১০০ শব্দের গল্প ৮: ছিন্নমূল

১০০ শব্দের গল্প

১০০ শব্দের গল্প নিয়ে মজার খেলাটা হঠাৎই মাথায় এল। লকডাউনে যখন সবাই গৃহবন্দি তখন ভাললাগা, ভালবাসাগুলোকে আরও একবার খুঁজে পেলে কেমন লাগে? সেই খোঁজেই এই ১০০ শব্দের গল্প লেখার উদ্যোগ ফেসবুকে। অনেকেই সাড়া দিয়েছেন, অনেকেই দেননি। কিন্তু যাঁরা দিয়েছেন তাঁরা নিজের সেরাটা তুলে ধরেছেন। ১০০ শব্দ কারও বেশি হয়েছে কারও কম, কিন্তু সবাই লিখেছে গল্প। জাস্ট দুনিয়ার পাতায় এ বার সেই গল্পগুলোকেই আমাদের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা। অষ্টম দিনের গল্প লিখলেন নন্দন পাল (https://www.facebook.com/nandan.paul.96)


পাক্কা সাত মাস চোদ্দো দিন পর বুধনি চন্দনকে দেখল। মরদ যেদিন কাজের জন্য রাজস্থান গিয়েছিল, অনেক আশায় বুক বেঁধেছিল বুধনি। এবার বোধহয় দুঃখের দিন শেষ হল।

অস্থায়ী লেবার হলে কী হবে, বড় কোম্পানিতে কাজ! খাওয়া থাকা দিয়ে ঠিকাদার যা দেবে তাতে মাসে চারবার গণশা, চন্দন, মিলইন্যা আর অজিত সরবৎ পার্টি করেও পাঁচ হাজার টাকা পাঠাতে পারবে। বছরে তিন বার বাড়ি আসতে পারবে।

যাবার দিন মনটা ভারী হয়ে গেছিল চন্দনের। ওর চওড়া বুকের মধ্যে কবোষ্ণ কবুতরের মতো আটকে থেকে বুধনিরও চোখে জল এসে গেছিল। চন্দন বলেছিল, ‘‘এই টাঁড় বহালে খাট্যে মইরে গ্যেলেও এক জামবাটি মাঢ় ভাত মিলে না, কি কইরব বল না যাঁয়ে।’’

আজ চন্দনের মুখটা দেখে সে সব দিনের কথা খুব মনে পড়েছে বুধনির। কত লোক আজ ওদের খয়িষ্ণু ঘরটায়। বুধনি নির্বাক, চুপ। চন্দন ওকে শেষ দেখে ভোররাত সাড়ে তিনটেয়।

উত্তরপ্রদেশের আউরিয়া থেকে পুরুলিয়ার গ্রামটা অনেক দূর। দু’মুঠো ভাত, একটা একটু ভাল জীবনের আশায় শিকড়ছেঁড়া চন্দন, অজিত, গণেশ আর মিলন যখন মানুষ থেকে বডি হচ্ছিল, তখন শেষ দেখা চন্দনের, বুধনির সঙ্গে।

গ্রাফিক্স: অর্ণবী ঘোষ

(আরও গল্প পড়তে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)

(আপনারাও পাঠাতে পারেন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, জীবনের অভিজ্ঞতার কথা এই ই-মেলে: justduniya2017@gmail.com অথবা ইনবক্স করুন ফেসবুক পেজে: https://www.facebook.com/JustDuniyaNews )