২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল নাকি ভারতের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা

২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল শ্রীলঙ্কাকে ৬ উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। ১৯৮৩-র পর দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। কপিল দেবের পর এমএস ধোনি। মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সেদিন তিল ধারনের জায়গা ছিল না। সাধারণ মানুষ থেকে সেলিব্রিটি, সকলেই হাজির হয়েছিল ভারতের গর্বের মুহূর্তের সাক্ষী হতে। এসেছিল সেই মুহূর্ত। সেদিন রাত জেগেছিল গোটা দেশ। কিন্তু হঠাৎই ভারতের সেই গর্বের গায়ে কালী ছেটানোর একটা চেষ্টা চলছে।

গত কয়েক বছর ধরে মাঝে মাঝেই উঠে আসছে ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচের কথা। যেখানে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও শ্রীলঙ্কা। সেই ম্যাচ নাকি ফিক্স ছিল। সেই ম্যাচ নাকি শ্রীলঙ্কা দলের কেউ কেউ বিক্রি করে দিয়েছিল ভারতের হাতে। অভিযোগ উঠছে কখনও শ্রীলঙ্কার প্রাক্তনদের মধ্যে থেকে আবার কখনও সরকারি তরফে।

শেষ পর্যন্ত শুরু হয়েছে তদন্ত। গত মঙ্গলবার থেকে তদন্তে নেমেছে শ্রীলঙ্কা পুলিশ। অভিযোগ এসেছিল প্রাক্তন ক্রীড়ামন্ত্রীর তরফেও। তিনিও আঙুল তুলেছিলেন, দলের বেশ কয়েকজন প্লেয়ার এই ম্যাচ ছেড়ে দেন। সেই মতো শুরু হয়েছে জেরা।

সবার প্রথমে জেরা করা হয়েছে সেই সময় শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের প্রধান নির্বাচক প্রাক্তন ক্রিকেটার অরবিন্দ ডি সিলভাকে। তাঁকে ছ’ঘণ্টা জেরা করা হয়। কিন্তু জেরার পর বেরিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

তার পর ডাকা হয় ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচে শ্রীলঙ্কার হয়ে ওপেন করতে নামা উপুল থরঙ্গাকে। সেদিন তিনি ২০ বল খেলে করেছিলেন মাত্র ২ রান। ক্রিজে ছিলেন ৩০ মিনিট। প্রথমেই যে কারণে তাঁর দিকে সন্দেহ গিয়েছিল। তাঁকে প্রায় দু’ঘণ্টা জেরা করা হয়। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এই তদন্তের জন্য ওরা আমাকে কিছু প্রশ্ন করেছিল আমি আমার বক্তব্য রেখেছি তার প্রেক্ষিতে।’’

তৃতীয় ব্যাক্তি হিসেবে তদন্তকারী দলের সামনে তলব করা হয়েছিল কুমার সঙ্গাকারাকে। তাঁকে জেরা করা হয় প্রায় ১০ ঘণ্টায়। কারণ ২০১১ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কা দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। যদি সেই ম্যাচ গড়াপেটা হয়ে থাকে তাহরলে অনেকটাই দায়িত্ব বর্তায় তাঁর উপর। জেরার পর সঙ্গাকারা বলেন, ‘‘আমি এখানে এসেছিলাম আমার বক্তব্য রাখতে কারণ ক্রিকেটের প্রতি আমার একটা দায়িত্ব ও শ্রদ্ধা রয়েছে। আমি আশা করব তদ‌ন্তের শেষে মাহিন্দানন্দা (প্রাক্তন ক্রীড়ামন্ত্রী) যে অভিযোগ করেছেন তাঁর সত্যতা বেরিয়ে আসবে।’’  তাঁর পর ডাকা হয়েছে জয়বর্ধনেকেও।

২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল শুরু হয়েছিল শ্রীলঙ্কার টস জয় দিয়ে। যস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। উপুল থরঙ্গার ২ রানের পর দিলশান ৩৩ ও সঙ্গাকারা ৪৮ রান করেছিলেন। জয়বর্ধনে ১০৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন। ৫০ ওভারে শ্রীলঙ্কা থেমেছিল ২৭৪-৬-এ। বিশ্বকাপ ফাইনালের জন্য এই রান ছিল যথেষ্ট। ভারতীয় বোলাররা মোটেও সফল হননি।

এর পর ভারত শুরুতেই ব্যাট হাতে ধাক্কা খায়। ওপেনার বীরেন্দ্র সেহবাগ কোনও রান না করেই ফিরে যান। আর এক ওপেনার সচিন তেন্ডুলকর করেন মাত্র ১৮ রান। এর পর ভারতের ব্যাটিংয়ের হাল ধরেন গৌতম গম্ভীর ও এমএস ধোনি। মাঝে ৩৫ রানে ফেরেন বিরাট কোহলি। গম্ভীর আউট হন ৯৭ রানে। শেষ পর্যন্ত যুবরাজ সিংকে (২১ অপরাজিত) সঙ্গে নিয়ে ম্যাচ বের করে নিয়ে টান এমএস ধোনি (৯১ অপরাজিত)। ১০ বল বাকি থাকতে ম্যাচ জিতে নিয়েছিল ভারত।

বল হাতে শুরুটা ভালো করেও তা ধরে রাখতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। প্রশ্ন উঠেছে তাঁদের বোলিং ও খারাপ ফিল্ডিং নিয়ে। তদন্ত শেষ হলে তবেই খোলসা হবে ভারতের গর্বের ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল আসলে ভারতের লড়াইয়েরই ফল।

(খেলার জগতের আরও খবর জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)