কক পিট থেকে শুটিং রেঞ্জ, রবার্টের গল্প রূপ কথার মতো

কক পিট থেকে শুটিং রেঞ্জ, রবার্টের গল্প রূপ কথার মতো

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: কক পিট থেকে বন্দুক হাতে শুটিং রেঞ্জের রাস্তাটা বেশ রোমাঞ্চক। জীবনের প্রায় ২৪০০০ ঘণ্টা কাটিয়েছেন আকাশে। তাঁর হাতেই ছিল কানাডার সামরিক, অসামরিক বিমানের স্টিয়ারিং। কানাডার রবার্ট পিটকেয়ার্নকে ঘিরে কমনওয়েলথের মঞ্চে অনেক আলোচনা। তিনিই সব থেকে বেশি বয়সের প্রতিযোগী। পদক জিতুন না জিতুন তিনি ইতিমধ্যেই চ্যাম্পিয়ন। বিমান নিয়ে যখন আকাশে উড়তেন, অনেককে পৌঁছে দিতেন এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। সেই রবার্ট যে একবার ১২০ জন যাত্রী নিয়ে হাইজ্যাক হয়ে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন তাঁর বিমানকে সেটাই ঘুরছে কমনওয়েলথের  আনাচ­-কানাচ।

সেটা ১৯৭৪ সাল। গেমস ভিলেজে তাঁর সেই রোমাঞ্চকর কাহিনী শোনার জন্য প্রায় রোজই বসছে গল্প দাদুর আসর। কি ঘটেছিল সেদিন? বোয়িং ৭৩৭ নিয়ে আকাশে উড়েছিলেন রবার্ট। বিমানে ছিল ১২০ জন যাত্রী। তার কয়েকদিন আগেই তুরস্ক দখল করে নিয়েছিল সাইপ্রাস। উত্তেজনা ছিলই। ছিল ক্ষোভও। সেই বিমানেই উঠে পড়েন সাইপ্রাসের এক যাত্রী। বিমান আকাশে উড়তেই তিনি স্বমূর্তি ধারণ করেন। এক বিমান সেবিকাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে বিমান সাইপ্রাসে নিয়ে যেতে বলে।

ও বদলার কথা বলেনি। শুধুই আমাকে ‘সরি’ বলে ছেড়ে দেয়।

তাঁর নাম নইম জেমাল। জানা যায় তাঁর দই ভাই তুরস্কের আক্রমণে মারা গিয়েছিল। সেই বদলাই নিতে চেয়েছিল নইম। সাইপ্রাসের দিকে বিমান ঘোরাতে বাধ্য হয়েছিলেন রবার্ট। কিন্তু ঠান্ডা মাথায় সেদিন রবার্ট নইমকে এটা বোঝাতে সফল হন যে বিমানে পর্যাপ্ত জ্বালানি নেই। সাইপ্রাস পর্যন্ত যাওয়া যাবে না। মাঝে সাসকাটুনে নামতে হবে। ইতিমধ্যে সেখানে পুলিশে খবর হয়ে যায়। এবং সাসকাটুনে নামার পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। একজন বিমান সেবিকাই আহত হয়েছিলেন। সেই বিমান সেবিকা আর কখনও নাকি বিমানে চড়েননি।

ভারতের ঝুলিতে ১১তম সোনাটি এল শুটিংয়ে

এর পর রবার্ট জানান, আট বছর জেল খাটার পর নইম মুক্ত হয়ে রবার্টকে ফোন করেছিলেন। রবার্ট ভেবেছিলেন, বদলার কথা বলবে নইম। কিন্তু তেমন তো কিছু হলই না বরং দুঃখ প্রকাশ করে ছেড়ে দেন। রবার্ট বলেন, ‘‘ও জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যখন আমাকে ফোন করেছিল আমার ভয় লাগেনি। আমি ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তুমি কি আমার উপর বদলা নিতে চাও?ও বদলার কথা বলেনি। শুধুই আমাকে ‘সরি’ বলে ছেড়ে দেয়।’’ কমনওয়েলথে মঞ্চে এখন এই একটাই গল্প ঘুরছে। রবার্ট শুনিয়ে যাচ্ছেন তাঁর অভিজ্ঞতার কাহিনী। অবসরের পর শুটিংয়ে যোগ দেন। কমনওয়েলথে এই প্রথম। আকাশ থেকে শুটিং রেঞ্জে সঙ্গে একগুচ্ছ রোমাঞ্চ।