এটিকে-কে উড়িয়ে সেমিফাইনালের দাবিদার এ বার গোয়াও

এটিকে-কে হারিয়ে গোয়া শিবিরে উচ্ছ্বাস। ছবি-আইএসএল।

এফসি গোয়া – ৫ এটিকে – ১
(হুস্তে ১০, লানজারোতে ১৫, ২১, কোরো ৬৪, সিফনেওস ৯০) (কিন ৮৭)

এটিকে-কে হারিয়ে চতুর্থ স্থানে উঠে এল এফসি গোয়া। দলের অন্যতম মালিক বিরাট কোহলির সামনে ঘরের মাঠে এটিকে-কে সহজেই উড়িয়ে দিল হোম টিম। ১৭ ম্যাচ শেষে তাদের পয়েন্ট এখন ২৭। জামশেদপুর এফসির (২৬) থেকে এক পয়েন্ট এগিয়ে। গোয়ার জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা কোনও প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারল না। মরসুম যেমনভাবে শুরু করেছিল তেমন হতাশাজনকভাবেই শেষের দিকে অ্যাশলে ওয়েস্টউডের দল। সাতটি ম্যাচে দায়িত্ব নিয়ে মাত্র এক পয়েন্ট আনতে পেড়েছেন ওয়েস্টউড, ছ’টি ম্যাচ হেরে।

শক্তিশালী এফসি পুণে সিটিকে শেষ ম্যাচে ৪-০ হারিয়েছিল গোয়া। পরের ম্যাচেই পাঁচ গোল এ বার এবং মরসুমের মাঝপথে খানিকটা ছন্দহীন গোয়া আবারও পুরোপুরি ছন্দে, পরপর দুটি ম্যাচে বড় ব্যবধানে জিতে। ঠিক যেমন বলেছিলেন কোচ সের্খিও লোবেরা, কোনও কিছুই অন্য দলের হাতে ছেড়ে রাখতে রাজি নন তাঁর ফুটবলাররা। তাঁরা জানতেন শেষ তিনটি ম্যাচ জিততেই হবে, সেমিফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা জিইয়ে রাখতে। পরপর দুটি ম্যাচে জিতে এ বার তাদের লক্ষ্য তৃতীয় এবং শেষ ম্যাচেও তিন পয়েন্ট, যা পেলে সেমিফাইনালে জায়গা নিশ্চিত করে ফেলতে পারবেন কারও অপেক্ষা না করে।

গোয়ার প্রথম গোল খেলার গতির বিরুদ্ধেই, কর্নার থেকে। উগো কর্নার ভাসিয়েছিলেন বক্সে। সের্খিও হুস্তে এতটাই উচ্চতায় লাফিয়েছিলেন য়ে সব মাথা ছাড়িয়ে বল চলে যায় জালে। কোনও সুযোগ ছিল না এগিয়ে আসা এটিকে গোলরক্ষক সোরম পোইরেইয়ের কাছে। শুরুতেই গোল তাদের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বারিয়ে দেয়।

দ্বিতীয় এবং তৃতীয় গোল পর পর। ম্যানুয়েল লানজারোতের পায়ে, দুই বারই। মন্দার রাও দেশাই বল নিয়ে বাঁ দিক দিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন ভেতরে। শট নিয়েছিলেন দূরের পোস্টে, যা বাঁচিয়েছিলেন সোরম। কিন্তু সেই ফিরতি বল বিপদসীমার বাইরে বের করে দেওয়ার জন্য এটিকের কোনও ডিফেন্ডার ছিলেন না জায়গায়। লানজারোতে ভুল করেননি। ২১ মিনিটে দলের তৃতীয় এবং লানজারোতের দ্বিতীয় গোল। এ বার তাঁকে পাস দিয়েছিলেন প্রণয় হালদার। প্রায় ৪০ গজের পাস নিজেদের রক্ষণ থেকে, লানজারোতের জন্য। বল ধরে বক্সে ঢুকে পড়ে আশুতোষ মেহতাকে কাটিয়ে গোলে রেখেছিলেন লানজারোতে। ম্যাচের সেরা হওয়ার জন্য এবং তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করার জন্য যা ছিল যথেষ্ট। তাঁরও ১১ গোল হয়ে গেল, ছাপিয়ে গেলেন সুনীল ছেত্রীকে (১০ গোল), উঠে এলেন কালু উচের সঙ্গে যুগ্মভাবে তৃতীয় স্থানে।

কিন্তু গোয়া জিতবে আর হিরো চতুর্থ আইএসএল-এ সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন যিনি সেই ফেরান কোরোমিনাস গোল পাবেন না, হয় নাকি? ফলে, ৬৪ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে নিজের ১৬তম গোল করে যান কোরো। এই ম্যাচে তাঁর বিপক্ষে খেলা এটিকে ১৭ ম্যাচে গোল পেয়েছে ১৪টি! রবি কিন সান্ত্বনা গোলটি করেন ৮৭ মিনিটে, যখন ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছে। তা-ও কিনের শট জালে যাওয়ার আগে গোয়ার রক্ষণে ব্রুনো পিনেইরোর পায়ে লেগে দিক পরিবর্তন করে, পোস্টে লেগে গোলে ঢোকে। গোয়ার কোচ অখুশি হবেন এই একটি কারণেই। মরসুমে ১৭ ম্যাচের মধ্যে ১৬টিতে অন্তত একটি করে গোল খেল। কিন্তু এটিকে রক্ষণের ভুলে পরিবর্ত হিসাবে মাঠে এসে সিফনেওস নিজের প্রথম গোল পেলেন গোয়ার জার্সিতে, ম্যাচের শেষদিকে। ব্যবধান বাড়াতেও পারত তারপরও গোয়ার ফুটবলাররা দু’টি সহজতম সুযোগ না নষ্ট করলে।