AFC Cup ATKMB-র ঘরের মাঠ হলেও ম্যাচ ১১ বনাম ১১

Juan Ferrando

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: এএফসি কাপের নক আউট পর্ব মানেই আরও কঠিন লড়াই (AFC Cup ATKMB)। কিন্তু পরিস্থিতি এমনই যে, যেখানে এএফসি কাপ অভিযান থেমেছিল এটিকে মোহনবাগানের, ঠিক সেখান থেকেই তারা শুরু করতে পারবে কি না, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। কারণ, দলে অনেক পরিবর্তন এসেছে এবং এক ঝাঁক নতুন খেলোয়াড় যোগ দিয়েছেন, যাঁরা এখনও দলের বাকিদের সঙ্গে ঠিকমতো মানিয়ে নিতে পারছেন, এমন প্রমাণ সে ভাবে পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ, নতুন কম্বিনেশন এখনও জনে ওঠেনি সবুজ-মেরুন বাহিনীর। এই অবস্থায় দাঁড়িয়েও আশাবাদী দলের স্প্যানিশ কোচ হুয়ান ফেরান্দো। ঘরের মাঠে এএফসি কাপ ইন্টার জোনাল সেমিফাইনালে কুয়ালা লামপুর সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে নামার আগের দিন সাংবাদিক বৈঠকে যা বললেন তিনি, তার উল্লেখযোগ্য অংশ এখানে তুলে দেওয়া হল।

এএফসি কাপের ইন্টার জোনাল সেমিফাইনালে নামার আগে আপনার দলের প্রস্তুতি কেমন?

ম্যাচটা আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের প্রস্তুতিও যথেষ্ট ভাল জায়গায় রয়েছে। তবে ম্যাচটা কঠিন হবে, জানি। কারণ, নক আউট পর্বে আমাদের প্রতিপক্ষ কঠিন হবে। তাদের বিরুদ্ধে খেলার জন্য আমাদের তৈরি থাকতে হবে।

এই ম্যাচের জন্য নিজেদের খেলার মান কী ভাবে বাড়াবেন?

এটা অন্য একটা টুর্নামেন্ট। ডুরান্ড কাপ এখন অতীত। আমাদের নজর এখন ভবিষ্যতের দিকে। ফুটবলে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবাই সবচেয়ে জরুরি। আমাদের এখন ভাল ভাল দলের বিরুদ্ধে খেলতে হবে। সে জন্য নিজেদের বিভিন্ন ভাবে তৈরি করতে হবে। কারণ, এএফসি কাপ আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দলের ছেলেরা এই ম্যাচের জন্য উজ্জীবিত এবং তৈরি। ওরা এখন দল হিসেবে ভবিষ্যতের কথা ভাবছে। আশা করি, কাল ম্যাচের পর আমরা খুশিই থাকব।

দলের ফুটবলাররা সুযোগ তৈরি করতে পারলেও গোল পাচ্ছেন না। প্রচুর গোলের সুযোগ হাতছাড়া হচ্ছে। এই নিয়ে কি আপনি চিন্তিত নন?

কয়েকটা বিষয়ে আমাদের অবশ্যই উন্নতি করতে হবে। কিন্তু ডুরান্ড কাপ এখন অতীত এবং আমাদের সামনের দিকে তাকাতে হবে। বুধবারের ম্যাচ একেবারে অন্য রকম হবে। প্রতি মুহূর্তে আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সে প্রথমার্ধে হোক বা দ্বিতীয়ার্ধে। আমাদের পরের রাউন্ডে যেতেই হবে এবং সে জন্য আমাদের নিখুঁত ফুটবল খেলতেই হবে। সুযোগ তৈরি করতে না পারলে চিন্তিত হতাম। কিন্তু আমরা এখানে সমানে চেষ্টা করে যাচ্ছি গোল করার এবং দলের ছেলেরাও প্রতি ম্যাচে জিততে মরিয়া হয়ে উঠছে। আশা করি, কালকের ম্যাচে ফাইনাল থার্ডে আমরা ভাগ্যের আরও সাহায্য পাব এবং ম্যাচটা জিতব। দলের কন্ডিশন ভাল। গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারছে। আমার পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলছে। সারা দুনিয়ায় এই সমস্যা রয়েছে। তবে খেলোয়াড়রা উন্নতি করতে চায়। সে জন্য আমি এই নিয়ে চিন্তিত নই।

ব্রেন্ডান হ্যামিল এবং দিমিত্রিয়স পেট্রাটসকে কি আপনি এই ম্যাচে পাবেন?

ওরা এখন অনেক ভাল অবস্থায় রয়েছে। বিদেশিরা ভারতে এসে একেবারে অচেনা পরিবেশের মধ্যে পড়ে। পরিবেশ, আবহাওয়া, খাবারের সঙ্গে মানিয়ে নিতে ওদের সময় লাগে। বিদেশিদের নিয়ে আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যেটা খুবই কঠিন। তবু সিদ্ধান্ত তো নিতেই হবে। আমি একশো শতাংশ খুশি হতে পারছি না। কারণ, (বিদেশি-নীতির জন্য) কয়েকজন সত্যিকারের ভাল ফুটবলারকে আমরা দলে রাখতে পারব না। তবে যারা হাতে আছে, তাদের মধ্যে থেকে সেরাদের বেছে নিতে হবে।

এই ম্যাচে ফেভারিট হিসেবে দেখা হচ্ছে আপনার দলকে। এটা কি বাড়তি চাপের?

