয়, এটা আসলে শুরু। শুরু ভারতীয় ফুটবলের উত্থানের। যে বিশ্বকাপের হাত ধরে গত বছর মেতে উঠেছিল গোটা ভারত। কে জানত যুব বিশ্বকাপ নিয়ে এ ভাবে মাতোয়ারা হবে গোটা দেশ। তারই নতুন স্বপ্নের ভেলায় ভাসতে ভাসতেও লক্ষ্যে পৌঁছনো হল না একঝাঁক তরুণতুর্কির। তাতে কী? যে স্বপ্ন দেখিয়ে দিয়েছে এই ছেলেরা তার হাত ধরেই এগিয়ে যাওয়া যায় অনেকটা রাস্তা। এ বার হয়নি তো কী পরের বার অবশ্যই হবে। এই ভরসা দিয়ে গিয়েছে ওরা।

সোমবার কোরিয়া রিপাবলিকের কাছে ১-০ গোলে হারের সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে ভারতের অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে যাওয়ার রাস্তা। একটা জয়ের হাত ধরে ভারতীয় ফুটবলে তৈরি হতে পারত এক ইতিহাস। এএফসি অনূ্র্ধ্ব-১৬র কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছনোটাই ইতিহাস ছিল। শেষ দরজাটা খুলতে হত। কিন্তু সব থেকে কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সেই দরজা আর খোলা হল না। হারলেও চোখে চোখ রেখে ভারতের এই খুদেরা দেখিয়ে গেল ‘আমরাও পারি’।

ওরাই দেখাল ৪০৪ মিনিটের গোল হজম না করার লড়াই কী ভাবে উতরে গিয়েছিল বিবিয়ানোর ছেলেরা। বিশ্ব ফুটবলে ভারতের থেকে অনেকটা এগিয়ে থাকা দেশের সঙ্গে লড়তে লড়তেই এখানে পৌঁছেছিল। তাই হয়তো সদর্পে বিবিয়ানো ফার্নান্ডেজ বলতে পারেন, “আমাদের পৃথিবী এখানেই শেষ হয়ে যাচ্ছে না। ছেলেরা নিজেদের ১০০% দিয়ে লড়েছে। আমরা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি ভারতীয় ফুটবলাররা কী করতে পারে। অনূর্ধ্ব-১৬ এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপ এখন অতীত। এ বার লক্ষ্য অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ। এই টুর্নামেন্টের অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে আসবে ভবিষ্যতে।”

স্বপ্ন ভাঙল বিশ্বকাপের

হেরে গেলেও তাদের পাশে রয়েছে ফেডারেশন। ছেলেরা যে লড়াই দিয়েছে তার জন্যই তো এতদিন ধরে পরীক্ষা-নিরিক্ষা চালাচ্ছে এআইএফএফ। মঙ্গলবার এআইএফএফ-এর সহ-সভাপতি সুব্রত দত্ত কিন্তু উচ্ছ্বস্বিত। বলেন, “আমাদের গ্রাসরুট ডেভলপমেন্টের ফসল এই দল। অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে যে দল খেলেছিল, সেই দলের থেকেও ভাল দল এটা।” এই দলকে নিয়েই ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছে ভারতীয় ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা। তিনি আরও বলেন, “অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে যে ভাবে আমরা তৈরি করেছি, সেই ভাবেই এই দলকেও তৈরি করছি। বিদেশি বিভিন্ন টুর্নামেন্ট খেলিয়ে ওদের উন্নত করা হয়েছে। ফেডারেশন এই দলের পিছনে প্রচুর খরচ করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে।”

দেশে ফিরে লম্বা বিরতি। একমাস ছুটি, তার পর আবার নেমে পড়া ফুটবল মাঠে। দীর্ঘ দিন জাতীয় শিবিরে থাকার পর প্রত্যেকেরই মন বাবা-মা, পরিবারের কাছে ফিরতে চাইছে। এই বয়সে এই দেশে কে আর অভিভাবকদের ছেড়ে থাকে। কিন্তু ওরা দেশের স্বার্থে সব ছেড়ে শুধু ফুটবলকেই আঁকড়ে ছিল। এ বার বাড়িতে ফেরার পালা। মালয়েশিয়া থেকে আজই দেশে ফেরার কথা অনূর্ধ্ব-১৬ ভারতীয় দলের। তবে, এখনও পর্যন্ত কনফার্ম টিকিট  হাতে আসেনি টিম ইন্ডিয়ার।