ফ্ল্যাটের দুনিয়ায় ছোট জায়গা নিয়ে নানা সমস্যা, কী করে সামলাবেন

ফ্ল্যাটের দুনিয়ায় ছোট জায়গা

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক:  ফ্ল্যাটের দুনিয়ায় ছোট জায়গা নিয়ে সমস্যার কোনও শেষ থাকে না। নতুন বাড়িতে কম জিনিস থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা ক্রমশ বাড়তে থাকে। বড় হতে থাকে পরিবার। এই অবস্থায় তখন নতুন বাসস্থানের সন্ধানে নামতে হয়। কিন্তু সেই সংস্থান সবার সবসময় থাকে না। তাই ওই ছোট জায়গাতেই কোনওরকমে দিন গুজরান। তবে অগোছালো ঘর, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জিনিস মনের ওপরও প্রভাব ফেলে। মনোবিদরা বলেন, নিজের পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির প্রভাব মনের ওপর পড়ে খুব বেশি পরিমানে। আর যদি ঘর অগোছালো থাকে, নোংরা থাকে তাহলে মেজাজ বিগরে যাওয়াটা স্বাভাবিকই। আর যাঁদের টিপটপ বাড়ি পছন্দ তাঁদের তো স্বাভাবিক জীবনের ছন্দটাই নষ্ট হয়ে যায়। তাই বাড়ি হতে হবে শান্তির প্রতীক। দিনের শেষে খেটেখুটে যেখানটায় ফিরবেন সেটা যত ছোটই হোক না কেন সেখানে শান্তি, স্বস্তি দুই-ই বিরাজ করাটা জরুরী।

ছোট জায়গাকে তুলনামূলকভাবে বড় বা ফাঁকা ফাঁকা দেখাতে দেওয়ালের রঙ সব সময় হালকা রাখুন। প্রচুর হিজিবিজি রঙ দিয়ে দেওয়াল ভর্তি করবেন না। বিশেষ করে বেডরুমের রঙ যেন হয় সাদা বা অফ হোয়াইট। রাতে আলো জ্বালিয়ে শোয়ার অভ্যেস থাকলে হালকা নীল আলো ব্যবহার করবে নীল মাথা শান্ত করে। পড়াশোনা বা কম্পিউটারে কাজ করতে না হলে ঘরে সব সময় হালকা আলো ব্যবহার করুন। গরমে তো অবশ্যই আলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কড়া আলোয় গরম বেশি লাগে।

জানলা-দরজায় হালকা রঙের পর্দা লাগান। গাঢ় রঙ পছন্দ হলে হালকার সঙ্গে কনট্রাস্ট করে পর্দা ব্যবহার করুন। ছোট জায়গা বা ফ্ল্যাটের দেওয়ার অবশ্য বেশিরভাগই ভর্তি থাকে আলমারিতে। এতে কোনও সমস্যা নেই। যতটা সম্ভব দেওয়ালগুলোকে ব্যবহার করুন। চেষ্টা করুন সব ঘরের একটা করে দেওয়ালে আলমারি রাখতে। তাহলে জিনিসপত্র ঘরের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকবে না। আলমারি মাঝে মাঝে গুছিয়ে রাখতে পারলেই অর্ধেক সমস্যার সমাধান।

আজকাল ফ্ল্যাটে বেশিরভাগই ওপেন কিচেন। তাই কিচেনকে তেল-ঝোল মুক্ত রাখতে হবে। না হলে ড্রয়িংরুমে লোকজন আপনার তেল গড়ানো দেওয়াল দেখলে ভাল হবে না। রান্নাঘর মডিউলার করতে না পারলেও অসুবিধে নেই। পুরো রান্না ঘরে ওপর-নিচ জুড়ে ড্রয়ার বা কাবার্ড রাখুন। যাতে গ্যাস ওভেন, মাইক্রোওয়েভের মতো বড় জিনিস ছাড়া কিছু বাইরে রাখতে না হয়। তাহলে প্রতিনিয়ত কিচেনের খোলা অংশ পরিষ্কার করতে সুবিধে হবে। জিনিস ছড়ানো ছেটানো থাকলে পরিষ্কার করাও যেমন অসুবিধে তেমন দেখতেও ভাল লাগে না।

এবার আসি আসবাবে কথায়। ছোট ফ্ল্যাটে সব থেকে বেশি সমস্যা এটাই। কিন্তু চাই সব। ডবল বেড বিছানা, ডাইনিং টেবল, সোফাসেট, ড্রেসিং টেবল, টি টেবলসহ একগুচ্ছ জিনিস। এই পরিস্থিতিতে ওয়াল আলমারির একটা অংশকেই ড্রেসিংটেবল বানিয়ে নিতে পারেন আয়না লাগিয়ে। দুটো তাককে ব্যবহার করতে পারেন সাজা গোজের জিনিসের জন্য। তাহলে আর আলাদা করে ড্রেসিংটেবল লাগছে না।

সাধারণত যা দেখা যায়, বেডরুমে একটা ডবল বেড খাট পাতলে আর জায়গা থাকে না। সেক্ষেত্রে ঘরে এমন খাট রাখুন যা শোয়ার সময় ডবল করে নেওয়া যায় এব বাকি সময় সিঙ্গল করে রাখা যায়। তাহলে সারাদিন ঘরটা ফাঁকা ফাঁকা থাকবে। শোয়ার সময় শুধু টেনে নিয়ে বড় করে নিলেই হল। এখন এমন বেড সহজেই পাওয়া যায়।

ড্রইংরুমের ফার্নিচারের ক্ষেত্রেও এটাই ব্যবহার করা যেতে পারে। সোফা কাম বেড রাখা যেতে পারে। যাতে অতিথি  এলে শোয়ার জন্য ব্যবহার করা যায়। ড্রইংরুমে জায়গা থাকলে ডিভান ব্যবহার করা যেতে পারে। সেটাও ফোল্ডিং হতে পারে। ডাইনিং টেবল যেমন ফোল্ডিং হতে পারে তেমনই রান্না ঘর আর ড্রইংয়ের মাঝে যে হাফ ওয়াল সেটাকেই ডাইনিং টেবল হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। কিনে নিন ফোল্ডিং চেয়ার।

ঘরের জানলা বক্স করা সম্ভব হলে স্টোর হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। টিভি সব সময় দেওয়ালেই সেট করা ভাল। এখন ওয়ার্ক ফ্রম হোম হওয়ায় সবাইকেই ঘরে থাকতে হচ্ছে সারাক্ষণ। বাড়ি বসেই কাজ। তাই টেবল চেয়ারের দরকার পড়ছে। সেই পরিস্থিতিতে কাবার্ডের সঙ্গেরই একটা অংশকে টেবল বানিয়ে নেওয়া যেতে পারে। যার ঢাকনা খুললে টেবল হয়ে যাবে। আবার কাজ শেষ হলে সেখানেই ল্যাপটপ রেখে ঢাকনা বন্ধ করে দিলেই হল। ফোল্ডিংয় চেয়ার তো রয়েছেই। বিছানাপত্তর রাখার জন্য খাট, ডিভান, সোফার বক্স তো আছেই। চেষ্টা করেই দেখুন না নিজের ঘরকেই অন্যরকম লাগবে।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)