ঘরের মাঠে খেলাটা সবসময়ই ভাল। কারণ, নিজেদের সমর্থকদের সামনে খেলার সুযোগ পাওয়া যায়। অনেকে একে সুবিধা বলতে পারেন, বা অসুবিধা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা এগারো বনাম এগারোই হবে। খেলোয়াড়, স্টাফ সবাই পেশাদার। নিজেদের সেরাটা কী করে দেওয়া যায়, তা নিয়েই সবসময় ভাবছি। ঘরের মাঠ, চেনা মাঠে খেলতে আমরা অভ্যস্ত। সে দিক থেকে সুবিধা পেতে পারি। কিন্তু ০-০ থেকেই তো শুরু হবে। ৩-০-য় থেকে যদি শুরু করতে পারতাম, তা হলে হয়তো বলতে পারতাম যে আমরা সুবিধাজনক জায়গায় আছি। এটা ৯০ মিনিটের খেলা। এই খেলায় যে কোনও ফল হতে পারে।

প্রতিপক্ষ কুয়ালা লামপুর সিটি সম্পর্কে আপনার কী ধারণা?

ওরা সেমিফাইনালে খেলছে যখন, নিশ্চয়ই ভাল দল। ওদের ওঠা-নামা খুবই ভাল। আক্রমণ ও রক্ষণেও ওরা দক্ষ। লিগ, এএফসি কাপ ও অন্যান্য টুর্নামেন্টের জন্য ওদের আলাদা ও স্পষ্ট পরিকল্পনা আছে। ভাল প্রস্তুতি নিয়েই এসেছে ওরা। এই ধরনের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে ভাগ্যই সব নয়। ম্যাচটা অবশ্যই কঠিন হবে। তবে আমরা সাফল্য নিয়ে আশাবাদী।

দিমিত্রি পেট্রাটসের সঙ্গে কি প্রতিপক্ষের কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে?

সত্যি বলতে, না। এ জন্য এখন আমি শক্তিক্ষয় করতে চাই না। দিমিত্রি অন্যান্য কোচের অধীনে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে খেলেছে। আমি আমার দলের ছোটখাটো সমস্যাগুলো দূর করার জন্য বা কোনও পরিকল্পনা তৈরির জন্য শক্তি ব্যয় করতে রাজি। দু-একজনকে নিয়ে বসে প্রতিপক্ষের কৌশল, পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করার মতো পরিস্থিতি এটা নয়। এই পরিস্থিতিতে এখন আমার কাছে আমার দলই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অন্য দল নিয়ে আলোচনা করি না। কারণ, সেটা আমার হাতে নেই।

গোল করার সঙ্গে আপনার দল গোল খাচ্ছেও। এই নিয়ে কী বলবেন?

প্রতিপক্ষের চেয়ে এক গোল বেশি করাটাই আমার লক্ষ্য। আগে একটা গোল দাও। তার পরে ২-০ করো। তার পরে ৩-০। এ ভাবেই এগোতে চাই। এই ক্লাবের এবং খেলোয়াড়দেরও মানসিকতা একই রকমের। শুধু গোল না খাওয়ার কথা ভাবি না। আমার দৃষ্টিভঙ্গি এ রকমই। ঝুঁকি না নিলে ম্যাচ জেতা যায় না। ঝুঁকি না নিতে চাইলে ভুল হবেই। অন্য ক্লাব হয়তো অন্য ভাবে ভাবতে পারে। গোল খাব না, ভুল করব না, বল সব সময় প্রতিপক্ষের নাগালের বাইরে রাখব, এ রকম ভাবতে পারে। কিন্তু আমি না। গোলের সুযোগ তৈরি করার জন্য আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতেই হবে। তার পরে রক্ষণে উন্নতি করাটাও খুব জরুরি। কিন্তু গোল না খাওয়া আমার প্রধান লক্ষ্য নয়।

এই ম্যাচে দলের কোন কোন বিদেশিকে খেলাতে চান?

বিভিন্ন রাস্তা সামনে রেখে নিজেদের প্রস্তুত করছি আমরা। কারণ, কালকের ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশীয় খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া আক্রমণ নিয়ে খেলার জন্য প্রস্তুত আমরা। ব্যাকলাইনে বিদেশি সেন্টার ব্যাকরা থাকবে। মাঝমাঠে ভারতীয়দের চাই। একাধিক পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামা খুবই জরুরি। দলকে বিভিন্ন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে তৈরি করাটাও জরুরি। এ সবের পরে সেরা লাইন আপ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কারা শুরু থেকে নেমে দলকে সাহায্য করতে পারবে, কাদের দ্বিতীয়ার্ধে নামানো উচিত।

(লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট)

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: FacebookTwitterGoogle