৭ মিনিটেই লাল কার্ড সুব্রতকে, সহজেই সেমিফাইনালে গোয়া

জামশেদপুর এফসি – ০ এফসি গোয়া – ৩
(কোরো ২৯, ৫১, লানজারোতে ৭০)

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: সুব্রত পালের অমার্জনীয় ভুল মরণবাঁচন ম্যাচের ৭ মিনিটেই পিছিয়ে দিয়েছিল জামশেদপুর এফসিকে। বাকি কাজটা সহজেই করে নিলেন এফসি গোয়ার ফেরান কোরোমিনাস আর মানুয়েল লানজারোতে। চতুর্থ হিরো ইন্ডিয়ান সুপার লিগের সেমিফাইনালে শেষ জায়গাটা নেওয়ার লড়াইয়ে ড্র করলেই চলত গোয়ার। জেআরডি টাটা কমপ্লেক্সে জামশেদপুরকে হারিয়ে তৃতীয় হয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছল গোয়া। চেন্নাইয়িন এফসির বিরুদ্ধে খেলতে হবে তাদের, সেমিফাইনালে আবারও দাক্ষিণাত্য ডার্বি। অন্য সেমিফাইনালে বেঙ্গালুরু এফসির বিরুদ্ধে এফসি পুনে সিটি।

জামশেদপুরকে জিততেই হত, প্রথম চারে জায়গা পেতে। এক পয়েন্ট পেলেই চলত গোয়ার। এমন ম্যাচের শুরুতেই জামশেদপুরের কাছে বিরাট ধাক্কা হয়ে দাঁড়ায সুব্রত পালের চূড়ান্ত অবিবেচনা। লানজারোতে পেছন থেকে লং বল পাঠিয়েছিলেন বিপক্ষ বক্সের দিকে, যেখানে কোরো ছিলেন অপেক্ষায়। বিপদ বুঝে এগিয়ে এসেছিলেন সুব্রত। কিন্তু বক্সের বাইরে এসে বলে হাত লাগিয়ে ফেলেন। রেফারি সামনেই ছিলেন, পরিষ্কার দেখেছিলেন হাতে বল লাগতে। সরাসরি লাল কার্ড দেখানো ছাড়া কোনও উপায় ছিল না। ৮৩ মিনিট দশ জনে খেলতে হবে, দলকে এমন অবস্থায় ফেলে দু’হাতে মুখ ঢেকে মাঠ ছাড়তে হয় অভিজ্ঞ সুব্রতকে। বিকাশ জাইরুকে তুলে নিয়ে গোলরক্ষক সঞ্জীবন ঘোষকে নামাতে বাধ্য হন স্টিভ কোপেল।

মাঠে এক জন বেশি থাকার সুবিধা নিয়ে গোয়া প্রথম বার এগিয়ে গিয়েছিল ২৯ মিনিটে। উগো বৌমোসের থ্রু ধরে সেরিতোন ফেরনানদেজ বক্সে ঢুকে পাস দিয়েছিলেন কোরোর জন্য। তিরি পারেননি শুয়ে পড়েও বলে পা লাগাতে। কোরোর ১৭তম গোল চতুর্থ হিরো আইএসএল-এ, সহজেই।

৫১ মিনিটে দ্বিতীয় গোল ম্যাচের সেরা কোরোর। লানজারোতের পাস যদি বুদ্ধিদীপ্ত হয়, অফসাইডের ফাঁদ এড়িয়ে এগিয়ে এসে বলে কোরোর প্রথম ছোঁয়া অসাধারণ বললেও কম। নিজের নিয়ন্ত্রণে আনলেন ওই ছোট্ট টাচে, পরের কাজটা কোরোর কাছে সহজই ছিল। তাঁর ১৮তম গোল এ বারের প্রতিযোগিতায় এবং এখনও দু’টি সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন অন্তত। ম্যাচ প্রায় শেষ ওখানেই। জামশেদপুরকে তখন দশ জনে তিন গোল করতে হত, সেমিফাইনালে পৌঁছতে।

তৃতীয় গোল ৬৯ মিনিটে। এ বার ভূমিকা পাল্টে নিয়েছিলেন কোরো আর লানজারোতে। কোরো এ বার বল রেখে দিয়েছিলেন ডান দিক থেকে উঠে আসা লানজারোতের জন্য। মাঝে এদু বেদিয়ার ডামি, বল লানজারোতের পায়ে এবং লানজারোতে ভুল করেননি সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে, দলের তৃতীয় গোলে।
গোয়ার গোলরক্ষক নবীন কুমার ৭৫ মিনিটে লাল কার্ড দেখলেন সুব্রতর মতো একই ভুল করে। বিপদ বুঝে এগিয়ে এসে বলে হাত লাগিয়ে ফেলেছিলেন বক্সের বাইরে। কিন্তু, একেবারেই অপ্রয়োজনীয়। তাঁর দল এগিয়ে ছিল তিন গোলের ব্যবধানে। তিনি যদি আটকাতে না-ও পারতেন, না হয় একটি গোল হজম করতে হত গোয়াকে। তাতে খেলার ফলে খুব একটা পরিবর্তন হত না হয়ত। কিন্তু লাল কার্ড দেখে বেরিয়ে যেতে হল তাঁকে, লক্ষীকান্ত কাট্টিমণিকে মাঠে নামাতে বাধ্য হলেন সের্খিও লোবেরা, প্রণয় হালদারকে তুলে নিয়ে।

দুই দলের ফুটবলাররাই মাঠে বেশ কিছু উত্তেজক মুহূর্ত উপহার দিলেন ম্যাচজুড়ে, ফুটবলের কারণে নয়, পারস্পরিক হাতাহাতিতে, মাথা গরম করে, যা না হলেই আরও ভাল হত। তবে, লিগপর্বের ৯০ ম্যাচের মধ্যে ৮৯তম ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হল প্রথম চারের চতুর্থ দল পেতে, যা নিশ্চিতভাবেই বড় বিজ্ঞাপন হিরো আইএসএল-এর। অভিষেক মরসুমে জামশেদপুরও শেষ ম্যাচ পর্যন্ত লড়াইয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত থাকল পঞ্চম স্থানে, ২৬ পয়েন্টে। আর নবম জয় ও ৪২ গোল করে, ৩০ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় হয়ে লিগপর্ব শেষ গোয়ার। আইএসএলে এ বার নকআউট!

সৌজন্যে আইএসএল