ভারতীয় ফুটবলে স্বপ্নের নয়া ফেরিওয়ালা মিনার্ভা

ভারতীয় ফুটবলে স্বপ্নের নয়া ফেরিওয়ালা মিনার্ভাভারতীয় ফুটবলে স্বপ্নের নয়া ফেরিওয়ালা মিনার্ভা

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: কয়েক দিন ধরেই টান টান উত্তেজনা ছিল। ছিল নানা হিসেবনিকেষ। অঙ্ক। সমীকরণ। চাল। কে জিতবে আই লিগ?

দাবিদার হিসেবে নিজেদের তুলে ধরেছিল চারটি দল। মিনার্ভা পঞ্জাব। মোহনবাগান। ইস্টবেঙ্গল। নেরোকা। কে জিতছে আই লিগ?

পয়েন্ট টেবল ফাইনাল করতে শুরু হয়েছিল ম্যাচ। তিন-তিনটে স্টেডিয়ামে। ১-১। ১-০। ১-১। কে জিতল আই লিগ?

সকলকে পিছনে ফেলে ১-০ গোলে জিতে মিনার্ভা পঞ্জাবই জিতে নিয়েছে এ বারের আই লিগ। চার্চিলকে হারিয়ে তারা সর্বভারতীয় ফুটবলে ফের প্রাসঙ্গিক করে তুলল পঞ্জাবকে। ছোট্ট একটা অ্যাকাডেমি থেকে নিজেদের যাত্রা শুরু করে আজ এমন জায়গায় পৌঁছে যাওয়াটা নিঃসন্দেহে মিনার্ভার একাগ্রতা এবং লক্ষ্য স্থির থেকে এগিয়ে যাওয়াটাকেই চিহ্নিত করে।

বৃহস্পতিবার সন্ধে নামার আগেই অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছি‌ল কলকাতার ময়দানে। ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান— দু’দলই এ বার অঙ্কের হিসাবে লিগ জয়ের দাবিদার ছিল। কিন্তু, সেই অঙ্কে একটা সূত্র স্থির ছি‌ল। মিনার্ভা জিতে গেলে তারাই চ্যাম্পিয়ন হবে। আর হলও তাই। চার্চিলকে খেলা শুরুর ১৫ মিনিটের মধ্যে তারা যে গোল দিল, সেটাই এ বারের আই লিগে ইতিহাস হয়ে গেল। বাকি তিন দলের আর কিছুই করার ছিল না, পরের বছরের অপেক্ষা ছাড়া।

এ দিন উইলিয়াম ওপোকুর গোলেই জিতে গেল মিনার্ভা। ওই গোলেই লেখা ছিল আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার হুকুমনামা। বক্সের ডান দিক থেকে শট নিয়েছিলেন চেঞ্চো।

কার্দোজো সেই বলের দখল নিতে পারেননি। ফিরতি বল বক্সের মধ্যে পেয়েও দখলে রাখতে পারেননি সাঙ্গওয়ান। সেই বল পেয়ে যান ওপোকু। সেই চলতি বলেই ওপোকুর শট চলে যায় গোলে। প্রতিপক্ষ অফ সাইডের দাবি করে। কিন্তু, রেফারি তত ক্ষণে গোল দিয়ে দিয়েছেন। ওই ম্যাচে আর গোল হয়নি।

মিনার্ভার এ দিনের জয় অনেককেই মনে করিয়ে দিয়েছে পঞ্জাবের আর এক দল জেসিটিকে। ১৯৯৬-৯৭ সালে যখন প্রথম জাতীয় লিগ শুরু হয়, সেই সময়ে মাঠ দাপিয়ে খেলছে জেসিটি। তাদেরও অ্যাকাডেমি ছিল। সেই অ্যাকাডেমি একাধিক তারকা ফুটবলার উপহার দিয়েছে ভারতীয় ফুটবলকে। সে বার যখন জেসিটি জাতীয় লিগ জিতেছিল, সেটাও চার্চিলকে হারিয়ে। এবং সে বারও লিগের দাবিদার তিনটি ক্লাব ছিল। তবে জেসিটি তার পর আর কোনও বার লিগ জিততে পারে‌নি। ভারতীয় ফুটবলে বহু বছর তারা প্রাসঙ্গিক ছিল। কিন্তু জাতীয় লিগ আর ঘরে তুলতে পারেনি তারা।

এ দিন বাংলার দুই ক্লাবের তিন নম্বরে লিগ শেষ করা মেনে নিতে পারেনি অনেক সমর্থকই। মোহনবাগানের কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী সম্পর্কে ক্ষোভ কম থাকলেও, ইস্টবেঙ্গলের কোচ খালিদ জামিলকে নিয়ে সরব হয়েছেন ক্লাব সমর্থকেরা। একের পর এক ম্যাচে খারাপ খেলে লিগের পয়েন্ট তালিকায় তারা ক্রমশ হারিয়ে গিয়েছে। শেষে দু’ক্লাবই ৩১ পয়েন্ট পেয়ে তিন নম্বরে দৌড় শেষ করেছে। আর ৩২ পয়েন্ট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মণিপুরের দল নেরোকা।