এক ঘেয়ে ঘরের সজ্জা বদলে চাঙ্গা করে তুলুন নিজেকেও, কী ভাবে জেনে নিন

এক ঘেয়ে ঘরের সজ্জা

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: এক ঘেয়ে ঘরের সজ্জা মুড, মেজাজ খারাপ করার জন্য যথেষ্ট। বিশেষ করে এই করোনাকালে, যখন দিনের পর দিন কাটছে ওই চার দেওয়ালের মধ্যেই। এই পরিস্থিতিতে মাঝে মাঝে যদি ঘরের সাজ বদলে ফেলা যায় তাহলে দেখবেন নিজের মনটাও ভাল হয়ে যাচ্ছে। এটা খুব সত্যি, ঘর গোছানো থাকলে মন বিক্ষিপ্ত হয় কম। যে সব মানুষ খুব অগোছালো তাঁরা জানবেন মানসিকভাবেও অগোছালো এবং অগোছালো ঘরের প্রভাব খুব বেশি পরিমাণে পড়ে মনের উপর। আমরা সেটা আলাদা করে উপলব্ধি করতে পারি না। কিন্তু অগোছালো ঘর আপমান মনের শান্তি কেড়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট। সে কারণে ঘর গুছিয়ে রাখার পাশাপাশি মাঝে মাঝেই ঘরের ভিতরটা বদলে ফেলুন। না, তার জন্য টাকা খরচ করতে হবে না, শুধু একটু পরিশ্রম করতে হবে। সবাই মিলে হাত লাগালে তা হজেই হয়ে যাবে।

সামনে পুজো। বাইরে যান না যান নতুন জামা-কাপড় বাঙালি কিনবে না তা হতে পারে না। সেই সঙ্গে আমরা ঘরের জিনিসপত্রও কিনে থাকি সাধারণত। যেমন পর্দা, সোফার কভার, নতুন বিছানার চাদর-বালিশের ওয়ার। বদলে ফেলা যায় দেওয়ালে ঝোলানো কোনও ফটো ফ্রেম, উইন্ডচাইম, টেবল, টিভি, ফ্রিজ কভার ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু এগুলো বাধ্যতামূলক নয়। এর পিছনে খরচ না করেও ঘরের রূপ বদলানো যায়। রঙ করা অনেক খরচ সাপেক্ষ। কিন্তু ঘরের ভিতরের রঙ অনেক পুরনো হয়ে গিয়েছে, কোথাও কোথাও চলটা উঠে গিয়েছে। কম পয়সায় কিনে ফেলুন ওয়াল পেপার। নিজেরাই বদলে ফেলুন ঘরের দেওয়াল।

শহর বা শহরতলীর মানুষরা বেশিরভাগই ছোট জায়গায় থাকে। ফ্ল্যাটই এখন মানুষের আস্তানা। বাড়ি খুব কমই আছে। বাড়ি ঠিক রাখা কঠিন কাজ। বিশেষ করে নিউক্লিয়ার পরিবারের যুগে। তাই ফ্ল্যাটেই স্বচ্ছন্দ মানুষ। ছোট জায়গা, ছোট পরিবার যা সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। সবার আগে ঘরের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভাঙা, ময়লা হয়ে যাওয়া, তেলচিটে জিনিস সরিয়ে ফেলুন। এগুলো মানুষের মনকে ডিস্টার্ব করে। জিনিস কম থাকলেও চলে যাবে কিন্তু ভাঙা, ময়লা জিনিস ব্যবহার করবেন না। প্রাণে ধরে অনেকেই অনেক কিছু ফেলতে পারেন না। কিন্তু দেখবেন ঘরের আনাচ কানাচ অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরিয়ে ফেললে ঘরের সঙ্গে সঙ্গে মনও ভাল থাকবে।

অনেকের অভ্যেস আছে ঘরের আনাচ-কানাচ জিনিসপত্র গুঁজে গুঁজে রেখে দেন। করবেন না। বাড়িতে আলমারি, স্টোর থাকলে সেখানে রাখুন না সেই ব্যবস্থা করুন। খাটের তলা বোঝাই করে জিনিস রাখা পুরনো অভ্যেস। তাতে চূড়ান্ত ময়লা হয় খাটের তলা পরিষ্কার করা যায় না বলে। আপনি বুঝতেই পারেন না কতটা আনহাইজিনিক পরিবেশের মধ্যে দিনের পর দিন থাকছেন আপনি। ঘরে আলো-বাতাস আসতে দিন। আর ফ্ল্যাটের ব্যালকনিটাকে মনের মতো করে সাজিয়ে তুলুন যেখানে চা হাতে পেপার পড়তে পড়তে দিনের শুরুটা করা যায় বা রাতে প্রিয় মানুষের সঙ্গে বসে গল্প করা যায়।

এবার আসি ঘর পরিবর্তনের কথায়। ঘরের লুক বদলাতে জিনিসের জায়গা পরিবর্তন করুন। দক্ষিণ-পূর্ব থেকে খাটটা নিয়ে যান দক্ষিণ-পশ্চিমে। বেড রুমে যদি টিভি থাকে তাহলে তা স্বাভাবিকভাবেই চলে যাবে উল্টোদিকে।  ঘরের একটা জিনিস সরালেই দেখবেন বাকিগুলোও ওই সার্কেলেই বদলে যাচ্ছে। নতুন ফিলিং আসছে। পুজোর আগে বদলে ফেলুন পর্দা। ওটা নতুন কেনাই যায় জামা-কাপড়ের সঙ্গে। দুটো বেডরুম হলে একই ভাবে জায়গা বদল করুণ। ড্রইংরুমে ডিভান থাকলে তাঁর কুশন কভারগুলো বদলে ফেলুন। বদলে ফেলুন সোফার কভার। ডাইনিং টেবল আর ডিভানের জায়গাটা অদল-বদল করে দেখুন তো ভাল লাগছে কিনা? সব কিছুতে নতুন কভার লাগান। কভার করা থাকলে ধুলো কম পড়বে।

সব থেকে কঠিন কাজ রান্না ঘরের বদল। তবে সব থেকে হাইজিন বজায় রাখতে হয় এখানেই। টাইলস এতটাই তেলচিটে হয়ে যায় যে পরিষ্কার করেও লাভ হয় না। সেক্ষেত্রে একটু খরচ করে বদলে ফেলুন টাই‌লস আর তার পর থেকে নিয়মিত পরিষ্কার করুন তবেই ঠিক থাকবে। পুরনো স্টিলের বাসনকে বিদায় দিন। কাঁধা ভেঙে যাওয়া থালা, ফুটো হয়ে যাওয়া গামলা, চলটা উঠে যাওয়া কাপকে প্রাণে ধরে বিদায় দিন জীবন থেকে। নতুন আনুন। খাওয়া ব‌লে কথা। যতটা স্বাদ প্রয়োজন ততটাই দেখাটাও গুরুত্বপূর্ণ। এর সঙ্গে বাথরুমকে অবহেলা করলে চলবে না। সেখানেও জলের দাগ হয়ে যায়। একটা সময়ের পর তা তোলা যায় না। তখন টাইলস পরিবর্তন করা ছাড়া আর কিছু করার থাকে না। বাথরুমের সেলফটা বদলে ফেলুন যদি বেশি পুরনো হয়ে যায়। আয়না জল লেগে লেগে খারাপ হয়ে গেলেও সেটাও। বদলে ফেললে সব নতুন হয়ে যায় কিন্তু না বদলেও বদল আনা যায় একটু ভাবুন ঠিক রাস্তা বেরিয়ে আসবে। বদল জরুরী।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)