এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ: এফসি গোয়া বনাম পার্সেপোলিস ম্যাচ

এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ম্যাচের শেষে ইরানের ফুটবলারদের মুখে হাসি দেখা গেলেও মঙ্গলবার রাতে যে ফুটবল খেলল এফসি গোয়া, তাতে হুয়ান ফেরান্দোর দলের ফুটবলারদের গর্বে বুক ফুলে ওঠার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এডু বেদিয়ার দুর্দান্ত গোল ও ধীরজ সিংয়ের অসাধারণ পেনাল্টি সেভ তো ছিলই চলতি এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ (ই গ্রুপ) পর্বের তৃতীয় ম্যাচে। এ ছাড়াও যে কৌশলী ফুটবল দিয়ে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে দ্বিতীয়ার্ধে আটক করে রাখল এফসি গোয়া, তার যতই প্রশংসা করুন, তা কম হবে।

লিগের গতবারের রানার্স ও এশিয়ার অন্যতম সেরা ক্লাব ইরানের পার্সেপোলিসের বিরুদ্ধে গত দুই ম্যাচের মতো ড্র করাটাই যেখানে ভাল রেজাল্ট বলে ভাবছিল সবাই, সেখানে ১৩ মিনিটের মাথায় অধিনায়ক বেদিয়ার গোল সবাইকে চমকে দেয়। ব্রেন্ডন ফার্নান্ডেজের ক্রসে হেড করে দুর্দান্ত গোল করে উল্লাসে ফেটে পড়েন বেদিয়া ও তাঁর সতীর্থরা।

শুরু থেকে অবশ্য বিপক্ষকে চাপে রাখার চেষ্টা করছিল পার্সেপোলিস এফসি। কিন্তু গোলটা হয়ে যাওয়ায় একলাফে অনেকটা আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় বেদিয়াদের, তাঁরা অনেক চনমনে হয়ে ওঠেন। প্রথম গোলের পরেই ব্র্যান্ডন ব্যবধান বাড়াতেন, কিন্তু বিপক্ষের গোলকিপার হামেদ লাকের তৎপরতায় তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

এক গোলের ব্যবধানও অবশ্য বেশি ক্ষণ উপভোগ করতে পারেননি ইশান পন্ডিতারা। ১৮ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি থেকে গোল করে সমতা আনেন মেহদি তোরাবি। কিন্তু পেনাল্টি কেনজেমস ডোনাচি বক্সের মধ্যে ইসা আলেকাসিরকে অন্যায় ভাবে বাধা দেওয়ায় রেফারি ইরানের দল পেনাল্টি পেয়ে যায়।

পিছিয়ে থাকার পরও দলকে এগিয়ে দেন পার্সেপোলিসের অধিনায়ক জালাল হোসেইনি। ২৪ মিনিটের মাথায় এই গোলটি তিনি করেন তোরাবির ক্রসে হেড করে। অর্থাৎ দুই দলকেই এগিয়ে দেন তাদের অধিনায়কেরা।

সমতা আনার পর বল দখলের লড়াইয়ে আধিপত্য বিস্তার করে ইরানের দলটি। এফসি গোয়ার ডিফেন্সিভ থার্ডে জায়গা বার করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে তারা। ৩৮ মিনিটের মাথায় গোয়ার ডিফেন্সের বেড়াজাল ভেঙে ঢুকেই পড়েছিলেন ভাহিদ আমিরি। কিন্তু ধীরজ সিং-য়ের চেষ্টায় তাঁর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।

চাপ এতটাই বাড়িয়ে তোলে তারা যে, ৪২ মিনিটের মাথায় ফের পেনাল্টি আদায় করে নেয় পার্সেপোলিস। এ বার ভুল করেন এফসি গোয়ার বিদেশি তারকা স্টপার ইভান গঞ্জালেস। তাঁর ভুল অবশ্য শুধরে দেন ২০ বছর বয়সি গোলকিপার ধীরজ। হোসেন কানানির স্পট কিক অনবদ্য দক্ষতায় গোল সেভ করেন তিনি।

বিরতির পর খেলা শুরু হতেই ফের ধীরজের পরীক্ষা নিতে শুরু করেন আমিরি, তোরাবিরা। তবে প্রতিটা পরীক্ষায় যথেষ্ট ভাল নম্বর নিয়ে উত্তীর্ন হন তিনি। তোরাবিকে তাঁর দ্বিতীয় গোল করতে দেননি তিনি। কয়েক মিনিট পরে আলেকাসির অবশ্য ট্যাপ করে বল গোলে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি অফ সাইড থাকায় সে গোল বাতিল হয়ে যায়।

এর পরে নিজেদের দূর্গ রক্ষার লড়াইয়ে কোনও আপস করতে দেখা যায়নি গোয়ার ফুটবলারদের। ৬৯ মিনিটে অবশ্য কাছের পোস্টের দিকে গোলের ঠিকানা লেখা শট নিয়েছিলেন ওমর আলিশাহ। কিন্তু সে বারেও বাধা হয়ে দাঁড়ান সেই ধীরজ।

ম্যাচের শেষের দিকে যখন ব্যবধান বাড়াতে না পেরে হতাশ হয়ে ওঠেন তোরাবিরা, তখন পাল্টা আক্রমণে উঠতে শুরু করে বেদিয়ার দল। ৮৩ মিনিটের মাথায় পরিবর্ত হিসেবে নামা রেডিম তলাঙ গোলে জোরালো শট নিলেও তা গোলকিপারের হাতে গিয়ে জমা হয়। এই হারের ফলে লিগ টেবলে তিন নম্বরে নেমে গেল এফসি গোয়া। আল রাইয়ানকে ৩-২ গোলে হারিয়ে দুইয়ে উঠে এল আল ওয়াহদা।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)