জাপানে প্রথম অলিম্পিক গেম, ফিরে দেখা ৫৬ বছর আগের সেই দিন

জাপানে প্রথম অলিম্পিক

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: জাপানে প্রথম অলিম্পিক গেম হয়েছিল ৫৬ বছর আগে আজকের দিনে। জাপানের টোকিও শহরে হয়েছিল অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধন। এই অলিম্পিকই জাপানকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করেছিল। তার আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধাক্কায় বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিল জাপান। অলিম্পিক দিয়েই আবার বিশ্বের মঞ্চে মাথা তুলে দাঁড়ায় এই দেশ। আর এখন জাপান টেকনোলজিতে সেরা। মাত দিয়েছে বিশ্বের বড় বড় সব দেশকে।

১০ অক্টোবর ১৯৬৪-তে যখন ইওশিনোরি সাকাই টোকিও ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে অলিম্পিক মশাল নিয়ে দৌড় শুরু করেছিলেন তা একটা অন্য মাত্রা পেয়েছিল। যাঁকে ডাকা হত ‘অ্যাটোমিক বম্ব বয়’ বলে। যার জন্ম হয়েছিল হিরোশিমায় ৬ অগস্ট ১৯৪৫। যেদিন সেই শহরে অ্যাটোমিক বম্ব ফেলেছিল আমেরিকা।

সেই ইওশিনোরি প্রথম টোকিও অলিম্পিকের মশাল বাহক ছিলেন। আর সেই মশালের আলোতেই জাপান বার্তা দিয়েছিল, এটাই নতুন জন্ম তাদের। সেই সময়ই জাপান তাদের প্রযুক্তিগত আত্মবিশ্বাস সঙ্গে সংস্কৃতি, নেতৃত্বের প্রমান রেখেছিল। এবং জাপানে প্রথম অলিম্পিক দেখেছিল একাধিক অভিনব ঘটনা। এক ব্রিটিশ সাংবাদিক এই ইভেন্টকে ‘সাইন্স ফিকশন’ গেমস বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।

৫৬ বছর পর আরও এক অদভুত ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতির শেষে অলিম্পিক গেমস আয়োজন করতে চলেছে জাপান। করোনাভাইরাসের কারণে, ২০২০ অলিম্পিক গেমস পিছিয়ে দেওয়া হয়েছ এক বছর। আবার সেই পূনর্জন্মের ইতিহাস লিখবে জাপান অলিম্পিকের মধ্যে দিয়ে। এবার শুধু জাপানের নয়, গোটা বিশ্বের নতুন জন্ম হবে।

অলিম্পিকের জন্য নতুন করে সেজে উঠেছিল টোকিও। স্যাটেলাইট ব্রডকাস্টিং, কালার টেলিভিশন থেকে মোনোরেল এবং বুলেট ট্রেন, টোকিও ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলকে টেকনোলজির হটস্পট করে তুলেছিল। জাপান সরকারের সঙ্গে অলিম্পিক ল‌াইভ দেখানোর জন্য নাসার চুক্তি হয়েছিল এবং স্যাটেলাইট যোগাযোগের নতুন দিগন্ত খুলে গিয়েছিল।

প্রথম শব্দ ভাল মতো ধরার মাইক্রোফোন, স্লো মোশন রিপ্লে, কম্পিউটারে অ্যাথলিটদের সময় দেখানো শুরু হয়েছিল। তখনও পুরোপুরি রঙিন টেলিভিশন টেলিকাস্ট শুরু হয়নি। তাও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, কুস্তি, ভলিবল, জিমন্যাস্টিক্স ও জুডোর ইভেন্টগুলো রঙিন দেখানো হয়েছিল প্রথমবার।

১৯৬৪ অলিম্পিকের জন্য তৈরি হওয়া ইওইওজি ন্যাশনাল স্টেডিয়াম, যেখানে সাঁতার, ডাইভিং ও বাস্কেটবল হয়েছিল। এ ছাড়া নিপ্পোন বুদোকান, ইকুস্ট্রিয়ান পার্ক, টোকিও মেট্রোপলিটন জিমনাশিয়াম, এনোশিমা ইয়াৎ হার্বার ও আসাকা শুটিং রেঞ্জ, এই ছ’টি স্টেডিয়াম আগামী অলিম্পিকেও ব্যবহার হতে চলেছে।

জাপান মহিলা ভলিবল দল মন জিতে নিয়েছিল সেবার সবার সোনা জিতে। হারিয়েছিল সোভিয়েতকে ফাইনালে। স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছিল জাপানের ফুটবল দলও। গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনাকে ৩-২-এ হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছেছিল। তার পরের বছরই শুরু হয়েছিল জাপান সকার লিগ।

পুরুষদের ম্যারাথনে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন জাপানের কোকিচি সুবুরায়া। জাপানের মাঠ থেকে সোনা জিতে ফিরেছিল ভারতীয় হকি দল। সেই দলে ছিলেন গুরবক্স সিংও। বাঙালি না হলেও তিনি বাংলারই। প্রথম জাপান অলিম্পিকে হকিতে সোনা জিতে ভূমিকা রেখেছিল ভারত। ৫৬ বছর পর ভারতের অস্ত্র অবশ্য টিম গেমস নয়, ব্যাক্তিগত ইভেন্ট।

(ফেলে আসা মুহূর্তকে ফিরে দেখতে ক্লিক করুন এখানে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)