এএফসি কাপে দ্বিতীয় জয় এটিকে মোহনবাগানের, পিছিয়ে থেকে ৩-১ জয়

এএফসি কাপে দ্বিতীয় জয় এটিকে মোহনবাগানের

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: এএফসি কাপে দ্বিতীয় জয় এটিকে মোহনবাগানের যা তাদের নক আউট পর্বের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিল। শনিবার মালের ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে মলদ্বীপের মাজিয়া স্পোর্টস অ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাবের বিরুদ্ধে তারা বিরতিতে এক গোলে পিছিয়ে থাকা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত জেতে ৩-১ গোলে। ২৪ মিনিটেরর মাথায় আইসাম ইব্রাহিম গোল করে মাজিয়াকে এগিয়ে দেন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোল শোধ করেন লিস্টন কোলাসো ও ব্যবধান বাড়ান রয় কৃষ্ণা ও মনবীর সিং। টানা দ্বিতীয় জয়ের ফলে এএফসি কাপ গ্রুপ ডি-তে ২ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে পৌঁছে এটিকে মোহনবাগান।  সমসংখ্যক ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংস রয়েছে দু’য়ে। এই গ্রুপের অপর দুই দল মাজিয়া ও বেঙ্গালুরু প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে গেল এ দিনই। গ্রুপ শীর্ষে থেকে কারা ইন্টার জোনাল সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে, তা ঠিক হবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এটিকে মোহনবাগান বনাম বসুন্ধরা কিংস ম্যাচে। এই ম্যাচে ড্র-ই কলকাতার দলকে তুলে দিতে পারে নক আউট পর্বে। ঢাকার ক্লাবের অবশ্য জয় ছাড়া কোনও উপায় নেই।

এ দিন অধিনায়কের আর্মব্যান্ড ছিল প্রীতম কোটালের হাতে। ফরাসি মিডফিল্ডার হুগো বুমৌসকে প্রথম দলে রাখেননি কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। গত ম্যাচে তিনি হলুদ কার্ড দেখেন এবং হালকা চোটও পান। সেই কারণেই এই ম্যাচে তাঁর বদলে লিস্টন কোলাসোকে নামানো হয়। মঙ্গলবার বসুন্ধরা কিংসের বিরুদ্ধে ম্যাচ আরও কঠিন ও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে, এ রকম ধরে নিয়েই সম্ভবত এই সিদ্ধান্ত নেন কোচ। তবে বুমৌস মাঝমাঠে না থাকায় এ দিন প্রথমার্ধে সবুজ- মেরুন শিবিরের মাঝমাঠে বাঁধন ছিল বেশ আলগা। গোলের পাস বাড়ানোর লোকেরও অভাব দেখা দেয়। ফরাসি মিডফিল্ডার দ্বিতীয়ার্ধে রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে নামার পরই দলের চেহারা বদলে যায়। এটিকে মোহনবাগানের শেষ দুটি গোলের নেপথ্যে ছিলেন তিনিই।

প্রথম কুড়ি মিনিট বিপক্ষের এলাকায় সবুজ মেরুন ফুটবলাররা দাপট দেখালেও মাঝে মাঝে কিন্তু প্রতি আক্রমণে উঠছিল মাজিয়া এসআরসি। এমনই এক প্রতি আক্রমণ থেকে গোল করে এগিয়ে যায় তারা। ২৪ মিনিটের মাথায় ডেভিড উইলিয়ামসের ফ্রি কিক ওয়ালে লেগে মাঝমাঠে চলে এলে সেখান থেকেই আক্রমণে ওঠেন মাজিয়ার সেরা তারকা কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট। ডান দিক দিয়ে অনেকটা উঠে ইব্রাহিমকে গোলের জন্য ক্রস বাড়ান তিনি। গোলে বল ঠেলতে একদমই ভুল করেননি ইব্রাহিম। সুমিত রাঠি তাঁকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেও সফল হননি।

দ্বিতীয়ার্ধে সুমিত রাঠির জায়গায় আশুতোষ মেহতাকে নামান হাবাস এবং শুরুতেই দলের গোলে প্রত্যক্ষ ভাবে সাহায্য করে আশুতোষ প্রমাণ করে দেন, কোচের সিদ্ধান্তটা সঠিক। ডানদিকের উইং দিয়ে বল নিয়ে উঠে পেনাল্টি বক্সে মাপা ক্রস বাড়ান তিনি। উদ্দেশ্য ছিল রয় কৃষ্ণা। কিন্তু ইরুফান তাঁকে মার্ক করে রাখায় সেই বল ছেড়ে দেন রয়, যা গিয়ে পড়ে পিছনে থাকা আনমার্কড কোলাসোর মাথায়। তিনি হেড করে জালে বল জড়াতে একটুও ভুল করেননি। ৬২ মিনিটের মাথায় ডেভিড উইলিয়ামসকে তুলে নিয়ে হুগো বুমৌসকে নামান হাবাস। একই সঙ্গে দীপক টাঙরির জায়গায় নামেন শেখ সাহিল। এবং তার দুমিনিট পরেই আসে সবুজ- মেরুনের দ্বিতীয় গোল।

৬৪ মিনিটের মাথায় দলের ও তাঁর দ্বিতীয় গোলটি করার সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে যান কোলাসো। বুমৌসের ফরোয়ার্ড পাস থেকে বক্সের মধ্যে ওয়ান টু ওয়ান পরিস্থিতিতে সুযোগ পেয়ে যান তিনি। কিন্তু তাঁর শট মাজিয়ার গোলরক্ষক মির্জোখিদের হাতে লেগে আসে বক্সের বাইরে রয় কৃষ্ণার সামনে। ফিরতি বলে মাপা শটে গোলকিপারের মাথার ওপর দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন রয়। প্রথমার্ধে বুমৌস মাঝমাঠে না থাকায় এটিকে মোহনবাগান কতটা দুর্বল হয়ে পড়েছিল, তা দ্বিতীয়ার্ধে তিনি নামার পরেই বোঝা যায়। দ্বিতীয় গোলের মতো তৃতীয় গোলেও ছিল তাঁরই প্রত্যক্ষ মদত। ৭৭ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বুমৌসের বাড়ানো বল নিয়েই অনেকটা দৌড়ে বক্সে ঢুকে গোলকিপারের ডান দিক দিয়ে গোলে বল ঠেলে দেন মনবীর সিং। সেখানেই শেষ হয়ে যায় খেলা।

এটিকে মোহনবাগান দল: অমরিন্দর সিং (গোল), প্রীতম কোটাল, কার্ল ম্যাকহিউ, সুমিত রাঠি (আশুতোষ মেহতা), মনবীর সিং, লেনি রড্রিগেজ, দীপক টাঙরি (শেখ সাহিল), শুভাশিস বসু, লিস্টন কোলাসো (ইঙ্গসম সিং), রয় কৃষ্ণা (অভিষেক ধনঞ্জয়), ডেভিড উইলিয়ামস (হুগো বুমৌস)।

(ম্যাচ রিপোর্ট ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ওয়েবসাইট থেকে)

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)